ঘরে বাইরে সবখানে কোনঠাসা হয়ে পড়ছেন গাদ্দাফি
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১অন্যদিকে, লিবিয়ার সঙ্গে সব ধরণের আর্থিক লেনদেন স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়েছে জার্মানি৷
নিজ দেশের জনগণের ওপর গুলি চালানোর ফলশ্রুতিতে এখন ক্রমেই একঘরে হয়ে পড়ছেন লিবিয়ার ৪২ বছরের প্রেসিডেন্ট কর্নেল গাদ্দাফি৷ জাতিসংঘ সহ আন্তর্জাতিক মহলের নিষেধাজ্ঞার কবলে এখন লিবিয়া৷ ইতিমধ্যে রাজধানী ত্রিপোলি ছাড়া বাকি গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর দখল হাতছাড়া হয়ে গেছে গাদ্দাফির হাত থেকে৷ দেশের পূর্বাঞ্চলে বেন গাজিতে গঠিত হয়েছে গাদ্দাফির বিকল্প প্রশাসন৷ আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থনও পাচ্ছে তারা৷ তবে এইসব কিছু সত্বেও গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল ইসলামের দাবি লিবিয়ার জনগণ এখনও তাঁর পিতার সঙ্গেই রয়েছে৷ এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘আমরা কোনো শক্তি ব্যবহার করিনি এবং আমাদের চারপাশে জনগণ রয়েছে৷ আমরা ত্রিপোলিতেই আছি এবং লিবিয়ার অর্ধেক মানুষ অর্থাৎ প্রায় আড়াই মিলিয়ন মানুষ এই শহরে বাস করে৷ কয়েক হাজার মানুষের প্রতিবাদের অর্থই কি লিবিয়ার সব জনগণ আমার পিতার বিপক্ষে ?''
মানবতা বিরোধী অপরাধ
তবে নিজেদের বাঁচাতে এখন গাদ্দাফি পরিবার যেই কথাই বলুন না কেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রধান আইনজীবী লুই মোরেনো ওকাম্পো জানিয়েছেন যে তাঁরা লিবিয়াতে তদন্ত চালানোর কথা চিন্তা ভাবনা করছেন৷ উল্লেখ্য, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ লিবিয়াতে মানবতা বিরোধী অপরাধ হয়েছে কিনা সেটি তদন্তের জন্য ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক আদালতকে অনুরোধ জানিয়েছে৷ জানা গেছে, গাদ্দাফি বিরোধী আন্দোলনে এখন পর্যন্ত হাজারখানেক মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর নির্বিচার গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে৷
জার্মানির কড়া সুর
অপরদিকে সোমবারও আন্তর্জাতিক মহলের পক্ষ থেকে গাদ্দাফির বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় - সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷ জেনেভাকে বেশ কয়েকটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক হয়েছিলেন৷ রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই লাভরভ লিবিয়াতে সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালানোকে অগ্রহণযোগ্য বলে সমালোচনা করেছেন৷ তবে সবচেয়ে কঠোর মন্তব্যটি এসেছে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলের পক্ষ থেকে৷ তিনি আগামী দুই মাসের জন্য লিবিয়ার সঙ্গে সব ধরণের আর্থিক লেনদেন বন্ধ রাখার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷ এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হবে গাদ্দাফি প্রশাসনকে আর্থিকভাবে দুর্বল করে দেওয়া৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ