গ্রিসকে সাহায্য করার প্রশ্নে উভয়-সঙ্কটে ইউরোপ
২৪ মার্চ ২০১০অভিন্ন মুদ্রা হিসেবে ইউরো'র স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে প্রথম থেকেই কিছু রক্ষাকবচের ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷ ইউরো'র সৃষ্টিকর্তাদের ধারণা ছিল, এই সব কড়া নিয়ম-কানুনের বেড়াজালের মধ্যে পড়ে কোন সদস্য দেশ সহজে আর্থিক সঙ্কটের মুখ দেখবে না এবং মুদ্রা হিসেবে ইউরো'র অবস্থানের কোন ক্ষতি হবে না৷ কিন্তু গ্রিসের বর্তমান আর্থিক সঙ্কট অঙ্কের সেই নিয়মকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে৷ যে ১৬টি দেশে ইউরো চালু রয়েছে, তাদের সামনে এখন মূল প্রশ্ন হল, জরুরি এই অবস্থায় প্রচলিত রীতি ভেঙে গ্রিসকে সাহায্য করা উচিত, নাকি নিয়ম ভাঙার দায়ে শাস্তি হিসেবে গ্রিসকে একা ছেড়ে দেওয়া উচিত?
আগামী বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে৷ কিন্তু তার আগেই শুধুমাত্র ইউরো এলাকার দেশগুলির শীর্ষ নেতাদের এক বৈঠকের অনুরোধ জানিয়েছে ফ্রান্স ও স্পেন৷ উল্লেখ্য, এর আগে কখনো এমন এক শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় নি৷ প্রতি মাসে ইউরো এলাকার দেশগুলির অর্থমন্ত্রীরা একবার করে মিলিত হন৷
এই সম্মেলনের প্রস্তুতি হিসেবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সমাধানসূত্র উঠে এসেছে বলে শোনা যাচ্ছে৷ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল – আইএমএফ এবং ইউরোপের কিছু দেশ দ্বিপাক্ষিক স্তরে গ্রিসের জন্য আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করতে চলেছে৷ ফ্রান্স ও জার্মানির শীর্ষ নেতারা এই আপোশ কর্মসূচি সম্পর্কে ঐক্যমতে এসেছেন৷ তবে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজির সঙ্গে আলোচনার পর জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেন, ‘‘আমরা দুজনেই আবার জোর দিয়ে বলেছি, যে গ্রিস কিন্তু এখনো কোন আর্থিক সাহায্য চায় নি৷ এর অর্থ, ইউরোপীয় পরিষদে গ্রিসের জন্য আপদকালীন সাহায্যের বিষয়ে কোন কথা হবে না৷''
এই কড়া মনোভাবের প্রশ্নে জার্মানি অবশ্য ইউরো এলাকায় প্রায় একা হয়ে পড়েছে৷ আপাতত ইউরো'র স্থিতিশীলতা রক্ষার বিষয়টিকেই প্রাধান্য দিচ্ছে বাকি দেশগুলি৷ তাই গ্রিসের প্রতি সংহতি দেখানো ছাড়া তারা অন্য কোন পথ দেখতে পাচ্ছে না৷ কীভাবে গ্রিসকে সাহায্য করা যায়, সেটা তাদের কাছে মূল প্রশ্ন নয়৷ তাদের মতে, যেভাবেই হোক, গ্রিসকে সঙ্কট থেকে উদ্ধার করতেই হবে৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত গ্রিসকে দ্বিপাক্ষিক স্তরে সাহায্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে জার্মানিকেও যে সেই উদ্যোগে বড় মাত্রায় শামিল হতে হবে, এবিষয়ে কোন সন্দেহ নেই৷ আগামী দুই দিনের মধ্যে বার্লিনকে এবিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ গ্রিস জানিয়েছে, আসন্ন শীর্ষ বৈঠকে সেদেশ ভিক্ষার পাত্র নিয়ে আসবে না৷ তবে গ্রিস ইউরোপীয় স্তরে এক সমাধানসূত্র খুঁজতে আগ্রহী৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই