1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইটিভির চেয়ারম্যান কারাগারে

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৬ জানুয়ারি ২০১৫

পর্নোগ্রাফি মামলায় আটকের পর বেসরকারি টিভি চ্যানেল একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) চেয়ারম্যান আবদুস সালামকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে৷ তবে এর সঙ্গে খালেদা-পুত্র তারেক রহমানের বক্তব্য সরাসরি সম্প্রচারের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/1EFXU
Bangladesch DW launches TV-Magazin Onneshon
ফাইল ফটোছবি: DW/R. Manzoor

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সোমবার রাত থেকে একুশে টেলিভিশন দেখা যাচ্ছে না৷ তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু অবশ্য জানিয়েছেন, ‘‘ইটিভির সম্প্রচার বন্ধ করা হয়নি৷ এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কোনো সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনাও নেই৷ কোনো পাড়ায়-মহল্লায় যদি ইটিভি দেখা না যায়, তবে তা খতিয়ে দেখা যেতে পারে৷''

কেবেল অপারেটররা জানিয়েছেন, ‘‘ইটিভির ডিস্ট্রিবিউশন ওপরের নির্দেশে বন্ধ আছে৷'' ইটিভি অবশ্য তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, ‘‘একুশে টেলিভিশনের সম্প্রচার পুরোপুরি চালু আছে৷ কেবেল অপারেটরদের ডাউন লিংক-এ বিঘ্ন ঘটায় কোথাও কোথাও ই-টিভি দেখতে সমস্যা হচ্ছে৷''

সম্প্রচার বিঘ্ন হওয়ার পরের দিন সোমবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকার কারওয়ান বাজারে একুশে টেলিভিশনের নীচ থেকে ড্রাইভারকে নামিয়ে দিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল চেয়ারম্যান আবদুস সালামকে আটক করে নিয়ে যায়৷ এরপর তাঁকে গত বছরের ২৬শে নভেম্বর ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়৷

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তাঁকে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে আদালতে হাজির করে পুলিশ৷ আবদুস সালামের পক্ষেও জামিনের আবেদন করা হয়৷ আদালত দু'টি আবেদনের ওপর ৮ই জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করে ইটিভির চেয়ারম্যানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়৷

আবদুস সালামকে যে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, সেই মামলার তিনি এজারভুক্ত আসামি নন৷ একুশে টেলিভিশনে প্রচারিত ‘একুশের চোখ' অনুষ্ঠানের একটি পর্বের বিরুদ্ধে দায়ের করা ঐ মামলায় উপস্থাপক ইলিয়াস হোসাইনসহ মোট আসামি তিনজন৷ তবে উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদুর রহমান দাবি করেন, ‘‘মামলাটির তদন্ত চলছে৷ তাই সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে এজাহারের বাইরেও অন্য কাউকে গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে আইনে কোনো বাধা নেই৷''

তিনি ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘একুশে টেলিভিশনে রবিবার গভীর রাতে লন্ডন থেকে তারেক রহমানের বক্তব্য সরাসরি সম্প্রচারের বিষয়টিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷ এই সম্প্রচারে ইটিভির চেয়ারম্যানের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে৷'' তবে কীভাবে এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেয়া যায়, তার বিস্তারিত বলতে তিনি রাজি হননি৷

আটকের পর আদালতে হাজিরার সময় ইটিভির চেয়ারম্যান আবদুস সালাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য সরাসরি সম্প্রচারের বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না৷ পরে জেনেছেন৷'' তিনি বলেন, ‘‘একুশে টেলিভিশনের বার্তা বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করে৷ আমি কোনো হস্তক্ষেপ করি না৷''

উল্লেখ্য, ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনের বছরপূর্তির আগের রাতে, অর্থাৎ গত রবিবার, রাত দেড়টা থেকে পরবর্তী ৫০ মিনিট একুশে টেলিভিশন লন্ডন থেকে তারেক রহমানের একটি অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্য সরাসরি সম্প্রচার করে৷ তারেক রহমান বিএনপি ঘোষিত ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবসে' নেতা-কর্মীদের সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত ঘরে না ফেরার আহ্বান জানিয়েছিলেন৷

সোমবার বিকেলে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া গুলশানের কার্যালয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমাদের কথা বলায় একুশে টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ এই সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করছে৷ মত প্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত করছে৷''

ঢাকার সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মো. ওমর ফারুক মঙ্গলবার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ইটিভির চেয়ারম্যান আবদুস সালামকে যদি কোনো সুনির্দিষ্ট মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়ে থাকে, তাহলে তাঁকে তা আইনগতভাবেই মোকাবেলা করতে হবে৷ কারণ সুনির্দিষ্ট মামলায় গ্রেপ্তারে আইনগত বাধা নেই৷ তবে মামলা সুনির্দিষ্ট না হলে আইনের ব্যাত্যয় হবে৷''

তিনি বলেন, ‘‘সরকার একুশে টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ করেছে বলে আমার জানা নেই৷ ইটিভিও বলছে তাদের সম্প্রচার বন্ধ হয়নি৷ তাই যারা সম্প্রচার বন্ধের কথা বলে গুজব ছড়াচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্য ভালো নয়৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান