‘খালেদা জিয়ার প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়'
২২ অক্টোবর ২০১৩১৯৯৬ এবং ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্য থেকে ১০ জনকে নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের যে প্রস্তাব বিরোধী দলীয় নেত্রী দিয়েছেন, তা নিয়ে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ৷ তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিএনপি চেয়ারপার্সেন যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আর কিছুই না৷ তাঁর এই প্রস্তাব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ তাঁর কথায়, নির্বাচনকালীন সরকার হবে সংবিধানের আলোকে৷ আর কোনো অনির্বাচিত ব্যক্তি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে থাকতে পারবেন না৷ তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন৷ এখন তারা কিভাবে নিরপেক্ষ হবেন?
ওদিকে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক এবং পরিবেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, খালেদা জিয়া দেশকে একটি সংঘাতের দিকে নিতে চান৷ তিনি নির্বাচন চান না৷ আর তাই পুরনো তত্ত্বাবধায়কের কথাই বলেছেন তিনি৷ প্রতিটি নির্বাচনের আগেই বেগম জিয়া একটি সংকট সৃষ্টি করেন – এমন অভিযোগ করে হাছান মাহমুদ বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর ফিরে আসবে না৷
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলীয় নেত্রীর প্রস্তাবের মধ্যে বিস্তর ফারাক৷ এই দুটি প্রস্তাবকে এক করে সমঝোতায় পৌঁছানোর কোনো সুযোগ আছে বলে তিনি মনে করেন না৷ তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা সংবিধানের মধ্যে থেকেই দিয়েছেন৷ আর খালেদা জিয়ার প্রস্তাব মানতে হলে শুধুমাত্র একটি নির্বাচনের জন্য সংবিধান সংশোধন করতে হবে৷
ড. আকবর আলি খান বলেন, ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালের ২০ জন উপদেষ্টার মধ্যে ১৮ জন জীবিত আছেন৷ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আগের বিধান অনুযায়ী, উপদেষ্টাদের বয়স ৭০ বছরের বেশি হতে পারবে না৷ কিন্তু তাঁদের সকলের বয়সই এখন ৭০ বছর ছাড়িয়েছে৷
প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হকও বলেন যে, খালেদা জিয়ার প্রস্তাব মানতে হলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে৷ তবে তিনি মনে করেন, শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়া যে দুটি প্রস্তাব দিয়েছেন তা একসঙ্গে করে আলোচনা শুরু করা যায়৷ দুটি প্রস্তাবের মধ্যে অনেক পার্থক্য থাকলেও, আলোচনার মাধ্যমে হয়ত কোনো সমাধান আসতে পারে৷
২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে একজন ছিলেন সাবেক আইজিপি এ এস এম শাহজাহান৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, খালেদা জিয়া যে প্রস্তাব করেছেন সেটা অনুযায়ী কাজ হলে তাঁরা অন্তর্বর্তী সরকারে থাকবেন কিনা – সে প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় এখন নয়৷ এখন প্রয়োজন দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা৷ কিন্তু এর কোনো আশা তিনি দেখতে পাচ্ছেন না৷ তাঁর কথায়, কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছে না৷ আর ছাড় না দিলে সংঘাত যে অনিবার্য!