1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান টিভিতে সিরিয়াল ছবির জনপ্রিয়তা

১৪ ডিসেম্বর ২০১০

জার্মান টেলিভিশনে সোপ অপেরা সিরিয়ালগুলোর এখন রমরমা অবস্থা৷ বিশেষ করে অ্যামেরিকান ছবি হলে তো কথাই নেই৷ টিভির পর্দা ছেড়ে নড়তে চাননা অনেকেই৷

https://p.dw.com/p/QXdB
ছবি: Renee Jansoa/Fotolia

জার্মান টিভিতে সোপ অপেরার ধুম এতটাই বেড়েছে যে, বিভিন্ন সিরিয়ালের ভক্তগ্রুপও গড়ে উঠছে এখানে সেখানে৷ এরকমই এক সিরিয়ালপাগল লোক মার্টিন ক্লুগার, যিনি একজন লেখক ও চিত্রনাট্যকারও৷ ৬২ বছর বয়স্ক ধোপদুরস্ত এই মানুষটিকে দেখলে কিন্তু বোঝাই যাবেনা তাঁর এই নেশার কথা৷ কিন্তু তাঁর বইএর শেল্ফের পাশেই রয়েছে আরেকটি শেল্ফ, যাতে রয়েছে বিভিন্ন টিভি সিরিয়ালের প্রচুর ডিভিডি৷ লেখালেখির ফাঁকে ফাঁকে ‘ম্যাড মেন', ‘দ্য ওয়্যার' এসব সিরিয়াল উপভোগ করেন তিনি৷ ভাললাগা কাহিনি থেকে খুঁজে পান লেখার প্রণোদনা৷ ক্লুগার বলেন, ‘‘এই সিরিয়ালগুলিতে সাধারণত এক সাথে চার পাঁচটি ঘটনা এগিয়ে যায়, জটিল বিষয়গুলিকে ফ্লাশব্যাকের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়৷ আকস্মিক ঘটনা তুলে ধরার মত সাহস রাখে সিরিয়ালগুলো, চিন্তাভাবনার অবকাশ রাখে৷ এসব দিক দিয়ে সিনেমার কাহিনিচিত্রের চেয়ে অনেকটাই ভিন্ন ও তরতাজা টিভি-সিরিয়ালগুলো৷''

সম্ভবত এসব কারণেই বহু নামি পরিচালক ও অভিনেতা টিভি সিরিয়ালের দিকে ঝুঁকেছেন৷ ডাকসাইটে চিত্রপরিচালক মার্টিন স্কর্সিজও এখন টিভি সিরিয়াল নির্মাণে ব্যস্ত৷ অনেক চিত্রনাট্য লেখক একই সাথে চিত্রপ্রযোজকও৷ খুঁটিনাটি বিষয়গুলো থেকে শুরু করে গোটা কাহিনিতেই জড়িয়ে থাকে তাঁদের সূক্ষ্ম হাতের ছোঁয়া৷ সফল হলে বিশ্বজুড়ে বাজার পাওয়া যায় এসব সিরিয়ালের৷ অ্যামেরিকান সিরিয়ালের এক পর্বের খরচ জার্মান কয়েক পর্বের সমান৷ তবে পার্থক্যটা শুধু এখানেই নয়৷ বলেন মার্টিন ক্লুগার৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘অ্যামেরিকায় টিভি সিরিয়ালগুলিকে তেমন তাচ্ছিল্যের চোখে দেখা হয়না৷ জার্মানিতে একেবারে অন্যরকম৷ জার্মানরা টিভি সিরিয়ালগুলিকে হালকা বিনোদনমূলক ছবি বলেই মনে করে৷ টেলিভিশন মাধ্যমটি সম্পর্কে অনেকের নাকউঁচু একটা মনোভাবও রয়েছে৷''

Pamela Lee Anderson - Baywatch
প্যামেলা অ্যান্ডারসন অভিনিত ‘বে ওয়াচ’ সিরিয়ালটি কিন্তু এখনও অত্যন্ত জনপ্রিয়ছবি: picture-alliance/ dpa

টিভি সিরিয়ালের ফ্যানরা একটি জিনিসকে কিছুতেই বাদ দিতে চাননা, আর তা হল, ডিভিডি৷ সপ্তাহের পর সপ্তাহ সিরিজের পর্বগুলির জন্য অপেক্ষা করার চেয়ে প্রিয় সিরিজের একটি ডিভিডি কিনে ফেললেই হল৷ একবারেই উপভোগ করা যায় তা৷ ডিভিডির বাজারের চার ভাগের এক ভাগই সিরিয়াল৷ মার্টিন ক্লুগার বলেন, ‘‘এতে বিজ্ঞাপনের ঝামেলা থাকেনা৷ বেশ কিছু পর্ব এক সঙ্গে দেখা যায়৷ ইচ্ছা হলে মূল ভাষাতে বার বার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখা যায় ছবিগুলো৷ নিজের ইচ্ছামত যে কোনো পর্ব যেখান থেকে খুশি দেখা যায়৷''

মার্টিন ক্লুগার ম্যাড মেনের ভক্ত৷ জার্মানিতে সবে দেখানো শুরু হয়েছে ছবিটি৷ কিন্তু মার্টিন ক্লুগার বেশ কয়েকটি পর্ব দেখে ফেলেছেন আগেই৷ অ্যামেরিকা থেকে বন্ধুবান্ধবরা কয়েকটি পর্বের ডিভিডি পাঠিয়েছেন ৷ ক্রিসমাসের সময় তাঁদের কাছ থেকে আরো কিছু পর্ব পাওয়ার কথা৷

জার্মানির কয়েকটি টিভি সিরিজের জনপ্রিয়তাও অবশ্য কম নয়৷ যেমন ‘লিন্ডেন স্ট্রাসে', ‘গুটে সাইটেন, শ্লেশটে সাইটেন' (ভাল সময় মন্দ সময়), ‘ফ্যারবোটেনে লিবে' (নিষিদ্ধ প্রেম) ইত্যাদি৷ ‘লিন্ডেন স্ট্রাসে' প্রতি রোববার প্রচারিত হয়৷ পারিবারিক সুখ দুঃখের পাশাপাশি সমসাময়িক রাজনৈতিক ও সামাজিক ঘটনাবলী তুলে ধরা হয় এই সিরিয়াল৷ জাগিয়ে তোলা হয় সচেতনতা৷ চরিত্রগুলিকে মনে হবে আশেপাশের মানুষের মতই৷

প্রতিবেদন: রায়হানা বেগম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক