টুইট পালটে দিচ্ছে তাঁর জীবন
১৪ ডিসেম্বর ২০১৬এই পেল্লাই চেহারার কারণে আতি আর হাঁটতে পারেন না৷ তাই বিশেষ একটি বিমানে তাঁকে উড়িয়ে আনা হবে মুম্বইয়ে৷ সেখানেই ব্যারিয়াট্রিক সার্জন ড. মুফ্ফাজাল লাকদাওয়ালা তাঁর শরীরে অপারেশন করবেন৷ আতির স্বপ্ন, অপারেশন করার পর তাঁর ওজন একেবারে কমে যাবে৷ দেখতে সুন্দর লাগবে তাঁকে৷ হাঁটতে পারবে সে৷
ক'দিন আগেও নিজের এই স্বপ্ন প্রায় ভুলতে বসেছিল আতি৷ কায়রোর ভারতীয় দূতাবাস যে প্রথমে তাঁকে ভিসা দিতেই চায়নি৷ তারা বলেছিল, ‘এত মোটা শরীর নিয়ে বিমানে করে কিছুতেই ভারতে যেতে পারবেন না এমান আহমেদ আব্দেল আতি৷'
এরপর দুঃস্বপ্নের মতো কাটছিল দিনগুলো৷ কিন্তু ড. লাকদাওয়ালার করা একটি টুইট আতির জীবনটা যেন বদলে দিল৷ রোগীর প্রতি চিকিৎসকের এই মমতা, দায়িত্বজ্ঞান দেখে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে৷ এমনকি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজও প্রতিশ্রুতি দেন আতিকে সাহায্য করার৷
এরপর আর কী? এখন শুধু ভারতে যাওয়ার অপেক্ষা, অপেক্ষা একটি সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার৷ আতির পরিবার জানায়, জন্মের সময় আতির ওজন ছিল পাঁচ কেজি৷ সে সময়ই তাঁর শরীরে ‘এলিফেন্টিয়াসিস’ রোগ ধরা পড়ে৷ ফলে যতই দিন যায়, বিশেষ করে ১১ বছর বয়স নাগাদ আতির শরীরটা ‘এলিফেন্ট' বা হাতির মতো ফুলতে থাকে৷ তখন থেকেই আর হাঁটতে পারেন না আতি, পারেন না হামাগুঁড়ি দিতেও৷
ড. লাকদাওয়ালা অবশ্য বলেছেন যে, আতির ‘এলিফেন্টিয়াসিস' নয়, বরং মোটা হয়ে যাওয়া-জনিত ‘লিমফোডেমায়' ভুগছেন তিনি৷ এমনটা হলে পা দু'টো মারাত্মক আকারে ফুলে যায়৷ আর সেটাই হয়েছে আতির৷ সঙ্গে হয়েছে একটা স্ট্রোকও, যার ফলে আজ একেবারে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন আতি৷
ড. লাকদাওয়ালা আগেও ওজন কমানোর বহু অপারেশন করেছেন৷ ভারতের দু'জন মন্ত্রী – নিতিন গাডকারি ও ভেঙ্কাইয়া নাইডু-ও নাকি তাঁর রোগী ছিলেন৷ ড. লাকদাওয়ালার কথায়, ‘‘আতির পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র৷ বিশেষ বিমান ভাড়া করার সামর্থ্যও তাঁদের নেই৷ তবে অপারেশনের খরচটা আমরা প্রায় যোগাড় করে ফেলেছি৷''
চিকিৎসার জন্যে দুই থেকে তিন মাস মুম্বইতে থাকতে হবে আতিকে৷ তারপর বাড়ি ফিরে যেতে পারেন তিনি৷ তবে ড. লাকদাওয়ালা জানান, আতির ওজন ১০০ কেজির নীচে নামিয়ে আনতে প্রায় তিন বছর সময় লাগতে পারে৷
ডিজি/জেডএইচ