1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিকল্প জ্বালানি ক্ষতি করছে?

২১ ডিসেম্বর ২০১৬

বিকল্প জ্বালানি মানেই কি পরিবেশবান্ধব? কেনিয়ায় এক জিওথার্মাল প্রকল্পকে ঘিরে সেই প্রশ্নই উঠছে৷ ন্যাশানাল পার্কের মধ্যে প্লান্ট বসিয়ে উদ্ভিদ ও প্রাণিজগতের ক্ষতি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷

https://p.dw.com/p/2UaQ6
কেনিয়ার একটি জাতীয় উদ্যান
কেনিয়ার একটি ন্যাশনাল পার্কছবি: picture-alliance/dpa

বিকল্প জ্বালানি মানেই পরিবেশবান্ধব?

কেনিয়ায় হেল্স গেট ন্যাশানাল পার্ক দেখতে আদর্শ মনে হলেও এই জেব্রাদের বিচরণভূমির মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি জিওথার্মাল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র৷ সেখানকার বিকট শব্দ পাথরে প্রতিফলিত হয়ে শকুনির বাসায় ব্যাঘাত ঘটায়৷

‘নেচার কেনিয়া’ দেশের সবচেয়ে পুরানো পরিবেশ সংগঠন৷ জিওথার্মাল জ্বালানির প্রতি সমর্থন সত্ত্বেও তারা কেন্দ্রের মালিক কেনজেন কোম্পানির বিরুদ্ধে পরিবেশগত বিধিনিয়ম না মানার অভিযোগ আনে৷ ‘নেচার কেনিয়া’-র প্রধান পল মাটিকু বলেন,‘‘জিওথার্মাল জ্বালানি উৎপাদনের সময় কেনজেন কোম্পানিকে নিশ্চিত করতে হবে, যে উৎপাদন প্রক্রিয়া যেন সত্যি পরিবেশবান্ধব হয়, আশেপাশের গাছপালা এবং শকুনির মতো প্রাণীর বংশবৃদ্ধির ওপর যত কম সম্ভব চাপ পড়ে৷’’

মাটি খোঁড়ার ড্রিলিং যন্ত্রগুলি প্রায় ১০ মিটার দীর্ঘ৷ জেনারেটর থেকে বিদ্যুৎ মাটির নীচ থেকে জলীয় বাষ্প বার করতে সাহায্য করে৷ এটাই কোম্পানির সবচেয়ে নতুন ড্রিলিং রিগ৷ কেনজেন কেনিয়ার সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ কোম্পানি৷ এখান থেকে বাষ্প বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে পাঠানো হয়৷ এই রিগ গ্রেট রিফট উপত্যকার নাইভাশা হ্রদের ধারে অবস্থিত৷ ভূ-পৃষ্ঠের ৩,০০০ মিটার নীচে জলীয় বাষ্প রয়েছে, যা তুলনামূলকভাবে বেশি গভীর নয়৷

বেশ কয়েকটি পাইপের মধ্য দিয়ে সেই বাষ্প উৎপাদন কেন্দ্রে পৌঁছায়৷ সেখানে বাষ্প একটি টার্বাইন চালায়, যা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়৷ পানি আবার মাটির নীচে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, যার ফলে আরও জলীয় বাষ্প সৃষ্টি হয়৷

জিওথার্মাল জ্বালানিকে পরিবেশবান্ধব হিসেবে ধরা হয়৷ অন্তত যে সব স্কুল-পড়ুয়া এখানে আসে, তাদের সেটাই শেখানো হয়৷ বলা হয়, জিওথার্মাল জ্বালানি উৎপাদনের সময়ে প্রায় কোনো বর্জ্য সৃষ্টি হয় না৷ প্রায় অফুরন্ত জ্বালানির উৎস সেটি৷ কিন্তু এমন প্লান্ট নির্মাণের মূল্য খুব বেশি৷ বর্তমানে সম্প্রসারণ নিয়ে কথা চলছে৷ কেনজেন কোম্পানির ম্যানেজার পেটার ওউমা বলেন, ‘‘কাজ শেষ হতে ৬, এমনকি ১০ বছর লেগে যেতে পারে, আগে যেমনটা হয়েছে৷ তাই অর্থায়ন একটি বড় বিষয় – সেইসঙ্গে প্রযুক্তিও৷ দেশে এই প্রযুক্তি তেমন নেই৷ তাই আমাদের বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হয়েছে৷''

কেনিয়ার জ্বালানির চাহিদার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মেটায় ওলকারিয়া৷ তা সত্ত্বেও অনেক স্থানীয় মানুষ এই গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত নয়৷ তারা মাসাই উপজাতির মানুষ৷ তারা ওলকারিয়া চতুর্থ প্লান্টের কাছে থাকে৷ এখনো পর্যন্ত তারা শুধু অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছে৷ শব্দ ও বায়ু দূষণের শিকার হয়েছে তারা৷ কেনিয়ার প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষের মতো তারাও বিদ্যুৎ শক্তির নাগাল পায় না৷ মাসাই রাখাল ডেভিড লেচিচি বলেন, ‘‘আমরা বিদ্যুতের কাছে থাকা সত্ত্বেও তার তথাকথিত সুযোগ ভোগ করতে পারছি না৷ নাইরোবির মানুষ এই বিদ্যুতের সুফল পাচ্ছে৷''

পরিবেশবাদীদের মনেও এ বিষয়ে সংশয় রয়েছে৷ বিশেষ করে এই এলাকায় আরও ৫টি প্লান্ট নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে তাঁরা চিন্তিত৷ অন্যান্য সংরক্ষিত অঞ্চলে আরও ৬টি প্লান্ট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে৷

কেনজেন কোম্পানি অবশ্য দাবি করছে, যে পরিবেশগত ও সামাজিক প্রভাব খতিয়ে না দেখে বড় আকারের প্রকল্পের জন্য অর্থ পাওয়া যায় না৷ জার্মানির কেএফডাব্লিউ ব্যাংকের প্রতিনিধি মাক্সিমিলিয়ান হাইডে বলেন, ‘‘বিভিন্ন বিষয় অবশ্যই খতিয়ে দেখা উচিত৷ প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর হস্তক্ষেপ ঘটছে, একটি জাতীয় পার্কে বড় অবকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে৷ সে কারণেই ঝুঁকি এড়াতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিত৷''

কেএফডাব্লিউ উন্নয়ন ব্যাংক সব অভিযোগ খতিয়ে দেখছে৷ এই রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের জন্য প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ কেনিয়ায় জিওথার্মাল জ্বালানির উন্নয়নের জন্য জার্মানি এর মধ্যেই ৭ কোটি ইউরো ব্যয় করেছে৷

ইউলিয়া মিলকে/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান