কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর খাবার খান, শরীর ও মনোযোগ ঠিক রাখুন
আজকের এই প্রতিযোগিতার যুগে কর্মক্ষেত্রে শরীর আর মনোযোগ ঠিক রাখতে প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর খাবার৷ হাজারো কাজের চাপে কি তা সম্ভব? অবশ্যই, আর তারই কিছু টিপস থাকছে এই ছবিঘরে৷
দুপুরের খাবার জরুরি
সকালে তাড়াহুড়ো করে বের হওয়ার কারণে বেশিরভাগ কর্মজীবিরই ঠিকমতো নাস্তা করা হয়না৷ সেক্ষেত্রে দুপুরের খাবারটা খুবই জরুরি৷ অনেককেই দেখা যায় নিজের টেবিলে কাজ করতে করতেই টুকটাক খেয়ে লাঞ্চ সেরে ফেলেন৷ কেউবা মনোযোগ ধরে রাখতে কিছুক্ষণ পরপরই কফি পান করেন আবার কেউ রাতে বাড়িতে ভালো খাবেন বলে অফিসে একটা কিছু খেয়ে নেন৷ বিশেষজ্ঞদের মতে এ নিয়ম মোটেই ঠিক নয়৷
প্রয়োজনে বাড়ি থেকে নিয়ে যাবেন
রাতে যখন বাড়িতে রান্না হচ্ছেই সেখান থেকে সামান্য খাবার কর্মস্থলে নিয়ে গেলেই আর কোনো সমস্যা থাকেনা৷ আজকাল অনেক সুন্দর বক্স পাওয়া যায় বাজারে যাতে খাবার তাজা এবং গরম থাকে৷ আর অফিসে মাইক্রোওয়েভ থাকলে তো কথাই নেই৷ তাছাড়াও এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো ঠান্ডা অবস্থায়ও খেতে মন্দ লাগেনা৷ যেমন নুডলসের সাথে টমেটোর সস, ঠান্ডা মুরগি টুকরো,সাথে সালাদ৷বাড়ি থেকে নেওয়া খাবারে অন্তত জানা থাকে আপনি কী খাচ্ছেন৷
স্বাস্থ্যসম্মত স্যান্ডউইচ
মানুষের শরীরে দিনে কমপক্ষে ১০০ গ্রাম আঁশযুক্ত খাবার প্রয়োজন৷ তাই ভুষি বা দানাযুক্ত রুটির ভেতরে মুরগীর মাংসের স্লাইস, মাছ,শষা,টমেটো, সালাদ পাতা দিয়ে তৈরি করে ফেলুন স্বাস্থ্যসম্মত স্যান্ডউইচ, যা খেতে মজা সহজে হজম হবে,পেটকে রাখবে পরিষ্কার আর রুটিতে থাকা শর্করা যোগাবে শক্তি৷ টমেটো এবং সালাদ থাকায় তাজা ভাব আসবে শরীরে৷ ছবিতে জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে দুপুরে স্যান্ডউইচ খেতে দেখা যাচ্ছে৷
ভিটামিনযুক্ত তাজা সালাদ
জার্মানিতে দুপুরে অনেকেই শুধু সালাদ খেয়ে থাকেন৷ সুন্দর করে কাটা এসব সালাদে থাকে নানারকম সালাদ পাতা, টমেটো, গাজর, বিট, আপেল৷কেউ দেন মিষ্টি কুমড়া, তরমুজ বা অন্যান্য ফলের বীজ৷ কেউবা দেন একেবারে চিকন করে কাটা কয়েক স্লাইস হালকা ভাজি করা মুরগির মাংস৷ আর সালাদটি রসালো করতে ছড়িয়ে দেন লেবু, দই, অলিভওয়েল বা তিলের তেল, সামান্য লবন আর চিনি৷ ক্লান্তি দূর করে ভিটামিনে ভরপুর এই সালাদ যে কাউকে করবে তরতাজা৷
কর্মক্ষেত্রে ভেবে খাবেন
অফিসে হঠাৎ করে খুব খিদে পেলে তখন অনেকেই ঝটপট বিস্কুট, কেক বা এধরনের কিছু খেয়ে ফেলেন৷ এসব খাবারে কিছুক্ষণের জন্য পেট ভরলেও খুব তাড়াতাড়িই এনার্জি নীচের দিকে চলে যায়৷ বরং কিছু বিভিন্ন ধরণের বাদাম, শুকনো ফল, ইত্যাদি একটি কোটাতে ভরে অফিসে রেখে দিলে এসব পরিস্থিতে খাওয়া যায়৷ প্রোটিনের উৎস বাদামের মধ্যে আখরোটে রয়েছে অনেক বেশি পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা ব্রেনকে নানা রোগ থেকে দূরে রাখে৷
ফল বা সবজির জুস
সাথে নিতে পারেন ফল বা গাজর, টমেটোর মতো সবজির জুস৷ বা একসাথে সব মিশিয়ে হতে পারে এক মজার জুস৷ রঙিন ফল বা সবজিতে থাকে লাইকোপেন, যা শরীর খুব সহজে গ্রহণ করতে পারে এবং দেহে এনে দেয় এক তরতাজাভাব, পূরণ করে শরীরের ভিটামিন এ, বি ১২ এবং সি-এর অভাব৷ শুধু জুস নয়, দিনে একটি আপেলও খেতে পারেন অফিসে বসে৷ আপেলে রয়েছে মিনারেল, আয়রন এবং প্রচুর ভিটামিন, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন৷
কফি, তবে বেশি নয়!
অফিসে কফি পান একেবারেই স্বাভাবিক৷ কফি কিছুক্ষণের জন্য মস্তিস্ককে চাঙ্গা করে ঠিকই তবে যারা বেশিক্ষণ মনোযোগ ধরে রাখতে চান তাদের জন্য পরামর্শ, দিনে যত ইচ্ছে সবুজ চা পান করুন৷ সবুজ চা’য়ে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, তাছাড়া শরীরে পানির অভাবও পূরণ করবে৷ তাছাড়া অফিসে দিনে অন্তত এক লিটার পানি পান করা উচিত৷
বিশ্রামের সময় মনকে ঘুরিয়ে দিন
সময় নেই ভেবে কম্পিউটারে কাজ করার সময় কখনো খাবেন না, কারণ এতে ব্রেনের কোনো বিশ্রাম হয়না৷ কিছুক্ষণের জন্য কাজ একদম বাদ দিয়ে ধীরে সুস্থে খান, সুন্দর কিছু ভাবুন৷ ইচ্ছে করলে সহকর্মীদের সাথে খেতে পারেন, হালকা কোনো আলাপ করুন৷ মনটাকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিলেই কেবল পুরোপুরি বিশ্রাম সম্ভব৷ বিশ্রামের সময় কম হলেও তা হয় সুন্দর এবং অর্থবহ৷ ওপরের পরামর্শগুলো দিয়েছেন কোলনের ডাক্তার ক্লাউস ইয়োর্গেন শ্ল্যুইটার৷