1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘এক বছর ধরেই এই ফাইনাল খেলে আসছে ভারত’

৩ এপ্রিল ২০১১

আজ থেকে ২৮ বছর আগে লর্ডসের মাটিতে বিশ্বকাপে ক্রিকেটে ক্যারিবীয় আধিপত্যের সমাপ্তি হয়েছিল কপিল দেবের ভারতের হাতে৷ গত একযুগ ধরে বিশ্বকাপে অসি আধিপত্যের শেষটাও সেই একই ভারতের হাতে, নেতৃত্বে এবার মহেন্দ্র সিং ধোনি৷

https://p.dw.com/p/10mZK
ছবি: AP

কোয়ার্টার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া, সেমিফাইনালে চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান আর ফাইনালে গতবারের রানার্স আপ শ্রীলংকাকে হারিয়ে এবার যোগ্যতর দল হিসেবেই বিশ্বসেরার খেতাবটি জয় করলো ভারত৷ শনিবার শ্রীলংকার বিপক্ষে ২৭৫ রানের জয়ের লক্ষ্যে নেমে শুরুতেই শেবাগ এবং তেন্ডুলকারের উইকেট দুটি হারায় ভারত৷ তখন ভারতীয় অনেক সমর্থকই হয়তো ভাবছিলেন দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে যে অপেক্ষা চলছে তার অবসান হবে তো? এই অবস্থাতেই গৌতম গম্ভীর এবং বিরাট কোহলির একটি মাঝারি জুটি৷ গত কয়েক বছর ধরে পরিসংখ্যানের দিক থেকে শচীন-শেবাগকে টেক্কা দিয়ে চলেছেন গম্ভীর৷ কিন্তু অনেকটা চাপা পড়ে যাচ্ছিল সেটি৷ নিজের জাত চেনানোর জন্য এমন মঞ্চকেই শেষ পর্যন্ত বেছে নিলেন গম্ভীর৷ ৯৭ রানের যে ঝকঝকে ইনিংস খেললেন তিনি সেটি কিছুটা ম্লান হয়ে গেছে সেঞ্চুরি না পাওয়াতে৷ কিন্তু মাঠে ছিলেন অধিনায়ক ধোনি আর টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় যুবরাজ সিং৷ জয়ের মুহুর্তটি এই দুই সেরা খেলোয়াড়ের কাছ থেকেই শেষ পর্যন্ত এল৷

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শেষ ওভারে হরভজনের বদলে নেহরাকে বোলিং করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েও বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ধোনি৷ এই ম্যাচে নিজেকে ব্যাটিং অর্ডারে এগিয়ে নিয়ে এসেছিলেন তিনি৷ এবং সেই সিদ্ধান্তকে সঠিক বলেই প্রমাণ করলেন৷ অধিনায়ক হিসেবেই চ্যালেঞ্জটা নিয়েছেন ধোনি৷ ম্যাচ শেষে তিনি জানিয়েছেন, ইচ্ছা করেই একটু ওপরে খেলেছেন, যুবরাজকে পরে ঠেলে দিয়েছেন৷ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি যুবরাজের ওপর ভরসা করে৷ পাশাপাশি একটি চ্যালেঞ্জও ছিল নিজের ওপর৷ চলতি টুর্নামেন্টে দল ম্যাচ জেতায় ধোনির বাজে ব্যাটিং পারফরমেন্স নিয়ে তেমন কথা শোনা যাচ্ছিল না৷ কিন্তু ভারতীয় অধিনায়ক তাঁর আসল খেলাটা বোধহয় জমিয়ে রেখেছিলেন ফাইনালের জন্য৷ ব্যাটিং এ আগে নেমে ম্যাচ জেতানো ৯১ রান করে তিনি বুঝিয়ে দিলেন টিম ইন্ডিয়ার নেতৃত্ব সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তির হাতেই৷

১২১ কোটি মানুষের দেশ ভারতের জাতীয় দলকেই সবচেয়ে বেশি মানসিক চাপ সইয়ে ক্রিকেট খেলতে হয়৷ এবার স্বাগতিক হিসেবে সেই চাপের পরিমাণটা ছিল অত্যন্ত বেশি৷ তো সেই চাপ সইয়ে ভারতীয় দলের এবার যে সাফল্য তার পেছনে সবচেয়ে বড় অনুঘটকটি কি? এটা জানতে হলে যেতে হবে প্যাডি আপটনের কাছে৷ দলের মানসিক প্রশিক্ষক হয়ে বেশ কিছুদিন ধরে রয়েছেন তিনি৷ তিনিই জানালেন, গত একটি বছর ধরে টিম ইন্ডিয়া এই ফাইনালের জন্য অপেক্ষা করছে৷ আপটন বলেন, ‘‘গত এক বছর ধরে আমরা এই ম্যাচটির জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি৷ খেলোয়াড়রা সবসময় কথা বলতো মুম্বইয়ের ফাইনাল ম্যাচ নিয়ে৷ তাই শনিবার যখন আমরা ফাইনাল ম্যাচে নামছিলাম, তখন আমরা প্রতিপক্ষের চেয়ে মানসিকভাবে অনেক বেশি প্রস্তুত ছিলাম৷'' আপটন জানান, ‘‘এই ফাইনাল ম্যাচ খেলার স্বপ্ন নিয়ে দলের অনেক খেলোয়াড় নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে৷ অনেকে ঠিকমত খেতেও পারতো না৷'' তাঁদের দীর্ঘদিনের কঠোর সাধনা আর দৃঢ় প্রতিজ্ঞাই ভারতকে এবার বিশ্বসেরার খেতাব পাইয়ে দিয়েছে৷

প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম

সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়