1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তীব্র তাপপ্রবাহে জ্বলছে ভারত

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১১ জুন ২০১৪

উত্তর ভারত জুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ৷ সঙ্গে রাজধানী দিল্লিসহ আশেপাশের এলাকায় চলছে লাগাতার বিদ্যুৎ সংকট৷ আবহাওয়া বিভাগের অশনিসংকেত: বৃষ্টিপাত হবে স্বাভাবিকের চেয়ে কম৷ অবস্থা মোকাবিলায় মোদী সরকার ‘‘অ্যাকশন-প্লান’’ হাতে নিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/1CFTs
Indien Hitzewelle Stromversorgung 11.05.2013
ছবি: DW/W. Suhail

রাজধানী দিল্লি তথা উত্তর ভারত তীব্র তাপপ্রবাহে জ্বলছে৷ দিল্লির তাপমাত্রা এখন ঘোরাফেরা করছে ৪৬-৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে৷ সম্ভবত তারই জেরে গত এক সপ্তাহের বেশি দিন ধরে দৈনিক দফায় দফায় ১ থেকে ৬ ঘণ্টা লোডশেডিং ও জলকষ্ট৷ জনজীবনে ত্রাহি ত্রাহি রব৷ ঘেরাও করা হয়েছে দিল্লি প্রশাসনের সচিবালয়৷ মোদী সরকারের বিদ্যুৎমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল দিল্লির উপ-রাজ্যপাল নাজিব জঙের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠকের পর, বিদ্যুৎ সংকেটের জন্য সাবেক কংগ্রেস জামানার নীতি-পঙ্গুত্ব এবং বিদ্যুৎ নীতিতে ভুল সিদ্ধান্তকে দায়ী করেছেন৷ সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার বিদ্যুৎ সংকটের সমাধানের জন্য জরুরি ‘‘অ্যাকশন-প্ল্যান'' হাতে নিয়েছে৷ দু-একদিনের মধ্যে দিল্লিবাসীদের দুর্ভোগ অনেকাংশে দূর হবে৷

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা এখানে কম নেই৷ সমস্যার আসল কারণ ‘ট্র্যান্সমিশন' এবং বণ্টন ব্যবস্থার অপ্রতুলতা৷ সপ্তাহ খানেক আগে প্রবল ঝড়-তুফানে বহু জায়গায় বিদ্যুৎ পরিবাহী টাওয়ারগুলির ক্ষতি হয়েছে, বলেন কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী৷ তবে দিল্লির কাছে বাওয়ানা পাওয়ার প্লান্টের উৎপাদন ক্ষমতা ১৫০০ মেগাওয়াট হওয়া সত্ত্বেও উৎপাদন হতো মাত্র ২৯০ মেগাওয়াট৷ নতুন সরকারের নির্দেশে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় জরুরি ভিত্তিতে অতিরিক্ত গ্যাস সরবরাহ করায় এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এনটিপিসি অতিরিক্ত বিদ্যুৎ দেয়ায় বিদ্যুতের জোগান অতিরিক্ত ৪০০ মেগাওয়াট বেড়ে গেলে, আগামী ২/১ দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ সংকট অনেকটাই মিটে যাবে বলে মনে করেন মোদী সরকারের বিদ্যুৎমন্ত্রী৷ কারণ, ১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করলেও তা পরিবহন এবং বণ্টনের মতো ক্ষমতা বর্তমানে নেই৷ তার জন্য কিছু সময় লাগবে৷ এই ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে চলেছে লাগাতার চাপানউতোর৷

অন্যদিকে আবহাওয়া বিভাগ যে অশনিসংকেত দিয়েছে, তাতে মোদী সরকারের কপালে ভাঁজ৷ আবহ বিভাগের পূর্বাভাষ: গত চার বছরের মধ্যে এ বছর বৃষ্টি হবে সবথেকে কম৷ আর এল নিনোর আশঙ্কা ৭০ শতাংশ৷ প্রশান্ত মহাসাগরীয় বায়ুমণ্ডলের উত্তাপ বাড়ার সঙ্গে বৃষ্টিপাতের একটা যোগ আছে এবং তার প্রভাব পড়ে গোটা বিশ্বে৷ ফলে দেশের কোনো কোনো রাজ্য যেমন মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, গুজরাট ও রাজস্থান – যেখানে পর্যাপ্ত সেচ সুবিধা নেই – সেখানে খরা মোকাবিলা করাই হবে মোদী সরকারের প্রথম বড় চ্যালেঞ্জ৷ কারণ দেশের আর্থিক উৎপাদনের ১৪ শতাংশের বেশি এই কৃষি৷ ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক কৃষি-নির্ভর৷ বর্ষার সঙ্গে পল্লি ভারতের জীবন ও জীবিকা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত৷ কৃষিজীবীদের আয় পড়ে গেলে ভোগ্যপণ্যের চাহিদাও কমবে সেই অনুপাতে, এমনটাই বললেন দিল্লির জাতীয় কৃষি অর্থনীতি কেন্দ্রের অধিকর্তা রমেশ চাঁদ৷

সেজন্য ভোগ্যপণ্য কোম্পানিগুলি কিছুটা চিন্তিত৷ দেখা দিতে পারে মুদ্রাস্ফীতিও৷ তবে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি মেটাতে মোদী সরকার নিজেদের তৈরি রেখেছেন৷ রাজ্যগুলিকে আগে থেকেই যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুত করার নির্দেশ দিয়েছেন৷ মোদী সরকারের কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিং জরুরি ‘‘অ্যাকশন-প্ল্যান'' হিসেবে সেচ পাম্পের জন্য ডিজেলে ভরতুকি, নামমাত্র সুদে কৃষি ঋণ এবং সস্তায় বীজ সরবরাহ করার কথা বলেছেন৷ শুধু তাই নয়, এর সঙ্গে থাকবে কৃষি পণ্য বিষয়ক বিমাব্যবস্থাও৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য