1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান চ্যান্সেলরের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকার

২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ডয়চে ভেলের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল শান্তিপূর্ণ উপায়ে উত্তর কোরিয়া সংকট সমাধানের উপর জোর দিয়েছেন৷ জার্মানি এ ক্ষেত্রে মধ্যস্থতা করতেও প্রস্তুত৷

https://p.dw.com/p/2kOnP
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল
ছবি: DW

মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাষণের তীব্র সমালোচনা করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ ট্রাম্প তাঁর ভাষণে উত্তর কোরিয়াকে ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস' করে দেবার হুমকি দিয়েছিলেন৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ম্যার্কেল বলেন, ‘‘আমি এমন হুমকির বিরোধী৷ জার্মান সরকার ও আমি যে কোনো ধরনের সামরিক সমাধানসূত্রকেই সম্পূর্ণ অযৌক্তিক বলে মনে করি৷ আমরা কূটনৈতিক পথেই সংকটের সমাধান খোঁজার পক্ষে৷ সর্বশক্তি প্রয়োগ করে এ ক্ষেত্রে অগ্রসর হতে হবে৷ আমার মতে, নিষেধাজ্ঞা ও সেই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করাই এই সংকটের সঠিক জবাব৷ উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রে অন্য কোনো পথকেই আমি ভুল মনে করি৷'' ম্যার্কেল জানান, নিউ ইয়র্কে ভাষণের আগেই তিনি টেলিফোনে ট্রাম্পকে এ কথা জানিয়েছিলেন৷ জার্মানিতে সাধারণ নির্বাচনের কয়েকদিন আগে ম্যার্কেল ডয়চে ভেলের দুই সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন৷

সংকট নিরসনে আমরা সাহায্য করতে পারি: ম্যার্কেল

উত্তর কোরিয়া সংকট নিরসনের ক্ষেত্রে ম্যার্কেল সহযোগিতার ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘জার্মানি থেকে ভৌগোলিক দূরত্ব সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়া সংকট আমাদের উপরেও প্রভাব ফেলছে৷ তাই আমি নিজে ও জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীও এ ক্ষেত্রে দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত৷ ইরানের সঙ্গে চুক্তির ক্ষেত্রেও আমরা আলোচনায় অংশ নিয়েছি৷ আমি এখনো এই চুক্তিকে সঠিক মনে করি৷ কোনো চুক্তি না থাকার চেয়ে এটি ভালো৷ অনেক বছর লাগলেও শেষ পর্যন্ত ইরানের পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচির সম্ভাবনায় সীমা টানা সম্ভব হয়েছে৷ উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রেও রাশিয়া, চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একই ধরনের পথে অগ্রসর হতে হবে৷''

ম্যার্কেল-এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ডয়চে ভেলের প্রধান সম্পাদক ইনেস পোল ও সাংবাদিক জাফার আবদুল করিম
ম্যার্কেল-এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ডয়চে ভেলের প্রধান সম্পাদক ইনেস পোল ও সাংবাদিক জাফার আবদুল করিম ছবি: DW

সাবেক পূর্ব জার্মানির সময় থেকে উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ং ইয়ং-এ দূতাবাস রয়েছে৷ বার্লিনেও উত্তর কোরিয়ার দূতাবাস রয়েছে৷ হাতে গোনা কিছু দেশের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার এমন কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে৷ সেইসঙ্গে চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও জার্মানির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে৷ ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসেই বার্লিনে এক হোটেলে উত্তর কোরিয়া ও মার্কিন প্রতিনিধিদের এক গোপন আলোচনা হয়েছিল৷ উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন-এর সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগ আছে কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরে ম্যার্কেল বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে এমন কোনো অ্যাজেন্ডা নেই৷ আমি সেই লক্ষ্যে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছি না৷''

‘কখনো এএফডি-র সঙ্গে সহযোগিতা করবো না'

সিডিইউ দলের শীর্ষ নেত্রী হিসেবে ম্যার্কেল নির্বাচনি প্রচারের শেষ পর্যায় সম্পর্কেও মন্তব্য করেন৷ জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী, তিনি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী এসপিডি দলের মার্টিন শুলৎস-এর তুলনায় অনেক এগিয়ে রয়েছেন৷ দক্ষিণপন্থি পপুলিস্ট এএফডি দলের প্রতি বিপুল সমর্থন প্রসঙ্গে ম্যার্কেল বলেন, মানুষের সমস্যাগুলির সমাধান করাই এমন দলের বিরুদ্ধে সবচেয়ে ভালো কৌশল৷ তিনি বলেন, ‘‘কর্মসংস্থান, ভালো স্কুল, উপযুক্ত ডাক্তার নিয়ে তাদের মনে যে সব উদ্বেগ রয়েছে, সেই সব বিষয়ে সত্যি কাজ করতে হবে৷ অন্যদিকে ঘৃণা ও হিংসার বিরুদ্ধেও স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে৷''

নির্বাচনের কয়েক দিন আগে কিছু জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী এএফডি দল দশ শতাংশেরও বেশি সমর্থন পেতে চলেছে৷ ফলে সংসদে তাদের প্রবেশ অনিবার্য বলে মনে করা হচ্ছে৷ তাদের এই সাফল্যের ব্যাখ্যা দিতে চাননি ম্যার্কেল৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি এটা করতে চাই না, কারণ, আমি কখনো এএফডি-র সঙ্গে সহযোগিতা করবো না৷''

‘তুরস্কের সংকটগুলি আমাদের এখানে আনা চলবে না'

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ানের সঙ্গে ধারাবাহিক সংকটসম্পর্কেও ম্যার্কেল বক্তব্য রাখেন৷ উল্লেখ্য, এর্দোয়ান সরাসরি ম্যার্কেলের বিরুদ্ধে বার বার ‘নাৎসি পদ্ধতি' প্রয়োগ করার অভিযোগ এনেছেন৷ তাছাড়া তুরস্কে একাধিক জার্মান নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ বা মামলাও করা হচ্ছে না৷ তুরস্কের অভ্যন্তরে জোরালো সংঘাতের সম্ভাব্য পরিণতি নিয়ে ম্যার্কেল অত্যন্ত উদ্বিগ্ন৷ তিনি বলেন, ‘‘তুরস্কের বিভিন্ন গোষ্ঠী যেভাবে পরস্পরের উপর গোয়েন্দাগিরি ও নজরদারি চালাচ্ছে,   বর্তমানে সেটা আমাদের উদ্বেগের কারণ৷ আমরা এমনটা চাই না৷ তুরস্ক থেকে জার্মানিতে কোনো সংকট চলে আসুক, আমরা সেটা চাই না৷ এইসব গোষ্ঠী যাতে আমাদের এখানে শান্তিপূর্ণভাবে, কোনো উৎপাত ছাড়াই থাকতে পারে, আমরা সে বিষয়ে সতর্ক থাকবো৷''

সিএসইউ দলের সঙ্গে নির্জন দ্বীপে

দীর্ঘ ১২ বছর ধরে যে নেত্রী জার্মানি শাসন করছেন, তিনি কোন রাজনৈতিক নেতাকে একটি নির্জন দ্বীপে সঙ্গে নিয়ে যাবেন? ডয়চে ভেলের প্রধান সম্পাদক ইনেস পোল ও সাংবাদিক জাফার আবদুল করিম সব দলের শীর্ষ প্রার্থীর সঙ্গে সাক্ষাৎকারের শেষে এই প্রশ্নটি করেছেন৷ ম্যার্কেল বিস্ময়করভাবে বাভেরিয়া রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিএসইউ দলের নেতা ইওয়াখিম হেয়ারমান-এর নাম করলেন৷ তাঁর সঙ্গে ম্যার্কেল অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করতে চান৷

ইয়েন্স টুরাউ/এসবি