খণ্ডচিত্র জুড়ে সৃষ্টির আনন্দ
১ সেপ্টেম্বর ২০১৭বার্লিনের প্রেনৎসলাউয়ার ব্যার্গ এলাকার একটি ভিতর-বাড়ি৷ শিল্পীর ডেরায় স্বাগত জানানো হলো৷ শুধুমাত্র আমাদের জন্য বিয়র্ন মেলহুস আর তাঁর স্টাইলিস্ট ইউলিয়া নয়েনহাউসেন স্টোরে গিয়ে খুঁজে-পেতে তিন দশকের ফিল্ম প্রোডাকশানের পোশাক বার করে নিয়ে এসেছেন৷ তার মধ্যে কোনটা ওঁদের বিশেষ পছন্দ? ইউলিয়া বললেন, ‘‘সব ক'টাই দারুণ৷''
মেলহুস কখনো প্লেমোবিলের কায়দায় যমজ সাজছেন; কখনো বা তিনি একটা ‘স্মার্ফ' পুতুল, যা মেরিলিন মনরো-র মতো গাইতে পারে; কখনো সুপারম্যান, কখনো এলভিস প্রেসলি – এমন সব চরিত্র, যাদের চেনা যায়, যারা পপ কালচারের অঙ্গ৷
বিয়র্ন মেলহুসের সাজগোজের ধরনটা একটু অন্যরকম: ‘‘একজন ঠিকঠাক সুপারম্যানের ঠিকঠাক একটা প্যান্ট লাগে, আর লাগে একটা ভদ্র মতন বেল্ট৷ – সুপারম্যানের কেপটা কিন্তু আসলে একটা প্যান্ট৷ ওটা কেপ-এর মতো করে বেঁধে খুব ভালো ওড়া যায়৷''
কিন্তু মেলহুস এই সাজপোশাক পরে ওড়বার আগে কিছু প্রস্তুতির প্রয়োজন: যার ভিত্তি হলো বিভিন্ন ফিল্মের সাউন্ডট্র্যাক৷ নানা ফিল্ম বা টেলিভিশন অনুষ্ঠান আর পপ গানের সংলাপ ও সংগীতের টুকরো মিশিয়ে একজন সুরকারের মতন একটা নতুন স্বরলিপি সৃষ্টি করেন মেলহুস৷
ভিডিও-র কাহিনি সৃষ্টির কাজ চলে সাউন্ডট্র্যাক তৈরির পাশাপাশি৷ বিয়র্নের ভাষায়: ‘‘এ কাজের অনেকটাই হল জমানো, বা ঘন করা৷ এই যে ‘মাস-মিডিয়া' থেকে নানা উপাদান বার করে নিয়ে সেগুলোকে একটা নতুন আঙ্গিকে দেখা ও পরিবেশন করা, এই কম্প্রেশান থেকেই আমরা যেভাবে পরস্পরের সঙ্গে কথা বলি, অথবা বলার চেষ্টা করতে গিয়ে ব্যর্থ হই, তার উদ্ভট দিকটা সৃষ্টি হয়৷''
আমাদের খেলো, আত্মকেন্দ্রিক, ভোগ-সর্বস্ব দুনিয়াকে আমাদের চোখের সামনে তুলে ধরেন মেলহুস৷ তাঁর কাজে ক্রমেই আরো বেশি রাজনৈতিক চেতনা ও মন্তব্য ঢুকে পড়েছে৷ বিয়র্ন বলেন, ‘‘মিডিয়ায় যা ঘটছে, তা দেখলে আমার রাগ হয়৷ সমাজে যা ঘটছে, তা দেখলে আমার রাগ হয়৷ এই দুনিয়া যে ক্রমেই আরো বেশি করে আত্মরতি ও আত্মাভিমানে ডুবে যাচ্ছে, তা দেখলে আমার রাগ হয়৷''
এবার বিদায় নেওয়ার পালা৷ বিয়র্ন বললেন, ‘‘অনেক হয়েছে, অনেক দেখা হয়েছে, এবার আপনারা আসুন... তবে আসার জন্য অনেক ধন্যবাদ!''
কাটিয়া ল্যুবার/এসি