1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কয়লা খনি বণ্টন বাতিল

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ১৯৯৩ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে বণ্টিত কয়লা খনিগুলির মধ্যে ২১৪টি কয়লাখনি বণ্টনকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছে৷ এই রায়ের অভিঘাত দেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে কতটা হতে পারে, তা নিয়ে শিল্প মহলে চলেছে হিসাবনিকাশ৷

https://p.dw.com/p/1DL6x
Kohle Indien
ছবি: picture alliance/AP Photo

সাবেক মনমোহন সিং সরকারের জমানায় যে দুটি বড় দুর্নীতি সরকারকে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছিল, তার একটি টু-জি স্পেকট্রাম বণ্টন এবং অপরটি কয়লা ব্লক বণ্টন৷ বলা হয়, এই দুটি বণ্টন প্রক্রিয়ায় কোনো স্বচ্ছতা ছিল না৷ নিলাম না করে সরকারি কমিটি নিজের পছন্দমতো বেসরকারি সংস্থাগুলিকে তা বণ্টন করেছিল৷ কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটার জেনারেলের রিপোর্ট অনুসারে, এই বেআইনি বণ্টনে সরকারের বিপুল আর্থিক লোকসান হয়৷ টু-জির জন্য লোকসান হয় ১ লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকা এবং কয়লা খনি বণ্টনে সরকারের লোকসানের বহর ১ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা৷ শীর্ষ আদালতের ২৫শে আগস্টের রায়ে কয়লাখনি বণ্টনকে অবৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছিল৷ এবার সেই রায় অনুসারে ২১৮টির মধ্যে ২১৪টি কয়লাখনি বণ্টন বাতিল করেছে৷ আর রেহাই দেয়া হয়েছে চারটিকে৷

Kohlenlager in Indien ARCHIV 2012
কয়লা ব্লক বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগ অবশেষে সত্য প্রমাণিত হলোছবি: picture-alliance/dpa/Jaipal Singh

দেশের বৃহত্তর স্বার্থে মোদী সরকার অবশ্য আদালতে আর্জি জানিয়েছিল ৪৬টি খনিকে ছাড় দিতে, যেহেতু ৪৬টি খনিতে কয়লা তোলা হচ্ছে৷ অবশিষ্টগুলিতে কাজ শুরু হয়নি৷ বেসরকারি সংস্থাগুলি আবণ্টিত খনির কাগজপত্র দেখিয়ে ব্যাংকের কাছ থেকে প্রচুর টাকা লোন নিয়ে অন্য কাজে তা ব্যয় করেছে৷

সুপ্রিম কোর্ট মনে করে, দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ এভাবে বিলিয়ে দেয়া অনুচিত৷ যেসব খনিতে কয়লা তোলা হচ্ছে তাদের জরিমানা হিসেবে দিতে হবে টন প্রতি ২৯৫ টাকা এবং সেইসব খনির কাজ বন্ধ করে দিতে হবে ২০১৫ সালের ৩১শে মার্চের মধ্যে৷ কয়লা খনি বণ্টনের দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই যে তদন্ত করছে, সেই তদন্ত যথারীতি চলবে৷ সেই তদন্তের উপর আদালতের রায় কোনো প্রভাব ফেলবে না বলেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট৷

প্রশ্ন হলো, ভারতের সামগ্রিক অর্থনীতিতে সুপ্রিম কোর্টের এই রায় কতটা প্রভাব ফেলবে? শিল্প মহলের ধারণা, প্রথমেই বড়সড় ধাক্কা খাবে বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থাগুলি৷ প্রায় ৩০ হাজার মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে৷ কারণ নতুন করে নিলাম হলে বেশি দর দিতে হবে৷ বিদেশ থেকে কয়লা কিনতে হলে বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হবে৷ ফলে বিদ্যুতের দাম বাড়বে৷ এর বিহিত করতে হলে সরকারকে দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে৷ সেটা হলো তাড়াতাড়ি নতুন করে ২১৪টি কয়লা খনি নিলাম করা৷ যত তাড়াতাড়ি এটা করা হবে, অর্থনীতির ওপর তার ধাক্কা কম হবে৷ মোদী সরকারের আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ আশ্বাস দিয়েছেন, সরকার অনতিবিলম্বে নতুন নিলামের ব্যবস্থা করবে৷ শিল্প মহলের একাংশ মনে করে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিদেশি লগ্নি টানতে বিশ্বের ছোটবড় সব দেশকে যখন আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন এবং সেই লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন, ঠিক সেই সময় এই রায় শিল্প বিনিয়োগকারীদের কাছে সম্ভবত নেতিবাচক বার্তা দেবে৷ তাঁরা অপেক্ষা করবে সরকার এর মোকাবিলায় কী ব্যবস্থা নেয় – চার জন্য৷

সাধারণভাবে সব রাজনৈতিক দল সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে৷ বিজেপি, আম আদমি পার্টি এবং বামদলগুলির প্রতিক্রিয়া মনমোহন সিং সরকারের বিরুদ্ধে কয়লা ব্লক বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগ অবশেষে সত্য প্রমাণিত হলো৷ সবথেকে বড় কথা, এই কেলেঙ্কারির সময় কয়লা দপ্তরের ভার ছিল প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর হাতে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য