1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গাড়ির আলো দিয়ে শিল্পসৃষ্টি

উলরিকে ড্যোর/এসবি১৮ জানুয়ারি ২০১৪

শিল্প মানেই আজ শুধু চিত্রকলা, ভাস্কর্য বা আল্পনা নয় – আধুনিক যুগের নানা উপকরণ দিয়ে সৃষ্টি করা হয় এমন শিল্পকর্ম, যার পোশাকি নাম ইনস্টলেশন৷ জার্মান এক শিল্পী প্রকৃতির কোলে বা কোনো সৌধের মধ্যে মেলে ধরছেন তাঁর অপরূপ সৃষ্টি৷

https://p.dw.com/p/1AsfI
‘আরেনা ডি ভেরোনা’ – এখানেই শিল্পসৃষ্টি করেছেন লুৎসিউস সিয়ারমানছবি: CC BY-SA-chensiyuan

অ্যাম্ফিথিয়েটারে ইনস্টলেশন

ইটালির ভেরোনায় সূর্যোদয়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন লুৎসিউস সিয়ারমান৷ তাঁর লক্ষ্য বিখ্যাত অ্যাম্ফিথিয়েটার৷ বড় তারকাদের অপেরার মঞ্চ৷ সেটি এখন কয়েক দিনের জন্য শিল্পকর্ম হয়ে উঠছে৷ আয়না দিয়ে তৈরি এক ‘ইনস্টলেশন'-এর নাম রেখেছেন ‘আলোর স্বাক্ষর'৷

পাঁচ দিন আগে এই কাঠামো গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছিল৷ সিয়ারমান-এর কাছে এই প্রচেষ্টা সহজ ছিল না৷ বছর দেড়েক আগে তিনি শহর কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁর শিল্প প্রকল্পের খসড়া জমা দিয়েছিলেন৷ তারপর শুরু হলো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা৷ অবশেষে তিনি যে অসাধ্য সাধন করেছেন, সে কথা বুঝতেও তাঁর সময় লাগছে৷ সিয়ারমান বলেন, ‘‘বেশ ঘটা করেই সবকিছু হলো৷ আমাকে এই অ্যারেনার চাবি দেয়া হয়েছে৷ পাঁচ দিনের জন্য এটাই আমার ঠিকানা৷ অসাধারণ৷''

ঠিক এই কটা দিনই ‘আরেনা ডি ভেরোনা' তাঁর জিম্মায় থাকছে৷ দ্রুত কাজ করতে হবে৷ সিয়ারমান-এর অ্যাসিস্টেন্ট রিকার্দো কাজে হাত লাগাতে ৩০ জন বন্ধু নিয়ে এসেছেন৷

সিদ্ধান্ত ভালোই ছিল৷ মাত্র ৪ ঘণ্টা পর প্রায় ২,৫০০ পুরানো গাড়ির আয়না দিয়ে তৈরি ইনস্টলেশন কাঠামো একটা রূপ পেতে শুরু করেছে৷ সিয়ারমান বলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করতে পারিনি, যে এটা এখানে সত্যি সম্ভব হবে৷ একই সঙ্গে ভেবেছিলাম, এমন বিখ্যাত সৌধ, যা আবার ইউনেস্কো হেরিটেজ সাইট – এমন জায়গায় কাজের অনুমতি পাব৷ কিন্তু প্রায় অসম্ভব মনে হয়েছিল বলেই এমন জায়গায় কাজ করার বাড়তি রোমাঞ্চ পাচ্ছি৷''

Arena von Verona
ছবি: AP

স্বপ্নের সূচনা

২০১১ সালে সিয়ারমান প্রায় ২,০০০ বছর প্রাচীন এই অ্যাম্ফিথিয়েটারে অপেরা উৎসব দেখতে এসেছিলেন৷ তখন থেকেই আয়না দিয়ে শিল্পকর্মের স্বপ্ন তাঁর মন থেকে দূর হয়নি৷ ঐতিহাসিক এই নিদর্শনে তিনি নিজের ছাপ রাখতে চেয়েছিলেন৷

এতকাল তিনি প্রকৃতির কোলে খোলা প্রান্তরকেই তাঁর ইনস্টলেশনের জন্য বেছে নিয়েছিলেন৷ ২০০৯ সালে প্রথমটি সৃষ্টি করেন নামিবিয়ার মরুভূমিতে৷ আলোর প্রতীকও নিজেই তৈরি করেছেন৷ আলো তাঁকে চিরকাল অবাক করেছে৷ সিয়ারমান বলেন, ‘‘অ্যাক্সিস-এর অর্থ ল্যাটিটিউড বা অক্ষরেখা৷ এরপর দ্রাঘিমা৷ এরপর রয়েছে দুটি উজ্জ্বল আলোকবিন্দুকে ঘিরে পৃথিবীর প্রদক্ষিণের প্রক্রিয়া, যা আমরা পৃথিবী থেকে দেখতে পাই৷''

২০১১ সালে তিনি স্পেনের ক্যানারি দ্বিপপুঞ্জের উপর তাঁর নিজস্ব আলোর চিহ্ন এঁকে দিয়েছিলেন৷ একই বছরে আয়ারল্যান্ডেও সেই সৃষ্টি দেখা গেছে৷ এই উজ্জ্বল শিল্পকর্ম এমনকি মহাকাশ থেকেও দেখা যায়৷

অতীতের সাফল্য

ভেরেনা শহরের এই অ্যারেনায় সিয়ারমান ও তাঁর টিম সেই সব গাড়ির আয়না ব্যবহার করেন, যেগুলি আগের ইনস্টলেশনেও ব্যবহার করা হয়েছিল৷ সবার আগে স্ট্যান্ড-এর উপর আয়নাগুলি বসাতে হয়৷ তারপর বাতাসের বেগ অনুযায়ী আলোর প্রতিফলনের রকমফের হয়৷ মাপজোকের বিষয়ে পারদর্শী ইঞ্জিনিয়ার সবকিছু নিখুঁতভাবে সাজান৷

সিয়ারমান জার্মানি ও নামিবিয়ার ভাঙা গাড়ির স্তূপ থেকে আয়না সংগ্রহ করেছেন৷ তাঁর কাছে এগুলির গুরুত্ব গাড়ির পার্টস-এর চেয়ে অনেক বেশি৷ স্বেচ্ছাসেবীরা প্রায় ৮ ঘণ্টা ধরে ইনস্টলেশন গড়ে তুলতে সাহায্য করেছেন৷ সিয়ারমান তাঁর বন্ধু রিকার্দোকে অনেক ধন্যবাদ৷ শেষ আয়নাটি লাগাতে আমি তাকে অনুরোধ করছি৷''

গ্যালারি থেকে সিয়ারমান প্রথম বারের মতো গোটা শিল্পকর্ম দেখতে পেলেন৷ তবে আকাশ থেকেই শিল্পকর্মটি ঠিকমতো দেখা যায়৷ তাঁর নিজস্ব আলোর প্রতীক দিয়ে তিনি এই সৃষ্টির প্রতি সম্মান দেখাতে চান৷

লুৎসিউস সিমারমান-এর আরও অনেক পরিকল্পনা রয়েছে৷ গোটা বিশ্বে তিনি যত বেশি সম্ভব নিসর্গ ও বিখ্যাত জায়গাগুলিতে ইনস্টলেশন গড়ে তুলতে চান৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য