1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চলুন, আমালফিতানা ধরে বেড়িয়ে আসি!

১৩ অক্টোবর ২০১৬

ইটালির পশ্চিম উপকূলে মাত্র চল্লিশ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি অংশের নাম আমালফি কোস্ট৷ গ্রীষ্মে প্রতি একজন বাসিন্দার জন্য দশজন টুরিস্ট আসেন আমালফির পরিবেশ, আতিথেয়তা ও ‘লেমন লিকর'-এর স্বাদ নিতে৷

https://p.dw.com/p/2R9mF
Italien Touristenregion Kampanien
ছবি: Picture-alliance/dpa/W. Thieme

ইটালিতে এর নাম ‘কোস্তিয়েরা আমালফিতানা'  ইটালির পশ্চিমে আমালফি কোস্ট বা উপকূল৷ চল্লিশ কিলোমিটার জুড়ে ছড়ানো ১৬টি পৌর এলাকা মিলে এই আমালফি কোস্ট৷ তার মধ্যে পোসিতানো হল সবচেয়ে বিখ্যাত, হয়ত সবচেয়ে সুন্দরও বটে৷ চার হাজার মানুষের বাস এখানে৷ গ্রীষ্মে টুরিস্ট আসে তার দশগুণ৷

পোসিতানোর একটি ছোট্ট সৈকতে পাওয়া যাবে ‘‘দা আদলফো'' রেস্তোরাঁটিকে৷ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল ১৯৬৬ সালে৷ সমুদ্রসৈকতের একটি ছোট্ট বার থেকে আজ তা হয়ে উঠেছে সেলিব্রিটিদের প্রিয় এক রেস্তোরাঁ৷ সাবেক জার্মান চ্যান্সেলর গেয়ারহার্ড শ্র্যোডার থেকে শুরু করে টপ মডেল নাওমি ক্যাম্পবেল, সকলেই অতিথি হয়েছেন এখানে৷

রেস্তোরাঁ মালিক সের্জো বেলা শোনালেন, ‘‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পোসিতানো বিখ্যাত হয়ে ওঠে৷ এটা ছিল মিত্রশক্তির সৈন্যদের রেস্ট অ্যান্ড রিক্রিয়েশন, বিশ্রাম ও মনোরঞ্জনের জায়গা৷ জার্মানরাও তা দেখেছে, ইংরেজরা তো বটেই৷ জেলেদের গ্রাম থেকে রিসর্ট হয়ে ওঠে পোসিতানো৷ আমাদের হঠাৎ টুরিস্টদের দেখাশোনা করা শিখতে হয়৷ পোসিতানোর মজা হলো, এখানে আপনি আসবেন টুরিস্ট হিসেবে, কিন্তু যাবেন যেন স্থানীয় বাসিন্দা হয়ে৷''

নীল ফিতে

আমালফি উপকূল চেনার সহজ পথ হল কিংবদন্তির সেই ‘আমালফিতানা' – আমালফি উপকূল বরাবর একটি পিচের রাস্তা, এখানকার মানুষ যাকে ‘নাস্ত্রো আজুরো' বা ‘নীল ফিতে' বলেন৷ উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি অংশত পাহাড় কেটে, কোথাও কোথাও সমুদ্রের একশ' মিটার উপরে বানানো হয়েছে এই রাস্তা৷ সেই রাস্তায় পাশাপাশি দু'টো গাড়ি যাওয়াই কঠিন৷ আমালফিতানার বাস ড্রাইভার পারিসি দোমেনিকো বললেন, ‘‘গোড়ায় বেশ রোমাঞ্চকর লাগত, এখন অভ্যেস হয়ে গেছে৷ আমার নিজের এখানে কোনোদিন কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি৷ তবে সম্প্রতি একটা মোটর সাইকেল অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে৷''

আমলফি উপকূলের নাম আমালফি পৌর এলাকার নাম থেকে৷ সেই আমালফির ইতিহাস নাকি খ্রিষ্টজন্মের চার শতাব্দী আগে পর্যন্ত চলে গেছে৷ চাষের জমির অভাবে এখানকার মানুষ গোড়া থেকেই সমুদ্রযাত্রা আর ব্যবসা-বাণিজ্যের দিকে ঝুঁকেছিলেন৷ নবম শতাব্দীতে আমালফি একটি স্বতন্ত্র প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়৷ সেখান থেকে নাকি প্রতীচ্য অবধি বাণিজ্য চলত৷ আরব প্রভাব আমালফির স্থাপত্যে আজও চোখে পড়ে৷ আমালফির সঙ্কীর্ণ গলি দেখলে নাকি মদিনার কথা মনে পড়ে! বাণিজ্যের পথ ধরে হাজার বছর আগে লেবুগাছ এসেছিল আমালফি উপকূলে৷ আজ আমালফি উপকূলের একটি স্পেশালিটি হলো ‘লিমনচেলো', লেবু থেকে তৈরি লিকর৷

ছ'পুরুষ ধরে আচেতো পরিবার আমালফি শহরের আশপাশের পাহাড়িতে লেবুর চাষ করে আসছে৷ এই বিশেষ ধরনের লেবুর বিশেষত্ব হল, এর খোসায় উচ্চমানের তেল পাওয়া যায়৷

আমালফি লেমন এক্সপেরিয়েন্স-এর প্রধান সালভাতোরে আচেতোর কথায়, ‘‘আমাদের পূর্বপুরুষরা বুঝতেন লেবুর উপকারিতা কী ও কতটা৷ আগে আমরা সব কিছুতে লেবু ব্যবহার করতাম৷ স্কার্ভি রোগ সারাতে, জ্বর সারাতে, কাপড় পরিষ্কার করতে, চুল ধুতে৷ আজও হাত কেটে গেলে আমরা অ্যালকহল না দিয়ে লেবুর রস দিই৷ কফিতে লেবুর খোসা দিলে মাথাব্যথা সারে, জানেন? লেবু আসলে ওষুধ৷ লেবু হল সোনার মতো দামি৷''

আমালফি উপকূলকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার বলে ঘোষণা করেছে ইউনেস্কো, ১৯৯৭ সালে৷ শুধু সে জন্যই একবার দেখে যাওয়া উচিত নয় কি?

 

শ্যারন ব্যারকাল/এসি

দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান