ইলেক্ট্রনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নজর দিচ্ছে চীন
বিশ্বের আবর্জনা ফেলার স্তূপ হতে চায় না চীন৷ তাই বিদেশ থেকে বর্জ্য আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে৷ পাশাপাশি স্থানীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করা হচ্ছে৷
বিশ্বের সবচেয়ে বড়
চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় গুইয়ু শহর একসময় বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইলেক্ট্রনিক পণ্য রিসাইক্লিংয়ের জায়গা ছিল৷ পাঁচ হাজারের বেশি পরিবার-পরিচালিত কোম্পানি মনিটর থেকে শুরু করে মাদারবোর্ড– সবকিছুই রিসাইকেল করতো৷
খালি হাতে
এসব কোম্পানিতে নিয়োজিত গরিব শ্রমিকরা খালি হাতে ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি খুলতো, বাছাই করতো আর তারপর প্রক্রিয়াজাত করতো৷ অর্থাৎ নিরাপত্তার ব্যবস্থা খুব কমই ছিল৷
খাবার পানির অভাব
ইলেক্ট্রনিক পণ্য থেকে মূল্যবান ধাতু পৃথক করতে বিভিন্ন অংশ পোড়ানো হতো৷ এ কাজে ব্যবহার করা হতো বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান৷ এসব কারণে গুইয়ু শহরের বাতাস আর ভূগর্ভস্থ পানি দূষিত হয়ে উঠেছিল৷ ফলে সেখানে বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব দেখা দিয়েছিল৷
আধুনিক ব্যবস্থা
পরিবেশ বাঁচাতে ২০১৩ সালে রাজ্য সরকার শহরের পাশে একটি শিল্প পার্ক গড়ে তোলে৷ সেখানে বাতাস ও পানি পরিশোধনের আধুনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়৷
লাভ কম
গুইয়ু শহরের ব্যবসায়ীদের ঐ পার্কে একটি জায়গা ভাড়া নিতে বাধ্য করা হয়৷ এতে ব্যবসায়ীদের লাভের পরিমাণ কমে যায় ঠিকই, কিন্তু শহরের বাতাস নাটকীয়ভাবে বিশুদ্ধ হয়ে ওঠে৷ রাস্তাঘাটও আগের চেয়ে পরিষ্কার হয়েছে৷
বিদেশি বর্জ্য আমদানি বন্ধ
চলতি বছর চীন দেশের বাইরে থেকে ২৪ ধরণের ইলেক্ট্রনিক বর্জ্য আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে৷ ফলে ইউরোপ আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো বর্জ্য আর চীনে ঢুকতে পারছে না, অন্তত বৈধ উপায়ে নয়৷
অবৈধ পথ
স্থানীয় ইলেক্ট্রনিক বর্জ্যের চেয়ে দেশের বাইরের বর্জ্যের প্রতি বেশি ঝোঁক ব্যবসায়ীদের৷ কারণ, সেগুলো নাকি ভালো অবস্থায় থাকে৷ ফলে সেগুলো রিসাইকেল করা বেশি লাভজনক৷ তাই তো এখনও বিদেশ থেকে অবৈধ উপায়ে বর্জ্য আমদানির প্রতি অনেক ব্যবসায়ীর আগ্রহ দেখা যাচ্ছে৷
নতুন উদ্যোগ
চীনারা যেন এখন থেকে সঠিক উপায়ে ইলেক্ট্রনিক বর্জ্য সংরক্ষণ শুরু করেন সেজন্য বিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প শুরুর পরিকল্পনা করেছে চীন৷ সেটি বাস্তবায়িত হলে ব্যবসায়ীরা স্থানীয় বর্জ্য রিসাইক্লিং থেকেও লাভবান হতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷