কায়রোর সবুজ রত্ন: আল-আজহার পার্ক
কায়রোর কেন্দ্রে মানুষের চেষ্টা আর প্রকৌশলের আশ্চর্য এক নিদর্শন আল-আজহার পার্ক৷ এটি নির্মিত হয়েছে ৫০০ বছরের পুরোনো ধ্বংসাবশেষের গাদায় এবং বর্তমানে এটি মিশরের রাজধানীর ‘সবুজ রত্নে’ পরিণত হয়েছে৷
মিশর যেমন
কায়রো বর্তমানে আফ্রিকার বৃহত্তম নগরী৷ এখানে ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষের বাস৷ চারপাশে মরুভূমি আর নোনা জলে বেষ্টিত হলেও শহরটির মানুষরা চাইলেই ব্যবহার করতে পারেন এখানকার সবুজ ভূমি৷
সূচনালগ্ন
১৯৮৪ সালে আগা খান ট্রাস্ট কায়রোর কেন্দ্রে একটি পার্ক নির্মাণের আগ্রহ দেখান৷ কিন্তু এর জন্য ভালো জায়গা পাওয়া খুব একটা সহজ ছিল না৷ তাই শেষ অব্দি দার্ব আল-আহমারে ৫০০ বছর ধরে ৩৩ হেক্টর এলাকা জুড়ে অবহেলায় পড়ে থাকা পুরোনো জঞ্জালের ভাগাড়ে এটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়৷
এখনো চলছে কাজ
বছরের পর বছর সুনিপুন পরিকল্পনার পর ঐতিহাসিক পুরোনো শহরে এটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৯৯৬ সালে৷ পরবর্তী পাঁচ বছরে ৮০ হাজার ট্রাক দিয়ে আবর্জনা অপসারণ করা হয় এবং স্থানীয় চাহিদা পূরণের জন্য মাটির নীচে তিনটি বিশাল আকারের বিশুদ্ধ পানির ট্যাংক বসানো হয়৷
চিত্তাকর্ষক সবুজ এলাকা
কাজ শুরুর ২০ বছর পর ২০০৪ সালে পার্কটি নির্মাণের কাজ শেষ হয়৷ আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন হয় ২০০৫ সালে৷ পার্কটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৫৫ লাখ ইউরো, যা দিয়েছে আগা খান ট্রাস্ট৷
পুরোনো-নতুনের ভেদাভেদ
ঝর্ণা ছাড়াও পার্কে আছে রেস্তোরাঁ, কৃত্রিম লেক৷ লাগানো হয়েছে ৬ লাখ ৫০ হাজার গাছগাছালি৷ তবে কায়রোর পুরোনো শহরের মহিমান্বিত রূপের তুলনায় কখনো কখনো এটা যেন কিছুটা মলিন দেখায়৷
পাড়ায় স্বাগত
প্রতিবেশী এলাকার হাজার বছরের পুরোনো মসজিদ আল-আজহারের সম্মানে পার্কটির নামকরণ করা হয়েছে একই নামে৷
দেয়াল যেন আকর্ষণ, কোনো প্রতিবন্ধকতা নয়
পার্ক খননের সময় অনেক প্রাচীন ভবন ও স্থাপত্যের নিদর্শন পাওয়া গেছে৷ পার্কের নকশায় এগুলোকে যত্নের সঙ্গে পুনস্থাপন করা হয়েছে৷ এটি আয়ুবিদ দেয়ালের একটি অংশ, যেটার কাজ চলছে৷ যদিও এটি পুরনো শহর থেকে পার্কটিকে আলাদা করেছে, তবে এটিকে আকর্ষণের বস্তু হিসেবেই দেখছে সবাই, প্রতিবন্ধক হিসেবে নয়৷
নিখুঁত কাজের নমুনা
পুরো প্রকল্পের একটি অংশ হলো অন্য প্রতিবেশী এলাকার পুরোনো ভবন ও স্কুলগুলোর সংস্কার৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে আমির আসলাম মসজিদের ছাদ সংস্কার কাজের শেষ মুহূর্তের ছবি৷