ইয়েমেন: যুদ্ধের বিরুদ্ধে শিল্পের লড়াই
ইয়েমেনে চলমান যুদ্ধের বিরুদ্ধে সরব হতে বিশ্বের বিভিন্ন শহরের স্ট্রিট আর্টিস্টদের স্থানীয়ভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে চার বছর ধরে অনুষ্ঠান করেন মুরাদ সুবে৷ ইয়েমেনের নাগরিক মুরাদ নিজেও একজন স্ট্রিট আর্টিস্ট৷
সচেতনতা বৃদ্ধি
মুরাদ সুবের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ওপেন ডে ফর আর্ট’-এ মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, এশিয়া এবং ইউরোপের ১০টি শহরের নাগরিকরা অংশ নেন৷ মুরাদ টানা চার বছর ধরে এ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করছেন৷ শান্তির জন্য বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া এবং ইয়েমেনের চলমান যুদ্ধের বিরুদ্ধে সরব হওয়াই এর মূল লক্ষ্য৷
শান্তির জন্য বার্তা
ইয়েমেনের ছয়টি শহরে এবার ‘ওপেন ডে আর্ট’ হয়েছে৷ এরমধ্যে মারিব শহরের অনুষ্ঠান শেষে সুবে বলেন, ‘‘এ অনুষ্ঠানের বার্তা খুব সহজ৷ আমাদের দেশের এই বিপর্যয়কর অবস্থায় অংশগ্রহণকারীরা কী ভাবছেন, কী বিশ্বাস করছেন এবং কী অনুভব করছেন – এ আয়োজনের মাধ্যমে তা-ই প্রকাশ হচ্ছে৷ এটি শান্তির সপক্ষেও৷ যুদ্ধের পর থেকেই দেশের সীমানা আর রাজনীতি মানুষকে ভাগ করছে৷’’
‘হৃদয় যুদ্ধ জয় করতে পারে’
একশ’রও বেশি লোক জড়ো হয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়ার গুয়াংজুতে ‘ওপেন ডে আর্ট’ ইভেন্টকে সমর্থন জানাতে৷ কোরিয়ার যুদ্ধের ভয়াবহতার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ম্যান-হি লি এ অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন৷ তার মতে, ‘‘হৃদয় যুদ্ধ জয় করতে পারে৷’’
শক্ত সমর্থন
ইয়েমেনের আদেন এবং হুদায়দাহ শহরের মতো দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তায়েজেও প্রচুর অংশগ্রহণকারী যুদ্ধ থামানোর এ অনুষ্ঠানের সমর্থনে যোগ দেন৷ সৌদি আরব-ইয়েমেনের মধ্যে চলা সাম্প্রতিক যুদ্ধে ইতিমধ্যে ইয়েমেনের ৫ হাজার বেসামরিক লোক প্রাণ হারিয়েছেন৷ জাতিসংঘ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ইয়েমেন বিগত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয়ে পড়তে পারে৷
অনুষ্ঠানের আরেক সফলতা
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সৌলে ইয়েমেনের শিক্ষার্থীরা এই অনুষ্ঠানটি পালন করেছে৷
প্যারিসেও চলেছে অনুষ্ঠান
প্যারিসের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন ২৫ জন৷ সেখানকার আয়োজক ছিলেন খাদিজা আল সালামি৷ তিনি বলেন, ‘‘মুরাদের পাশে এ সময়ে দাঁড়ানোর খুব প্রয়োজন ছিল, বিশেষ করে ইয়েমেনের নাগরিকদের ওপর জোর করে এরকম একটি যুদ্ধ যখন চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের চারপাশের সব সু্ন্দর বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে৷’’
শান্তির বার্তা ছড়িয়ে পড়ছে
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মুরাদের এ উদ্যোগ নাগরিকদের উপর চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের কারণে তৈরি নানা সমস্যা, বিশেষ করে গুম, কলেরা এবং ড্রোন হামলা নিয়ে সচেতনতা তৈরিতে সাহায্য করছে৷ মুরাদ আশা করছেন, সামনের কয়েক মাসে তাঁদের প্রচারণা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে৷ সামনে ক্যানাডা, অ্যামেরিকা ও জিবুতিতে এ অনুষ্ঠান করার কথা রয়েছে বলে তিনি জানান৷