1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গাড়ি কারখানাগুলোতে পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তির উদ্যোগ

২৬ নভেম্বর ২০১১

পরিবেশ বাঁচাতে সবুজ প্রযুক্তি নিয়ে এগিয়ে এসেছে ইউরোপের নামিদামি গাড়ি তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলো৷ ফোর্ড উদ্ভাবন করেছে পরিবেশ বান্ধব ইঞ্জিন৷ এছাড়া এ কাজের পুরো প্রক্রিয়াতেই কার্বন নির্গমন হ্রাসের উদ্যোগ অন্যান্য কোম্পানিগুলোর৷

https://p.dw.com/p/13He0
ফোর্ড কম্পানির গাড়ি আওসিস ম্যাক্সছবি: AP

মানুষের দৈনন্দিন জীবনের চাহিদা ও সামর্থ্যের সাথে তাল মিলিয়ে সড়ক পথে বাড়ছে গাড়ির ভিড়৷ এসব গাড়ি থেকে নির্গত হচ্ছে কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস৷ মিশে যাচ্ছে আমাদের পরিবেশে৷ বৃদ্ধি করছে বিশ্বের উষ্ণতা৷ তবে শুধু চলমান গাড়ি থেকেই নয়৷ গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রপাতি তৈরির প্রক্রিয়া থেকেও পরিবেশের সাথে যোগ হচ্ছে টন টন কার্বন৷ তাই গাড়ি শিল্পের সাথে জড়িত কর্তৃপক্ষ এবং বিজ্ঞানীরা এখন উদ্যোগ নিচ্ছেন একদিকে যেমন অল্প মাত্রায় কার্বন নির্গমনকারী গাড়ি তৈরি করতে হবে, অন্যদিকে তেমনি গাড়ি তৈরি প্রক্রিয়ার সকল ধাপেই পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে৷

গাড়ি তৈরির প্রতিষ্ঠান ফোর্ড'এর ইউরোপীয় কারখানায় উদ্ভাবন করা হয়েছে তাদের তৈরি সবচেয়ে ছোট পেট্রোল ইঞ্জিন৷ পরিবেশ বান্ধব বলে এটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইকোবুস্ট ইঞ্জিন'৷ এটিতে রয়েছে এক লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন তিনটি সিলিন্ডার৷ এ'ফোর আকৃতির একটি কাগজের উপরেই রাখা যায় এই ইঞ্জিনটিকে৷ অবশ্য আকারে ছোট হলেও এটির কর্মদক্ষতা ১.৬ লিটারের ইঞ্জিনের সমান৷ এটি ১২৫ পিএস ক্ষমতাসম্পন্ন৷ অথচ প্রতি কিলোমিটারে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন করে মাত্র ১১৪ গ্রাম৷ এছাড়া এটির ১০০পিএস ক্ষমতাসম্পন্ন আরেকটি সংস্করণও বাজারে আনবে ফোর্ড৷ সেটিতে কার্বন নির্গমনের হার আরো একটু কমে দাঁড়াবে কিলোমিটার প্রতি ১০৯ গ্রাম৷

Autoherstellung in China
চীনের গাড়ি কারখানায় কাজ করছেন এক শ্রমিকছবি: AP

২০১২ সালের শুরুর দিকেই বাজারে আসবে এসব ইঞ্জিন চালিত ফোর্ডের গাড়ি৷ তবে বিশেষভাবে ফোর্ড সি-ম্যাক্স, গ্র্যান্ড সি-ম্যাক্স এবং নতুন ফোর্ড বি-ম্যাক্স গাড়িগুলোতে সংযোজিত হচ্ছে এই পরিবেশ বান্ধব ইঞ্জিন বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি৷ জার্মানির কোলন শহরে ফোর্ডের কারখানায় নতুন এই ইঞ্জিন উদ্ভাবনের কথা প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যালেন মালেলি বলেন, ‘‘নতুন ইকোবুস্ট ইঞ্জিন এবং সার্বিকভাবে আমাদের প্রতিষ্ঠান এমন ধরণের প্রযুক্তি উপহার দিচ্ছে যা কম জ্বালানি পোড়ায়, অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন এবং স্বল্পমাত্রায় কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন করে৷''

জানা গেছে, কোলনের কারখানায় এই পরিবেশ বান্ধব ইঞ্জিন তৈরিতে ফোর্ড ১১ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে৷ শুধুমাত্র এই কারখানা থেকে বছরে সাড়ে তিন লাখ ইকোবুস্ট ইঞ্জিন তৈরি করবে ফোর্ড৷ তবে ২০১২ সালের প্রথম দিকে রোমানিয়ার ক্রেইভোতে তাদের নতুন ইঞ্জিন কারখানার কাজ শুরু হলে বছরে সাত লাখ ইকোবুস্ট ইঞ্জিন তৈরি সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে ফোর্ড৷

এদিকে, ডাইমলারের জ্বালানি ও ব্যাটারি উন্নয়ন শাখার পরিচালক ক্রিস্টিয়ান মোরডিক বললেন, ‘‘আমরা যদি গাড়ি তৈরি প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপে বিপুল পরিমাণ কার্বন নির্গমন করতে থাকি তাহলে শুধুমাত্র চলমান গাড়ি থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমনের মাত্রা শূন্যের ঘরে নামালে চলবে না৷ তাই আমাদের পুরো গাড়ি তৈরি প্রক্রিয়ার দিকে নজর দিতে হবে৷'' জার্মানি পারমাণবিক জ্বালানি থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এখন জার্মানিতে অবস্থিত গাড়ি তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলোকেও নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে ঝুঁকতে হচ্ছে৷ ফলে ২০১৩ সাল থেকে জার্মানির লাইপৎসিশ শহরে বায়ু চালিত বিদ্যুৎ কল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএমডাব্লিউ৷ এই কল থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ব্যবহার করে তারা তাদের আইথ্রি, আইএইট গাড়িগুলোর দেহকাঠামো ও যন্ত্রপাতি সংযোজনের কাজ করবে৷

ইউরোপের বৃহত্তম গাড়ি তৈরির জার্মান প্রতিষ্ঠান ফোক্সভাগেনও সম্প্রতি অস্ট্রিয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রতিষ্ঠান ‘ফ্যারবুন্ড' এর সাথে চুক্তির কথা জানিয়েছে৷ সেক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে ২০১৩ সাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করে জার্মানিতে অবস্থিত তাদের ১২টি কারখানার মোট চাহিদার ১০ শতাংশ পূরণ করতে পারবে৷ ‘ফিন্যান্সিয়াল টাইমস ডয়েচল্যান্ড' এর প্রতিবেদন অনুসারে, ফোক্সভাগেন আগামী দুই বছরে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের জন্য কয়েক বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে এবং শীঘ্রই উত্তর সাগরের কাছে বায়ুচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের সাথে অংশীদারিত্বে যাবে৷

পিছিয়ে নেই ফরাসি গাড়ি তৈরির প্রতিষ্ঠান রেনোও৷ তারা মরোক্কোর টাঞ্জিয়ার শহরে ‘জিরো-কার্বন' কারখানা চালুর কথা বেশ গর্বের সাথেই প্রকাশ করেছে৷ কারণ তারা বায়ু চালিত কল থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে, গ্যাস ও তাপ উৎপন্ন করছে জৈবগ্যাস থেকে এবং কারখানার বর্জ্যগুলোকে আবারও ব্যবহার উপযোগী করে তুলছে৷ এখানেই শেষ নয়, রেনো ২০১২ সালের মধ্যে ফ্রান্সে অবস্থিত তাদের সকল কারখানা সৌরবিদ্যুতের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে৷ এছাড়া ২০১৩ সালের মধ্যে ই-গ্যাস তথা জৈবগ্যাস চালিত ইঞ্জিন তৈরির কাজ শুরু করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে গাড়ি তৈরির প্রতিষ্ঠান আউডি৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য