টেনিস
৪ জানুয়ারি ২০১৪কখনো কখনো প্রতিযোগিতা প্রতিযোগীর চেয়ে অনেক বেশি বড় হয়ে যায়৷ সে কথাটাই যেন মনে করিয়ে দিলেন অ্যান্ডি মারে, মনে করিয়ে দিলেন প্রতিযোগীরাই সব প্রতিযোগিতাকে সার্থক করেন৷ সুতরাং যে কোনো প্রতিযোগিতায় সাফল্য আশা করার আগে সবার আগে উচিত অনেক বেশি যোগ্য প্রতিযোগী তৈরি করা৷
গত বছর উইম্বলডন জিতে টেনিসের ঐতিহ্যবাহী এই গ্র্যান্ড স্লাম আসরে ব্রিটেনের ৭৭ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছেন তিনি৷ এর আগে ব্রিটেনের নাগরিক হিসেবে সর্বশেষ উইম্বলডন জিতেছিলেন ফ্রেড পেরি, সেই ১৯৩৬ সালে৷ তারপর থেকে প্রতিটি বছর অনেক আশা বুকে নিয়ে উইম্বলডন দেখতে গিয়েছেন ব্রিটেনের টেনিসপ্রেমীরা৷ প্রতিবার আশাহত হয়ে ফিরতে হয়েছে তাঁদের৷ ২০১৩-র ফাইনালে নোভাক জকোভিচকে হারিয়ে দীর্ঘ এবং অসহনীয় এক যন্ত্রণা থেকে তাঁদের মুক্তি দিয়েছেন অ্যান্ডি মারে৷
মুক্তির আনন্দ পেতে গেলে কত যে কষ্টের পথ পাড়ি দিতে হয়, তা বোধহয় অ্যান্ডি মারের চেয়ে বেশি খুব কম টেনিস খেলোয়াড়ই জানেন৷ ২০১২ সালে ইউএস ওপেনে ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম সাফল্যকে বরণ করার পরও কম কষ্ট সইতে হয়নি৷ খেলোয়াড়দের আসল কাজ অনুশীলনে কঠোর পরিশ্রম করা এবং কোর্টে গিয়ে নিজেকে উজাড় করে দিয়ে সাফল্য ছিনিয়ে আনা৷ কিন্তু তা করতে হলে চাই চাপমুক্ত হয়ে খেলার সুযোগ৷ মারে উইম্বলডন জেতার পরও কিন্তু ব্রিটেনের খেলোয়াড়রা সেই চাপ থেকে মুক্তি পাননি৷ আবার এসেছে নতুন বছর৷ আবার আসবে উইম্বলডন৷ আবার শুরু হবে সেই আলাচনা – এবার কি কোনো ব্রিটিশ খেলোয়াড় পারবে সেন্টার কোর্টে ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে?
আগে থেকেই এমন উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি আর মেনে নিতে পারছেন না ২৬ বছর বয়সি মারে৷ এ মুহূর্তে দোহায় কাতার ওপেনে অংশ নিচ্ছেন তিনি৷ দোহা থেকে যাবেন মেলবোর্নে, বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে৷ তার আগে উইম্বলডন প্রসঙ্গ তোলায় সাংবাদিকদের মারে বলেছেন, এখন খেলোয়াড়দের ওপর থেকে চাপ সরিয়ে নিয়ে সবার উচিত ব্রিটেনের লন টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের নতুন খেলোয়াড় তৈরির কার্যক্রমকে সহায়তা করা৷ মারে মনে করেন, অন্য অনেক দেশের চেয়ে ব্রিটেনে সুযোগ-সুবিধা এবং পরিকাঠামো অনেক ভালো হলেও খুব বেশি ছেলে-মেয়ে এখনো টেনিস খেলে না৷ কিন্তু শৈশব থেকে অনেক শিশু টেনিসের প্রতি না ঝুঁকলে, তারুণ্য পর্যন্ত তাদের টেনিসে ধরে না রাখা গেলে ব্রিটেন প্রত্যাশা অনুযায়ী বিশ্বমানের খেলোয়াড় পাবে কী করে?
এ কারণেই সবাইকে ব্রিটেনের খেলোয়াড় এবং লন টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের ওপর আর চাপ না বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে মারে বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয় উইম্বলডন নিয়ে এখন আর বেশি না ভাবাই ভালো৷ শীর্ষ পর্যায়ে লড়াই করার মতো যত বেশি সম্ভব খেলোয়াড় তৈরি করাই এ মুহূর্তে সবার লক্ষ্য হওয়া উচিত৷'' বৃহস্পতিবার একটা আশঙ্কার কথাও জানিয়েছেন অ্যান্ডি মারে, বলেছেন, ‘‘আমি জানি উইম্বলডন যত এগিয়ে আসবে (ব্রিটেনের) লন টেনিস অ্যাসোসিয়েশন ততই নার্ভাস হতে থাকবে, কারণ, উইম্বলডনে খেলোয়াড়রা ভালো করতে না পারলেই তো নেতিবাচক খবরের স্রোত বইতে শুরু করবে৷ ''
এসিবি/ডিজি (এএফপি, এপি)