1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঐতিহাসিক চিত্রকলার ডিজিটাল মেকওভার!

ইউলিয়া হিৎস/এসি১০ জুন ২০১৬

ভেলাসকেজ কিংবা রুবেন্সের মতো স্বনামধন্য ঐতিহাসিক চিত্রকরদের ছবি নিয়ে ডিজিটাল খেলা করেন ইটালির শিল্পী দাভিদ কেইওলা, কম্পিউটারের স্ক্রিনে৷ এ যেন অতীত আর বর্তমানের মধ্যে সেতুবন্ধন৷

https://p.dw.com/p/1J44m
DW Euromaxx Davide Quayola
ছবি: Quayola

এমন সব প্রাকৃতিক দৃশ্য, যা নিজে থেকেই ভেঙে-গড়ে মুছে যায়; অথবা এমন সব সুবিশাল স্ক্রিন, যাতে ঐতিহাসিক শিল্পকলার কোনো সুপরিচিত চিত্রপটকে ‘ডিকন্সট্রাক্ট' করা হয়৷ ইটালির দাভিদ কেইওলা এই সব শিল্পকর্মের স্রষ্টা৷

রোমের একটি শিল্পী পরিবারে জন্ম৷ ৩৪ বছর বয়সি দাভিদ কেইওলা সারা জীবন ধরে নানা বিশ্বখ্যাত ছবি দেখে আসছেন৷ অতি কম বয়সেই তাঁর কম্পিউটারের সঙ্গে পরিচয় হয়৷ তবে প্রাচীন রোমও যেন কোথাও একটা রয়ে গিয়েছে তাঁর মধ্যে৷ ভিজুয়াল আর্টিস্ট দাভিদ কেইওলা বলেন, ‘‘আমার কাছে ঐতিহাসিক শিল্পকলা হলো সৌন্দর্য আর পূর্ণাঙ্গতার প্রতীক, যা আমরা বহুবার দেখেছি, বহুবার পর্যবেক্ষণ করেছি৷ আমার প্রচেষ্টা হলো, এ ধরনের একটি পুরনো শিল্পকর্মকে নতুনভাবে দেখার পন্থা আবিষ্কার করা৷''

ক্লাসিক থেকে বিমূর্ত

স্পেনের সুবিখ্যাত চিত্রকর দিয়েগো ভোলাসকেজের টানে কেইওলা যে শুধু মাদ্রিদের মুজিও দেল প্রাদোতে গিয়েছেন, এমন নয়৷ বরং ঐ মিউজিয়ামের ডিজিটাল ডোমেনেও তাঁর গতিবিধি৷ ২০০৯ সাল যাবৎ প্রাদো ভেলাসকেজের ১৪টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্যানভাসকে হাই রেজোলিউশন ফরম্যাটে ইন্টারনেটে দিয়েছে৷ গুগল ইত্যাদি সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে আজ ভেলাসকেজের ‘লাস মেনিনাস'-এর মতো ছবি ডিজিটাল আঙ্গিকে উপভোগ করা সম্ভব৷ সেই ছবিটাই ছিল কেইওলা'র এই অ্যানিমেশনের ভিত্তি৷

কেইওলা বললেন, ‘‘স্বভাবতই এভাবে আদত শিল্পী ও তাঁর শিল্পকে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে৷ এটা ছবিটির প্রতি আমার ব্যক্তিগত আগ্রহের প্রতিফলনও বটে, আবার সমাজ আজ যেভাবে সব কিছু ডিজিটাল দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখে, তার প্রতিফলন – কিভাবে আমরা জগৎকে অন্যভাবে দেখতে শিখছি, ফলে পরিচিত শিল্পকর্মকেও অন্য চোখে দেখছি৷''

ইটালির শিল্পী দাভিদ কেইওলা-র শিল্পকর্ম

ওলন্দাজ চিত্রকর পেটার পল রুবেন্সের ‘ব্যাঘ্রশিকার' ছবিটিকে একটি বিমূর্ত ছবিতে পরিণত করেছেন কেইওলা৷ বিশেষভাবে সৃষ্ট প্রোগ্রামের সাহায্যে কেইওলা ছবিগুলির প্যারামিটার নির্ধারণ করে, নিজস্ব অ্যালগরিদম দিয়ে তা নতুনভাবে মাপজোক করে অন্তর্নিহিত জ্যামিতিক কাঠামোগুলোকে উন্মোচন করেন – যার ফলে এই কিউবিস্ট এফেক্ট সৃষ্টি হয়৷ ক্লাসিক্যাল আর্ট যেন ডিজিটাল নান্দনিক আর প্রযুক্তির সঙ্গে ধাক্কা খাচ্ছে৷

অযান্ত্রিক

কেইওলা'র ভাষ্যে, ‘‘প্রযুক্তির সাথে আমার সম্পর্ক ঠিক যান্ত্রিক নয়, বরং একটা সহযোগিতার মতো৷ আমিএমন সব ‘টুল' সৃষ্টি করতে ভালোবাসি, যেগুলোর সঙ্গে একটা আদানপ্রদান সম্ভব৷ প্রযুক্তির সঙ্গে কাজ করা যেন নিজেই এক ধরনের আবিষ্কার বা আবিষ্কারের প্রক্রিয়া৷ প্রযুক্তি শুধু কোনো ধারণাকে ফুটিয়ে তোলার জন্যই নয়, বরং সেই ধারণাকে আকৃতি দেওয়ার, সেই ধারণার সঙ্গে সংলাপের একটা সুযোগ৷''

মাদ্রিদের ‘ফ্যাকটুম আর্টে' স্টুডিওতে জন্ম নিচ্ছে দাভিদ কেইওলা'র সর্বাধুনিক ভাস্কর্য৷ বার্লিন, মস্কো, নিউ ইয়র্ক, লস এঞ্জেলেস, সর্বত্র তাঁর একক প্রদর্শনী হয়েছে৷ ইলেকট্রনিক ও ডিজিটাল আর্টের বিভিন্ন ফেস্টিভালে তিনি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন৷ ক্রমেই তাঁর কাজ রক্ষণশীল গ্যালারি ও মিউজিয়ামগুলোর কাছেও কদর পাচ্ছে৷ কেইওলা বললেন, ‘‘ফাকটুম-এর মজা এই যে, এরা যেমন আধুনিক প্রযুক্তিকে স্বাগত জানায়, তেমনি এই ডিজিটাল ফ্যাব্রিকেশন পাইপলাইনের সঙ্গে প্রথাগত অঙ্কণ পদ্ধতিকে মেলাতে জানে ফ্যাকটুম৷ যেন দু'টোর একটা সংমিশ্রণ তৈরি হয়৷''

দাভিদ কেইওলা শুধু ভাস্কর্য আর প্রিন্ট নিয়েই ব্যস্ত নন৷ তিনি ইভেন্ট নিয়েও কাজ করেন৷ তাঁর পরের প্রকল্প হলো বার্লিনে – রোবোটরা লাইভ মূর্তি গড়বে! ডিজিটাল আর অ্যানালগের পরস্পরবিরোধিতা মুছে যাবে৷ দাভিদ কেইওলা'র শিল্পকর্ম আমাদের যুগের সেই বৈশিষ্ট্যকেই তুলে ধরছে: কিভাবে রিয়্যাল আর ভার্চুয়্যালের মধ্যে পার্থক্য ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য