আফ্রিকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন
আফ্রিকার অনেক দেশেই চলছে রাজনৈতিক অস্থিরতা৷ কোথাও কোথাও সেই অস্থিরতা যুদ্ধ, গৃহযুদ্ধ পর্যন্ত গড়িয়েছে৷ তাই সেসব দেশে শান্তি রক্ষা মিশন পাঠিয়েছে জাতিসংঘ৷ ছবিঘরে থাকছে আফ্রিকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীর উদ্যোগের কথা৷
কঙ্গোয় সবচেয়ে বড় মিশন
ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে শান্তি স্থাপনের জন্য জাতিসংঘ মিশন কাজ করে যাচ্ছে সেই ১২৯৯ সাল থেকে৷ ২০ হাজার সৈন্যের ওই মিশনের জন্য বার্ষিক বাজেট এক দশমিক চার বিলিয়ন ডলার৷ আফ্রিকায় জাতিসংঘের সবচেয়ে বড় এই শান্তিরক্ষা মিশনটি মোনুসো (এমওএনইউএসও) নামে পরিচিত৷
দারফুরে যৌথ মিশন
সুদানের দারফুর অঞ্চলে আফ্রিকান ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘের যৌথ শান্তিরক্ষা বাহিনী ইউএনএএমআইডি কাজ করছে৷ পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, মিশনটি এখনো পর্যন্ত ব্যর্থ৷ সফল হতে হলে রাজনৈতিক সমাধানের জন্য আরো জোর চেষ্টা চালানো দরকার বলেও মনে করেন তাঁরা৷
দক্ষিণ সুদানেও শান্তিরক্ষা মিশনের কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ
দক্ষিণ সুদানে ২০১৩ সাল থেকে গৃহযুদ্ধ চলছে৷ গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৪০ লাখ বেসামরিক নাগরিক ঘরছাড়া হয়েছেন৷ ২০১৬ সালের জুলাই মাসে রাজধানী যুবায় সরকারি সেনাবাহিনী এবং বিদ্রোহীদের মধ্যে শুরু হয়েছিল ব্যাপক সংঘাত৷ ‘ব্লু হেলমেট’ বাহিনী, অর্থাৎ জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশন তখন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে৷
সবচেয়ে বিপজ্জনক মিশন যেখানে
শান্তিরক্ষা মিশন সেখানে সরকার এবং বিদ্রোহীদের মধ্যে সন্ধি স্থাপনের চেষ্টা করছে৷ কিন্তু তথাকথিত জঙ্গি সংগঠন একিউআইএম-এর কারণে সেই উদ্যোগ সফল হচ্ছে না৷ জঙ্গি সংগঠনটি কিছুদিন পরপরই হামলা চালায়৷ মালির শান্তিরক্ষা মিশনে জার্মানিরও ৭০০ সৈন্য রয়েছে৷
শান্তিরক্ষা বাহিনীর বিরুদ্ধেই যৌন নিপীড়নের অভিযোগ
সেন্ট্রাল আফ্রিকা রিপাবলিকে শান্তিরক্ষা মিশনের সদস্যদের বিরুদ্ধেই উঠেছে ব্যাপক যৌন নিপীড়নের অভিযোগ৷ অভিযোগটি মূলত ফ্রান্সের সেনাসদস্যদের বিরুদ্ধে৷ তিন বছর হয়ে গেলেও যৌন নিপীড়নের শিকার শিশুরা কোনো ধরনের সহায়তা পায়নি৷
পশ্চিম সাহারায় শান্তির অপেক্ষা
পশ্চিম সাহারায় শান্তিরক্ষা মিশন আছে ১৯৯১ সাল থেকে৷ ১৯৭৬ সাল থেকে অঞ্চলটি মরক্কোর দখলে৷ ‘ফ্রেন্টে পলিসারিও’ বিদ্রোহীরা তাই স্বাধীনতার জন্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়ছে৷
আইভরি কোস্টে শান্তি
দীর্ঘ ১৪ বছর পর ২০১৬ সালের ৩০ জুন আইভরি কোস্টে শান্তি ফিরেছে৷ ধীরে ধীরে শান্তিরক্ষা মিশন থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করছে জাতিসংঘ৷ সৈন্য পুরোপুরি প্রত্যাহারের পরও শান্তি বজায় থাকে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়৷
লাইবেরিয়াতেও প্রতীক্ষার অবসান
লাইবেরিয়াতেও ১৪ বছর বছর পর শান্তি ফিরেছে৷ শান্তিরক্ষা মিশন ধীরে ধীরে ছোট হচ্ছে৷ আশা করা যায়, ২০১৭ সালের মধ্যেই সব বিদেশি সৈন্য লাইবেরিয়া ছাড়বে৷
সুদানে শান্তি আনবে ইথিওপিয়া?
তেলসমৃদ্ধ আবেয়ি অঞ্চলে টহল দিচ্ছে ইউএনআইএসএফএ-র সৈন্যরা৷ সুদান এবং দক্ষিণ সুদান দুই দেশেরই দাবি এই অঞ্চলটি তাদের৷ সংঘাত এড়াতে তাই মোতায়েন করা হয়েছে ইথিওপিয়ার চার হাজারেরও বেশি সেনা সদস্য৷
সোমালিয়া: ভবিষ্যৎ দৃষ্টান্ত?
সোমালিয়ায় আফ্রিকান ইউনিয়নের নেতৃত্বে লড়ছে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনী৷ সেখানকার শান্তিরক্ষা বাহিনীর সংক্ষিপ্ত নাম এএমআইএসওএম৷ জঙ্গি গোষ্ঠী আল শাবাবের বিরুদ্ধে লড়ছে তারা৷ ইথিওপিয়া, বুরুন্ডি, জিবুতি, কেনিয়া, উগান্ডা, সিয়েরা লিয়ন, ঘানা এবং নাইজেরিয়ার সৈন্যও আছে এই বাহিনীতে৷