1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গুটেনব্যার্গের উত্থান-পতন

২৪ জানুয়ারি ২০১১

বাভারিয়ার সিএসইউ দলের রাজনীতিক, অভিজাত বংশপরিচয়, সুদর্শন, ম্যার্কেল মন্ত্রীসভায় আসার পর অতি স্বল্পসময়ে জার্মানির জনপ্রিয়তম রাজনীতিকের স্থানটি দখল করে নিয়েছেন৷ কিন্তু এবার তাঁর রঙ কিছুটা চটতে বসেছে

https://p.dw.com/p/101Xx
প্রতিরক্ষামন্ত্রী কার্ল থেওডোর সু গুটেনব্যার্গছবি: AP

এর কারণ হল জার্মান সামরিক বাহিনী সংক্রান্ত একাধিক কেলেঙ্কারি৷ জার্মান সেনাবাহিনীর ডাকে আফগানিস্তানে দু'টি অপহৃত তেলের ট্যাংকারের উপর ন্যাটোর বিমানহানায় বহু বেসামিরক নাগরিক নিহত হওয়া দিয়ে যার শুরু: সে আমল থেকেই তাঁর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জার্মান জনগণ এবং বিশেষ করে জার্মান সংসদকে যেভাবে খবরাখবর দিয়ে থাকে এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী কার্ল থেওডোর সু গুটেনব্যার্গ যেভাবে পরষ্পরবিরোধী বিবৃতি দিয়ে থাকেন, তা'তে সাধারণভাবে বিরোধীমহলে একটা অসন্তোষ বর্তমান ছিল৷ কিন্তু সেই অসন্তোষ এবার গুঞ্জন থেকে কলরোলে পরিণত হয়েছে৷

মাত্র দু'সপ্তাহের মধ্যেই এই পরিবর্তন৷ গত সপ্তাহে খবর বেরোয় যে, কে বা কারা আফগানিস্তানে জার্মান সেনাবাহিনীর একটি প্রত্যন্ত ঘাঁটি থেকে পাঠানো চিঠিপত্র জার্মানিতে খুলে দেখেছে৷ দ্বিতীয়ত, ঠিক সেই ঘাঁটিতেই এক ২১-বছর-বয়সী জার্মান সৈন্যের গুলিতে মারা যাওয়ার ঘটনা একটি দুর্ঘটনা হলেও, সেই গুলিটা বেরিয়েছিল তার অপর কোনো সৈন্য-সতীর্থের বন্দুক থেকে৷ তৃতীয়ত, জার্মান নৌবাহিনীর একমাত্র বড় পালতোলা সুলুপ জাহাজ ‘গর্শ ফক'-এ এক ২৫-বছর-বয়সী মহিলা অফিসার ক্যাডেটের ২৭ মিটার উঁচু মাস্তুল থেকে পড়ে প্রাণ হারানোর ঘটনা৷

Flash-Galerie Deutschland 100 Tage schwarz-gelb Karl-Theodor zu Guttenberg
ছবি: AP

বিশেষ করে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ঘটনাটির পিছনে যে ধরণের সব সন্দেহ এবং অভিযোগ রয়েছে, তা'তে গুটেনব্যার্গ'ও নাড়া খেয়েছেন৷ দৃশ্যত জার্মান সামরিক বাহিনীতে গুলিবন্দুক নিয়ে নানা ধরণের সাহস দেখানোর খেলা, অপরদিকে সৈন্য-ক্যাডেট-শিক্ষার্থীদের যৌন অপব্যবহার বা নির্যাতন খুব বিরল ঘটনা নয়৷ তাই গুটেনব্যার্গ এবার গোটা জার্মান সামরিক বাহিনীতে এ'ধরণের অপসংস্কৃতির তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন, অপরদিকে ‘গর্শ ফক' জাহাজটির ক্যাপ্টেনকে সাসপেন্ড করেছেন৷

মুশকিল এই যে, ঠিক তার আগের দিনই তিনি বিরোধীদের বলেছিলেন, আপনারা সাক্ষ্য-প্রমাণ না জেনেই রায় দেবেন না৷ তাহলে গুটেনব্যার্গের এই ক্যাপ্টেনকে বরখাস্ত করাটা কোন পর্যায়ে পড়ে? এ' প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী সামাজিক গণতন্ত্রী দলের সংসদীয় গোষ্ঠীর নেতা ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার স্বয়ং৷ তাঁরই দলের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ রাইন্যার আর্নল্ড বলেছেন, গুটেনব্যার্গ গোটা সামরিক বাহিনীর তদন্তের নির্দেশ দিয়ে এই ধারণা উদ্রেক করেছেন যে, সমস্যাটা যেন জার্মান সামরিক বাহিনীর সর্বত্র বর্তমান৷ সবুজ দলের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ওমিদ নুরিপুর'এর ধারণা যে, গুটেনব্যার্গ তাঁর মন্ত্রণালয়ের অব্যবস্থার জন্য দায়িত্ব নিতে চাইছেন না৷

তবে শাসক জোটের সিডিইউ-সিএসইউ দল অথবা এফডিপি জোটের তরফ থেকে গুটেনব্যার্গের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করা হয়েছে৷ সবচেয়ে বড় কথা, চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল তাঁর মন্ত্রীসভার তরুণ গ্যালাহাড'কে এখনও রক্ষা করে চলেছেন৷ ওদিকে তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ যে গুটেনব্যার্গকে ভবিষ্যতে কোনোদিন চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হিসেবে দেখতে শুরু করেছেন, সেটাও ম্যার্কেলের অজ্ঞাত নয়৷ আসল কথা, গুটেনব্যার্গ এখনও সিডিইউ-সিএসইউ দলের পরিসম্পদ বলেই গণ্য, দেনা হিসেবে নয়৷ এবং সেই কারণেই তিনি বিরোধীদের চাঁদমারি হয়ে দাঁড়িয়েছেন৷

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: সাগর সরওয়ার