ইস্তাম্বুল কতটা ইউরোপীয়?
তুরস্কের ইস্তাম্বুলের একটি অংশ পড়েছে ইউরোপে, বাকিটা এশিয়ায়৷ কিন্তু আসলে ঠিক কতটা ইউরোপীয় এই শহর?
সবচেয়ে বিখ্যাত
দুটি মহাদেশের ছোঁয়া পাওয়া বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত শহর তুরস্কের ইস্তাম্বুল৷ সেখানে ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতা আর ধর্মনিরপেক্ষ লাইফস্টাইলের সঙ্গে ধর্মের যে সংঘাত সেটি বোধ হয় আর অন্য কোনো শহরে পাওয়া যাবে না৷ অনেকে মনে করেন, ঠিক এ কারণেই ইস্তাম্বুল এত আকর্ষণীয়৷
ইতিহাস
ইস্তাম্বুলের ইতিহাস ২,৬০০ বছরের পুরনো৷ পার্সিয়ান, গ্রিক, রোমান, অটোমান– সবাই বিভিন্ন সময়ে এই শহর নিয়ন্ত্রণ করেছে৷ ফলে তার নামও একেক সময় একেকরকম ছিল৷ এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত নাম বোধহয় কনসট্যান্টিনোপল৷ ১৯৩০ সালে শহরটির নাম হয় ইস্তাম্বুল৷
বসফরাস পাড়ি
ইস্তাম্বুলের ইউরোপ অংশের কারাকয় আর এশিয়ার কাদিকয়ের মধ্যে আছে বসফরাস প্রণালী৷ প্রতিদিন ফেরিতে করে হাজার হাজার মানুষ এক পার থেকে আরেক পারে যায়৷ সময় লাগে ২০ মিনিট৷
গালাতা সেতু
ইস্তাম্বুলের একটি বিখ্যাত সেতু৷ সেখানে দাঁড়িয়ে নৌকা চলাচল দেখা যায়৷ শহরের অনেকে সেখানে যান মাছ ধরতে৷ আর আছেন খুচরা বিক্রেতারা৷
নতুন মসজিদ
২০১৯ সালে শহরের বিখ্যাত তাকসিম চত্বরের কাছে নতুন একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়৷ সমালোচকরা বলছেন, এর মাধ্যমে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়্যেপ এর্দোয়ান চত্বরটিকে একটি নতুন পরিচয় দিতে চাইছেন৷ সেটি হচ্ছে, ধর্মনিরপেক্ষ ও ইউরোপীয় পরিচয়ের পরিবর্তে রক্ষণশীল ও নিউ-অটোমান পরিচয়৷
ধর্মপ্রাণদের এলাকা
ইস্তাম্বুলের ফাতিহ এলাকাটি ইউরোপীয় অংশ পড়েছে৷ তুলনামূলকভাবে যাঁরা বেশি রক্ষণশীল, তাঁরা সেখানে বাস করেন৷ অনেকে ফাতিহকে ‘ধর্মপ্রাণদের শহর’ বলে ডাকেন৷ তুর্কি প্রেসিডেন্টের একেপি দলের অনেক সমর্থক আছেন সেখানে৷
ছোট্ট সিরিয়া
সাম্প্রতিক সময় ফাতিহতে অনেক সিরীয় বসবাস শুরু হয়েছে৷ যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশ থেকে পালিয়ে অনেক সিরীয় নাগরিক ফাতিহতে আশ্রয় নিয়েছেন৷ তুরস্কের সরকার এই সিরীয়দের নাগরিকত্ব দেয়ার অঙ্গীকার করেছে৷ সমালোচকরা বলছেন, এটি ভোটার বাড়ানোর একটি উদ্যোগ মাত্র৷
নাইটলাইফ
রাতের বেলায় পার্টি কিংবা কিছু পানীয় পান করতে চাইলে যেতে হবে ইস্তাম্বুলের কাদিকয় এলাকায়৷ সেটি পড়েছে শহরের এশীয় অংশে৷
পরিবর্তন
শহরের গালাতা এলাকার একটি ডিজাইনার স্টোরে কাজ করেন আয়সেগুল সারাকোগলু৷ এলাকাটি পর্যটকদের প্রিয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম৷ তবে ইদানীং ইউরোপীয় পর্যটকদের সংখ্যা কমেছে বলে জানান তিনি৷ এখন শুধু আরব পর্যটকরা সেখানে যাচ্ছেন৷ তাঁর আশা, শিগগিরই এই অবস্থার পরিবর্তন হবে৷