আবার ইবোলার হানা
২০১৪-১৫ সালে পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলা ভাইরাসের সংক্রমণে হাজারো মানুষের মৃত্যু হয়েছিল৷ এ মাসের শুরুর দিকে কঙ্গোতে আবারো নতুন করে ইবোলার প্রাদুর্ভাব শনাক্ত করা হয়৷ প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা৷
অসুখ বনাম বিজ্ঞান
মধ্য আফ্রিকার উত্তরাংশে কঙ্গোর উপত্যকায় প্রবাহিত ইবোলা নদী থেকে ইবোলা ভাইরাসের নামকরণ করা হয়৷ সর্বপ্রথম ১৯৭৬ সালে এ ভাইরাসের অস্তিত্ব আবিষ্কৃত হয়৷ ১৯৭৬ সালের পর এ নিয়ে নবমবারের মতো ইবোলা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে কঙ্গোতে৷ ভীষণরকম ছোঁয়াচে এই ভাইরাস রুখতে শুরু হয়েছে বিজ্ঞানের অভিযান৷ কঙ্গোর গবেষণাগারে চলছে ইবোলা সংক্রান্ত নানা পরীক্ষা৷
রোগ মোকাবিলায় স্বাস্থ্যকর্মীরা
কঙ্গোতে ইবোলার প্রাদুর্ভাব ‘ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা’ স্পষ্ট৷ কারণ আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে৷ এর মধ্যেই রোগের মোকাবিলা করতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা৷ ছবিতে কঙ্গোর জনৈক ব্যক্তির শরীরে ক্লোরিন স্প্রে করছেন স্বাস্থ্যকর্মী৷
অন্যরকম স্বাগত জানাচ্ছে কঙ্গো
ইবোলা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ‘মহামারীর সময়ের’ মতো করে স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগ মোকাবিলার চেষ্টা চালিয়েছে যাচ্ছেন৷ এমনকি বিমানে করে যাঁরা কঙ্গোতে এসে নামছেন, তাঁদেরও স্বাস্থ্যকর্মীরা পরীক্ষা করে দেখছেন৷
নানারকম কর্মসূচি
কঙ্গোর শহরাঞ্চলেও বহু মানুষের শরীরে ইবোলা শনাক্ত করা হয়েছে৷ ইবোলার প্রাদুর্ভাব যাতে শহর এলাকায় ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য সর্বত্র ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হচ্ছে৷ ছবিতে বিকোরো হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যকর্মীরা ব্লিচিং পাউডার ছড়াচ্ছেন৷
ইবোলা রুখতে জোর
ইবোলাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে স্বাস্থ্যকর্মীরা৷ এমনকি বিমানবন্দরেও সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
জরুরি
ইবোলা আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহার প্রায় ৫০ শতাংশ৷ তাই কোনোভাবেই ইবোলা ভাইরাস আটকাতে দেরি করা যাবে না৷ সাধারণভাবে পরিচ্ছন্নতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয় যে কোনো সংক্রমণ ঠেকাতে৷ তাই কঙ্গোতেও ইবোলা রুখতে জরুরি পদক্ষেপ হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা৷
বিষাদ
কঙ্গোর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিকোরো শহর এবং ইবোকো নামের একটি গ্রামে নতুন করে দু’জন রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে, যাঁরা ইবোলায় আক্রান্ত৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন এই দু’জন নিয়ে মোট ৩১ জন ইবোলা আক্রান্ত রোগীকে সন্দেহের তালিকায় থাকা ৫২ জন রোগীর মধ্যে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে৷ ছবিতে কঙ্গোর একটি হাসপাতালের ব্যালকনিতে ইবোলা আক্রান্ত রোগীরা দাঁড়িয়ে৷
দরকার টিকা
কঙ্গো নদীর তীরের জনপদ, অর্থাৎ বন্দর নগরী বানডাকা থেকে রাজধানী কিনশাসায় বসবাসকারী প্রায় ১ কোটি মানুষ এ রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে৷ তাই চিকিৎসা বা সেবাকর্মীরা যাতে আক্রান্ত না হন, সে জন্য একটি পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনও চালু হয়েছে ইতিমধ্যে৷
আপৎকালীন পরিস্থিতি
আক্রান্ত রোগীর শরীর নিঃসৃত যে কোনো তরল পদার্থ থেকে মারাত্মক ছোঁয়াচে এই ইবোলা ভাইরাস ছড়াতে পারে৷ তাই কঙ্গোর সরকারকে এ মুহূর্তে রীতিমত যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মতো সজাগ থাকতে হচ্ছে, যাতে ইবোলা মহামারি না হয়ে দাঁড়ায়৷ ছবিতে উপযুক্ত সুরক্ষা নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা দেওয়ার আপৎকালীন কাজ করছেন৷
ইবোলা মোকাবিলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডাব্লিউএইচও জানিয়েছে, ইবোলা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কঙ্গোর পার্শ্ববর্তী ন’টি দেশের সঙ্গে কাজ করছে তারা৷ টিকাদানের জন্য কঙ্গোতে অস্থায়ী শিবিরও তৈরি হচ্ছে তাদের উদ্যোগে৷