1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইরানে আরো ১০ বিক্ষোভকারীর বিচার শুরু, বিচারের সমালোচনা খাতামির

২ আগস্ট ২০০৯

ইরানে ১২ জুনের বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পরবর্তী বিক্ষোভ-সহিংসতায় গ্রেপ্তার হওয়া ১০০ সংস্কারবাদী নেতার বিচারের সমালোচনা করেছেন দেশটির সাবেক মধ্যপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামি৷

https://p.dw.com/p/J22F
লোক দেখানো বিচারের সমালোচনা করলেন খাতামিছবি: picture alliance / landov

এদিকে, ইরানের অন্যতম শীর্ষ নেতার মুখে এমন সমালোচনা সত্ত্বেও রবিবার আবারও ১০ বিক্ষোভকারীর বিচার কাজ শুরু করেছে দেশটির সরকার৷

খাতামির সমালোচনা

রবিবার খাতামি তাঁর ওয়েবসাইটে একে ‘লোক দেখানো' বিচার আখ্যা দিয়ে কর্তৃপক্ষের এ পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছেন৷ খাতামি ডট আইআর ওয়েবসাইট-এ বলা হয়েছে, শনিবারের বিচার লোক দেখানো এবং স্বীকারোক্তি জোর করে আদায় করা হয়েছে৷ যাকে বিচার বলা হচ্ছে তা আসলে সংবিধানের লঙ্ঘন৷ এ ধরণের লোক দেখানো বিচার সরাসরি এ ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং জনগণের আস্থা নষ্ট করবে৷ এদিকে, বিগত নির্বাচনের অন্যতম প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মোহসিন রেজাই বিক্ষোভের সময় যারা দমননীতি অবলম্বন করেছিল তাদের যথাযথ বিচারের দাবি জানিয়েছেন৷ বিচার বিভাগীয় প্রধানের কাছে লেখা এক চিঠিতে রেজাই মূলত নিরাপত্তা কর্মীদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে তাদের বিচারের দাবি জানান৷

তথ্য উপদেষ্টার পদত্যাগ

এছাড়া বিতর্কিত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসা প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদের হাতকে আরো খানিকটা দুর্বল করল তাঁর তথ্য উপদেষ্টার পদত্যাগ৷ আলি আকবর জাভানফেকর তাঁর পদত্যাগের পর বলেন, প্রেসিডেন্ট তাঁর মন্ত্রিসভায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের কথা ভাবছেন৷ তাই তাঁর এই উদ্যোগকে সহজতর করতে এবং এই পদে আরো যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়ার সুযোগ করে দিতে পদত্যাগ করাটাই আমি নৈতিকভাবে ভালো মনে করেছি৷ একইসাথে তিনি জানিয়েছেন যে, তিনি মন্ত্রিসভায় নতুন কোন পদের জন্য নিজের নাম প্রস্তাব করেননি৷ বার্তা সংস্থা ফার্স জানিয়েছে, তথ্য উপদেষ্টা জাভানফেকর দুই সপ্তাহ আগেই পদত্যাগ করেছেন কিন্তু প্রেসিডেন্ট আহমেদিনেজাদ এতদিন তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি৷

আবতাহির দুঃখ প্রকাশ

Iran Demonstration Teheran 30.07.2009
গত সপ্তাহের নতুন বিক্ষোভের চিহ্নছবি: AP

প্রসঙ্গত, ১২ জুনের নির্বাচনের পর গণবিক্ষোভ উস্কে দেওয়া এবং সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টার অভিযোগে শনিবার ১০০ সংস্কারবাদী নেতার বিচার শুরু হয়েছে৷ নেতাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করার মধ্য দিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা বিরোধী তৎপরতা এবং ‘মখমল বিপ্লব' নামে পরিচিত বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে৷ এদিকে, ফার্স বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, শনিবারের বিচারের মুখোমুখি হওয়া সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আবতাহি নির্বাচন পরবর্তী বিক্ষোভে অংশগ্রহণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন৷ আবতাহির এই স্বীকারোক্তি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনেও দেখানো হয়েছে৷ তিনি বলেছেন, আমার বন্ধুদের আমি জানিয়ে দিতে চাই যে, নির্বাচনে কারচুপির যে অভিযোগ আনা হয়েছিল তা সম্পূর্ণ মিথ্যা৷ দেশে দাঙ্গা সৃষ্টির জন্য অজুহাত হিসেবে এই অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছিল৷

মুসাভির বিরুদ্ধে সাংসদদের অভিযোগ

অন্যদিকে, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় নেতৃত্ব দেয়ার জন্য বিরোধী নেতা মির হোসেইন মুসাভির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন ইরানের এক দল সাংসদ৷ অবশ্য এই অভিযোগকারী সাংসদদের সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি৷ তবে তাঁদের মুখপাত্র সংসদের বিচার বিভাগীয় কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ তাঘি রাহবার বলেছেন, আমরা কয়েক সপ্তাহ আগেই মুসাভির প্রগতিবাদী আন্দোলনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি৷ আমরা আশা করি যে, যতশীঘ্র সম্ভব ঐ আন্দোলনের সময় রক্তপাতের ঘটনার জন্য সংশ্লিষ্ট নেতাদের বিচার শুরু হবে৷ রাহবার বলেন, মুসাভি এবং প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট খাতামি রাজপথের ঐ সহিংসতার জন্য মূল অপরাধী৷

আহমেদিনেজাদের শপথ বুধবার

উল্লেখ্য, নির্বাচন পরবর্তী বিক্ষোভ ছিল ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ৷ নেতৃস্থানীয় মধ্যপন্থীরা প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদের পক্ষে ভোট ডাকাতির অভিযোগ করলেও ইরান কর্তৃপক্ষ তা নাকচ করে দিয়েছে এবং সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেই আহমাদিনেজাদের পুননির্বাচনকেই অনুমোদন করেছেন৷ আগামী বুধবার দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন আহমেদিনেজাদ৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন