1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কোরআন পোড়ালে শক্তি বাড়বে আল-কায়েদার : ওবামা

৯ সেপ্টেম্বর ২০১০

আপত্তি সর্বত্রই৷ কোথাও কোথাও তীব্র বিক্ষোভ, কোথাও বা ধর্মযুদ্ধের আশঙ্কা৷ যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় এভানজেলিস্ট খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের কোরআন পোড়ানোর ঘোষণাকে ঘিরে ক্রমশ বাড়ছে আন্তর্জাতিক উত্তাপ৷

https://p.dw.com/p/P7r3
মার্কিন প্রশাসন কোরআন পোড়ানোর হুমকির তীব্র নিন্দা করছেছবি: AP

কোথায় কেমন প্রতিক্রিয়া

প্রতিক্রিয়া সর্বত্রই৷ যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে এশিয়া পর্যন্ত এমন কোন মহাদেশ নেই যেখান থেকে নিন্দাবাদ শোনা যাচ্ছে না৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মতে, ৯/১১-র নবম বর্যপূর্তিতে সত্যিই যদি ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পোড়ানোর পথ নেয় ফ্লোরিডার এভানজেলিস্ট সংগঠন ‘ডাভ ওয়ার্ল্ড আউটরিচ সেন্টার', তাহলে তার প্রতিক্রিয়ায় আল-কায়েদায় দলে দলে যোগ দেবে তরুণ মুসলিমরা৷ বলা বাহুল্য, প্রতিক্রিয়াশীল এবং মুর্খের মত এই বিষয়টি ঘটলে তেমন আশঙ্কা থেকে যাচ্ছেই৷ লন্ডনের খবরে দেখা যাচ্ছে, ব্রিটিশ মুসলিমরা আগামী শনিবার কোরআন পোড়ানোর ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন দূতাবাসের সামনে মার্কিন পতাকা পোড়ানোর কর্মসূচি নিয়েছে৷

মুসলিম অধ্যুষিত মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ার প্রতিক্রিয়ার ছবিটা কেমন

এশিয়ায় সবথেকে বেশি প্রভাব চোখে পড়ছে স্বভাবতই৷ ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুশীলো বামবাম ইয়োদোইনো এক বিবৃতিতে এই দুর্ঘটনা ঘটার আগেই তাকে রুখতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন৷ সেই মোতাবেক ওবামাকে চিঠিও লিখেছেন তিনি৷ বলছেন, ইসলাম বিশ্বের সঙ্গে অ-ইসলাম বিশ্বের যাবতীয় সেতু ধ্বংস হয়ে যাবে এই ঘটনা ঘটতে দিলে৷ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির মতে এই ঘটনা ‘ঘৃণ্য'৷ যে বা যারা এই প্রচারণা চালাচ্ছে, তাদের কেউই সুস্থ নয়৷ ভারতের প্রশাসন এই ঘোষণার তীব্র নিন্দা করেছে৷ ভারতীয় মিডিয়ায় এই ঘটনাটির কোনরকম প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব শোনা গেছে৷ প্রায় একই কথা বলেছে ইন্দোনেশিয়া এবং পাকিস্তান৷ উদ্দেশ্য স্পষ্ট, যাতে এই ঘটনা গুরুত্ব দিয়ে মিডিয়ায় প্রচারিত হলে তার প্রভাবে কোনরকম সামাজিক রায়টের সৃষ্টি না হয়৷ জর্ডনের প্রধান বিরোধী দল ‘দ্য ইসলামিক অ্যাকশন ফ্রন্ট' বা আইএএফ-এর তরফে এক উদ্বিগ্ন বিবৃতিতে বৃহস্পতিবার বলা হয়েছে, এভানজেলিস্ট ধর্মযাজক টেরি জোনস-এর এই কোরআন পোড়ানোর উদ্যোগ আসলে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণার সামিল৷ তীব্র নিন্দা এবং আশঙ্কার কথা শোনা গেছে মিশর, সৌদি আরব সহ মধ্যপ্রাচ্যের সবকটি দেশ থেকে৷

NO FLASH Koran-verbrennung Koran Christen USA Islam
এভানজেলিস্ট সংগঠন ‘ডাভ ওয়ার্ল্ড আউটরিচ সেন্টার'এর নেতা রেভারেন্ড টেরি জোনসছবি: AP

তাহলে কী বড়সড়ো কোন সমস্যার দিকেই এগোচ্ছে বিশ্ব

তেমনই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের৷ যেমন বার্লিনের নামজাদা এক ইসলাম বিশেষজ্ঞ এই কোরআন পোড়ানোর ঘোষণাকে ভিড়ের মধ্যে গুলিভর্তি রাইফেল হাতে নির্বিচারে গুলি চালাতে চালাতে ছুটে যাওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন৷ তাঁর মতে, এই ঘটনা কখনোই কোন শুভ ফল দিতে পারে না৷ দেবেও না৷ ভুলে গেলে চলবে না, আফগানিস্তানে তালেবান এবং আল-কায়েদা বিরোধী যুদ্ধ এখনও অব্যাহত৷ আর সেখানে মার্কিন সেনাবাহিনীর দায়িত্বে থাকা জেনারেল পেত্রায়ুসও তাঁর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, এই ঘটনা বাস্তবায়িত হলে তালেবান এবং আল-কায়েদাকে দমন করার কাজটা বহুগুণ কঠিন হয়ে পড়বে৷ কারণ, জঙ্গিবাদ আরও নতুন সমর্থন পেয়ে অনেকখানি শক্তিশালী হয়ে যাবে এধরণের প্রতিক্রিয়াশীল আচরণের ফলশ্রুতিতে৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ