ওবামার কিউবা সফর
২১ মার্চ ২০১৬প্রবল বর্ষণের মাঝেই হাভানা বিমানবন্দরে পৌঁছান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ শীতল যুদ্ধের সূচনারও আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র আর কিউবার মধ্যে বৈরি সম্পর্ক৷ সেই ১৯২৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট হিসেবে কিউবায় গিয়েছিলেন ক্যালভিন কুলিজ৷ তারপর থেকে অনেক প্রেসিডেন্টই পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কিন্তু শীর্ষ নেতাদের সফর বিনিময়ের মাধ্যমে দু'দেশের সম্পর্কোন্নয়নে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখার উদ্যোগ কোনো প্রেসিডেন্ট নেননি৷ ব্যতিক্রম বারাক ওবামা৷ স্ত্রী মিশেল, দুই মেয়ে এবং ৪০ জন আইন প্রণেতা ও বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে সঙ্গে নিয়ে কিউবা-যুক্তরাষ্ট্রের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে দাঁড়িয়ে থাকা দেয়াল ভাঙার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি৷ হাভানায় পৌঁছেই কিউবার নাগরিকদের উদ্দেশ্যে টু্ইটারে প্রশ্ন রেখেছেন, ‘কেমন আছেন?'
তাঁকে স্বাগত জানাতে অবশ্য কিউবার বর্তমান প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রো বিমান বন্দরে যাননি৷ বিভিন্ন সময় তাঁকে অন্যান্য বিশ্ব নেতাদের স্বাগত জানাতে দেখা গেলেও বারাক ওবামার বেলায় তাঁর এই ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্তে অনেকেই অবাক৷ যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের রিপাবলিকান দলের সম্ভাব্য প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, এর মাধ্যমে ওবামার প্রতি রাউল কাস্ত্রোর অবজ্ঞাসূচক দৃষ্টিভঙ্গিই প্রকাশ পেয়েছে৷
তিন দিনের সফরে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেবেন বারাক ওবামা৷ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকটি নিশ্চয়ই রাউল কাস্ত্রোর সঙ্গে৷ সোমবারই ‘বিপ্লব প্রাসাদ'-এ হবে এ বৈঠক৷ এছাড়া নিজেদের দেশের ব্যবসায়ী দলকে সঙ্গে নিয়ে কিউবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও বৈঠকে বসবেন ওবামা৷ এর বাইরে কিউবার জনগণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেয়ারও কথা আছে তাঁর৷
তিন দিনের সফর শুরুর আগে এ সফর সম্পর্কে আশার কথাই শুনিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট৷ সিএনএন অনলাইনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দু'দেশের মধ্যে যত ব্যবসা-বাণিজ্য হবে, দু'দেশের নাগরিকদের মধ্যে যত বেশি যোগাযোগ হবে, দু'দেশের সম্পর্কে কাঙ্খিত পরিবর্তনও ততই ত্বরাণ্বিত হবে৷
বারাক ওবামার এ সফরকে সামনে রেখেও হাভানায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়েছে৷ হাভানার এক গির্জার সামনে বিক্ষোভ করেছেন রাজনৈতিক বন্দিদের স্ত্রীদের সংগঠন ‘লেডিজ ইন হোয়াইট'৷ সাপ্তাহিক এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন শুরুর পরপরই অবশ্য পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে৷
এসিবি/ডিজি (এপি, রয়টার্স)