1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গুহার মধ্যে বাতের চিকিৎসা

১১ জুলাই ২০১৭

বাতের ব্যথা জীবনের একটা দীর্ঘ সময় ধরে পীড়া দিতে পারে৷ সাময়িক স্বস্তি ছাড়া চূড়ান্ত সমাধানের আশা বড়ই কঠিন৷ জার্মানির এক গুহার বাতাস রোগীদের জন্য স্বস্তি নিয়ে আসছে৷ বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে আরও গবেষণা করছেন৷

https://p.dw.com/p/2gJAs
ছবি: picture alliance/Klaus Rose

রাইনার ব্লুমব্যার্গকে নিয়মিত ডাক্তারের কাছে যেতে হয়৷ ২৮ বছর বয়স থেকে তিনি ক্রনিক পিঠের ব্যথায় ভুগছেন৷ এখনো পর্যন্ত কোনো ওষুধে কাজ হয় নি৷ ব্লুমব্যার্গ বলেন, ‘‘আসলে প্রায় ২৮ বছর ধরে পিঠের ব্যথায় ভুগছি৷ এখন জানা গেছে সেটা অ্যাংকিলোসিং স্পন্ডিলাইটিস৷ তার সঙ্গে গাউট আর অস্টিওপোরোসিসও ধরা পড়েছে৷’’

রাইনার ব্লুমব্যার্গ-এর আপাতত একটাই আশা – পুরানো এক খনি৷ গত শতাব্দীতে শ্রমিকরা এখানে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতেন৷ সেখানে এখন বাতের রোগের নিরাময় করা হয়৷ ইউরেনিয়াম ভাঙলে ব়্যাডন নামের যে তেজস্ক্রিয় গ্যাস সৃষ্টি হয়, সেটাই এই চিকিৎসার চাবিকাঠি৷ এই গ্যাসের ঘনত্ব বেশি হলে ফুসফুসের ক্যানসার হয়৷ কিন্তু কম ডোজ বা পরিমাণ আশ্চর্য ফল দিতে পারে৷

বাড ক্রয়েৎসনাখ শহরে জার্মানির একমাত্র খনি অবস্থিত, যেখানে পাথরের মধ্যে জমা ব়্যাডন গ্যাস কাজে লাগিয়ে রোগ নিরাময় করা হয়৷ বাতের রোগীরা নিঃশ্বাসের মাধ্যমে সেখানকার বাতাস গ্রহণ করেন৷ তাতে আশ্চর্য ফল পাওয়া যায়৷ অনেক রোগী বার দশেক সেখানে বসার পর বেশ কয়েক বছরের জন্য বাতের ব্যথা থেকে মুক্তি পেয়েছেন৷ বাত বিশেষজ্ঞ ড. হান্স ইয়োকেল বলেন, ‘‘বিংশ শতাব্দীর শুরুতে এই শহরের এক ফার্মাসিস্ট এই গুহার মধ্যে পরীক্ষা চালিয়ে দেখেছিলেন, যে সেখানে যথেষ্ট পরিমাণ ব়্যাডন রয়েছে৷ ১৯১২ সাল থেকে তিনি সেখানে চিকিৎসা শুরু করেন৷’’

ব়্যাডন শরীরের উপর ঠিক কী প্রভাব রাখে, তা আজও জানা যায়নি৷ ডার্মস্টাট শহরে হেল্মহলৎস ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা ব়্যাডন বিকিরণ থেরাপির প্রভাব ও ঝুঁকি পরীক্ষা করতে চান৷ ব্যথা তাড়ানোর চিকিৎসার উন্নতি করা অথবা নতুন করে গড়ে তোলাই ড. ক্লাউডিয়া ফুর্নিয়ের লক্ষ্য৷ বায়ো পদার্থবিদ ড. ক্লাউডিয়া ফুর্নিয়ে বলেন, ‘‘অন্যদিকে তথাকথিত ব়্যাডন সুইমিং পুলে অনেক কম ডোজে ব়্যাডন থাকে, যেখানে স্নান করা যায়৷ অথবা গুহার মধ্যে সরাসরি নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে ক্রনিক রোগীরা তা গ্রহণ করতে পারেন৷’’

গবেষকরা তাঁদের গবেষণার জন্য আলাদা একটি ব়্যাডন কামরা তৈরি করেছেন৷ সেখানে ইঁদুরদের বাত সারাতে তাদের উপর বিকিরণ করা হয়৷ ব়্যাডন ডিকম্পোজিশন বা ভাঙনের ফলে যে পদার্থ সৃষ্টি হয়, তা নিয়েও গবেষকদের আগ্রহ রয়েছে৷ সেগুলি শরীরে মধ্যে জমা হয় ও তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ঘটায়৷ গবেষকদের অনুমান, এই আলফা-বিকিরণ শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা চাঙ্গা করে তোলে৷

ফ্লুরোসেন্ট মার্কারের মাধ্যমে আলফা পার্টিকেলের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়৷ প্রাথমিক পরীক্ষায় বিজ্ঞানীরা এর মধ্যেই দেখতে পেয়েছেন, যে ব়্যাডন চিকিৎসার পর ইঁদুরের জয়েন্ট আবার সচল হয়ে উঠেছে৷ এই চিকিৎসার কার্যকরিতা পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ হয়ে গেল৷ গুহার বাতাস গ্রহণ করে রোগীদেরও ঠিক একই উপলব্ধি হয়ে আসছে৷ ফলে রাইনার ব্লুমব্যার্গ ভবিষ্যতে বেদনামুক্ত হয়ে বেঁচে থাকার আশা করতে পারেন৷