ইউরোপে নিদারুণ গ্রীষ্ম
২০১৭ সাল গরমের রেকর্ড করতে চলেছে; বিশেষ করে দক্ষিণ ইউরোপ এই তাপপ্রবাহের প্রকোপে৷ অপরদিকে ইউরোপ জুড়ে আবহাওয়ার দুর্যোগ: দাবানল থেকে ঘূর্ণিঝড়...৷
‘শয়তান’
দক্ষিণ ইউরোপের মানুষ চলতি দাবদাহের নাম দিয়েছেন ‘লুসিফার’ – শয়তান৷ তাপমাত্রা চরমে উঠেছে৷ স্পেন থেকে শুরু করে পুবে বলকান অঞ্চল পর্যন্ত মাঠের ফসল মাঠেই শুকিয়ে গেছে; হ্রদের পানি নেমে গেছে; জঙ্গলে একের পর এক দাবানল (ছবিতে বুখারেস্ট, ৩রা আগস্ট)৷
সূর্যস্নান ছেড়ে ছায়ার খোঁজে
চলতি গরমে পর্যটকদের প্রিয় স্পেনের মায়োর্কা দ্বীপের এই অবস্থা৷ রাজধানী পালমার ক্যাথিড্রালের ছায়ায় মাথা বাঁচানোর চেষ্টা করছেন টুরিস্টরা৷ ইটালি, স্পেন ও রোমানিয়ার হাসপাতালে রোগীদের ভিড় লেগে গেছে: হিট স্ট্রোক হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন রেকর্ড সংখ্যক মানুষ৷
রাতেও নিষ্কৃতি নেই
সূর্য ডোবার পরেও তাপমাত্রা কমার বিশেষ লক্ষণ নেই৷ ছবিতে পালমার একটি রাস্তায় থার্মোমিটারে সন্ধ্যার পরেও তাপমাত্রা দেখাচ্ছে ৩৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড৷ সম্প্রতি কয়েক বছরে প্রতিবছর গরম বেড়েই চলেছে – দৃশ্যত ২০১৭ সাল আবার একটি নতুন রেকর্ড করবে৷
রোমান হলিডে
রোমে জলাভাব দেখা না দিলেও, ভ্যাটিকানে জলের ফোয়ারাগুলি জুলাই মাসেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ বাকি শহরে ফোয়ারা চালু আছে বলে বাঁচোয়া, কেননা গত সপ্তাহে রোমের কেন্দ্রীয় এলাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড ছাড়িয়ে যায় (ছবিতে রোম, ৩রা আগস্ট)৷
জন্তুজানোয়াররাও ঠান্ডা খুঁজছে
স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে জুন মাসে তাপমাত্রা যখন ৩৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে পৌঁছায়, তখন চিড়িয়াখানার বাসিন্দাদের নিশ্চয় ‘দেশের’ কথা মনে পড়েছে? যেমন এই গণ্ডারটি তার স্বভাবসিদ্ধ পদ্ধতিতে ঠান্ডা হবার চেষ্টা করছে৷
ছোটদের কাছে সবই মজা
দক্ষিণ ফ্রান্সের নিস শহরে কচিকাঁচারা ফোয়ারার মাঝখানেই তাদের খেলা চালাচ্ছে৷ ইউরোপের সব শহরেই এখন ফোয়ারাগুলো হল প্রধান আকর্ষণ৷ এছাড়া শহর থেকে বেরিয়ে সমুদ্রসৈকতে যাওয়ার রাস্তাগুলোয় – পক্ষান্তরে বিমানবন্দরে যাওয়ার রাস্তায় একটানা যানজট: সবাই গরমের হাত থেকে পালাতে চান কিনা!
অশনিসংকেত
জার্মানিতে এবার যতো না গরম, তার চেয়ে বেশি আবহাওয়ার দুর্যোগ৷ কালবৈশাখির মতো ঝড় উঠে, বিদ্যুৎ চমকে – তার পর প্রবল বৃষ্টিতে নদী-নালা ফাঁপিয়ে তুলে শহরের পথ ভাসিয়ে দেয়৷ এ ধরণের চরম আবহাওয়ার সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের সংযোগ আছে, বলে বিজ্ঞানীদের সন্দেহ (ছবিতে মিউনিখ, ২৬শে জুন)৷
দত্যিদানা!
শুধু বৃষ্টি হলে তো কথা ছিল; সঙ্গে থাকে ঝোড়ো হাওয়া, যা শত বছরের পুরনো মহিরুহকে উপড়ে ফেলার ক্ষমতা রাখে – যেমন হামবুর্গ শহরের এই চেস্টনাট বাদাম গাছটি৷
বানভাসি
শুধু বান তো নয়, অস্ট্রিয়ার মতো পর্বতসঙ্কুল দেশে ধস নামারও আশঙ্কা থাকে৷ আবার একে বন্যা বলা চলে না; কেননা পানি-মাটি-পাথর মিলিয়ে বান আসে হঠাৎ – পথঘাট ভাসিয়ে, ঘরবাড়ি তছনছ করে আবার উধাও হয়ে যায়৷ বাসিন্দারা গামবুট পরে পরিষ্কার করার কাজে লাগেন৷
অরণ্যে দাবানল
গ্রীষ্মে তাপমাত্রা চড়লে, পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে আর বাতাস জোরালো থাকলে জঙ্গলে একবার আগুন লাগলেই হলো – স্বল্পসময়ের মধ্যেই তা ছড়িয়ে পড়ে ও কাছের জনবসতিগুলোর জন্য বিপদ সৃষ্টি করে৷ ছবিতে দক্ষিণ ফ্রান্সের একটি সৈকতাবাসে টুরিস্টরা জলে নেমেছেন – পিছনে পাহাড়ের ঢালে আগুন জ্বলছে (২৬শে জুলাই তারিখের ছবি)৷
আগুন! আগুন!
ক্রোয়েশিয়া, ইটালি, পর্তুগাল ও স্পেনে আগুন লেগে বনজঙ্গল, বাড়িঘর, খামারবাড়ি পুড়ে গিয়েছে৷ এবারের গ্রীষ্মে জঙ্গলে আগুন ধরার ঘটনা নাকি অন্যান্য বছরের তুলনায় তিনগুণ – বলছেন বিশেষজ্ঞরা৷ জুন মাসে পর্তুগালে একটি মর্মান্তিক দাবানলে ৬৪ জন মানুষ প্রাণ হারান৷ (ছবিতে স্প্লিট, ১৭ই জুলাই)৷