1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাশিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

২৬ জুলাই ২০১৭

রাশিয়া, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নতুন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিলটি মঙ্গলবার মার্কিন হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ প্রায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়৷ বিলটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্যও অসুবিধাকর হতে পারে৷

https://p.dw.com/p/2hABS
Symbolbild Zange Sanktionen USA EU Russland
ছবি: picture alliance/dpa

৪১৯ বনাম তিন ভোটে গৃহীত বিলটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরের জন্য পেশ হওয়ার আগে মার্কিন সেনেটে পাস হতে হবে, যদিও তা প্রায় নিশ্চিত বলে ধরে নেওয়া যায়৷ বস্তুত এই বিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের হাত মেলানোর একটি বিরল দৃষ্টান্ত৷

বিলটির একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হলো এই যে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অপসারণ করার আগে প্রেসিডেন্টকে কংগ্রেসের অনুমতি নিতে হবে৷ ডট্রাম্প প্রশাসন বিলের বিরোধিতা করেছে এই বলে যে, এর ফলে প্রশাসনের কর্তৃত্ব ও বিদেশনীতি সংক্রান্ত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে৷ তবে ট্রাম্প বিলটি ভেটো করবেন কিনা, সে বিষয়ে তিনি এ পর্যন্ত কিছু বলেননি৷

নতুন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

US House passes sanctions against Russia

রাশিয়ার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রভাবিত করার চেষ্টা এবং ইউক্রেন ও সিরিয়ায় রাশিয়ার সামরিক হস্তক্ষেপের দরুণ যে নতুন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আরোপ করা হচ্ছে, তার প্রধান লক্ষ্য হলো রাশিয়ার জ্বালানি শিল্প৷ এক্ষেত্রে মার্কিন শিল্প ও বাণিজ্য সংস্থাগুলির কোনো রুশ প্রকল্পে অংশগ্রহণ সীমিত বা নিযিদ্ধ করা হচ্ছে৷

রাশিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এই পদক্ষেপ সম্পর্কে সাবধান করে দিলেও, বিলের চূড়ান্ত বয়ান অবধি অপেক্ষা করবে, বলে জানিয়েছে৷ তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অপেক্ষাকৃত সম্প্রীতিমূলক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার যে প্রচেষ্টা করছিলেন, এই বিল তার বিপরীত দিকে যাচ্ছে৷

ইউরোপের প্রতিক্রিয়া

বিলটি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন চিন্তিত কেননা এর ফলে রাশিয়ার ‘নর্ড স্ট্রিম ২' গ্যাস পাইপলাইন ও অপরাপর যৌথ জ্বালানি প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট ইউরোপীয় কোম্পানিগুলিকে অর্থদণ্ড বা অন্য কোনো ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপের মুখোমুখি হতে পারে৷ বিশেষ করে জার্মানি ও অস্ট্রিয়ার জ্বালানি শিল্পের বড় বড় কোম্পানিগুলি এর আওতায় পড়তে পারে৷

Infografik Karte Major western sanctions

শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র যে একতরফাভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছে, তাও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাঞ্ছনীয় বা কাম্য নয়৷

মার্কিন বিলটিতে ইরানের বিরুদ্ধে নতুন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আরোপ করা হয়েছে, কেননা ইরান তার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে; এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের গতিবিধি স্থিতিশীলতার হানি ঘটাচ্ছে; সেই সঙ্গে রয়েছে ইরানে মানবাধিকার ভঙ্গের ঘটনা৷ উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রেও নতুন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কিম জং-উন-এর আণবিক  ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির কারণে – যদিও সেনেট এই বিষয়টিকে ইরান ও রাশিয়ার প্রসঙ্গ থেকে আলাদা রাখতে চায়৷

শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কখন কার্যকর হয়?

ইউরোপীয় ইউনিয়নের দৃষ্টান্তই ধরা যাক৷ ইইউ সাধারণত ‘ব্ল্যাংকেট' শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আরোপ না করে, বাছাই শাস্তিমূলক ব্যস্থা আরোপ করে৷ যেমন ইরানের ক্ষেত্রে ইইউ-এর নজর প্রধানত মানবাধিকার ভঙ্গের দিকে – এ জন্য বিশেষ ব্যক্তিবর্গের ইইউ-তে যাত্রা নিষেধ ও জামানত আটক করার পন্থা নিয়েছে ইইউ৷ কিন্তু স্পষ্টতই ইরানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থার প্রভাব পড়েছে এর চেয়ে অনেক বেশি – যদিও চীন ও রাশিয়ার যোগদান ছাড়া তা হয়তো এতোটা কার্যকরি হত না৷

Lavrov labels new US sanctions 'Russophobia'

রাশিয়া ক্রাইমিয়া দখল করার পর ইইউ জামানত আটক ও যাত্রা নিষেধ ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আরোপ করে; এছাড়া ইইউ-এর পুঁজিবাজারে রাশিয়ার সরকারি মালিকানার সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলির পুঁজি সংগ্রহ সীমিত করা হয়; অপরদিকে অস্ত্রশস্ত্র ও সামরিক সাজসরঞ্জামের রপ্তানি বা আমদানি নিযিদ্ধ করা হয়৷ ইইউ-এর এই রাশিয়া নীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় রেখে গ্রহণ করা হয়৷ কিন্তু রাশিয়ার বিরুদ্ধে এই যৌথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও বিশেষ কার্যকরি হয়নি, বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে৷

এসি/ডিজি (এএফপি, এপি, রয়টার্স)