1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আপনি কি স্মার্টফোন আসক্ত?

মার্টিন রিবে/এআই৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪

স্মার্টফোন ব্যবহার কি আজকাল আসক্তির পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে? জার্মান বিজ্ঞানীরা কিন্তু তেমনটাই ভাবতে শুরু করেছেন৷ বিষয়টি নিয়ে তাই শুরু হয়েছে গবেষণা৷ আর এই গবেষণায় সহায়তা করছে একটি অ্যাপ৷

https://p.dw.com/p/1D7UQ
ছবি: Syda Productions - Fotolia.com

গবেষণার সাহায্যে অ্যাপ

মানুষের অপরিহার্য সঙ্গী হয়ে উঠছে স্মার্টফোন৷ সবসময় সবার সঙ্গে যোগাযোগের পথ খোলা রাখতে চান তাঁরা৷ একইসঙ্গে ফেসবুক দেখা, ই-মেল চেক কিংবা গেম খেলার মতো ব্যাপারতো রয়েছেই৷ এজন্য অনেকে প্রতিদিন গড়ে ১৩০ বার ফোন চালু করেন৷ অনেকটা মোবাইল আসক্তির ব্যাপার৷

বন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ‘মেন্থল' নামের একটি স্মার্টফোন অ্যাপ প্রকাশ করেছেন৷ এই অ্যাপ একজন মানুষের স্মার্টফোন ব্যবহারের হিসেব রাখে৷ কতবার ফোন আনলক করা হয়েছে, কোন কোন অ্যাপস কতক্ষণ ব্যবহার হয়েছে এমন সব তথ্য৷ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা যেন আসক্ত হয়ে না পড়েন সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা এটা৷

বন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানী অধ্যাপক আলেক্সান্ডার মার্কোভেৎস এই বিষয়ে বলেন, ‘‘অ্যাপটি স্মার্টফোন ব্যবহারের নানা তথ্য সংগ্রহ করে৷ কখন ফোনটি খোলা হয়েছে, কোন অ্যাপ কখন চালু করা হয়েছে – এসব তথ্য সেটি আমাদের সার্ভারে পাঠায়৷ আমরা এগুলো পর্যালোচনা করি৷ কোন অ্যাপ কতবার ব্যবহার হয়েছে তাও জানা যায়৷ ফোন ব্যবহারকারীকেও এসব তথ্য জানানো হয়৷''

অ্যাপ জানাচ্ছে আসক্তির কথা

প্রায় এক লাখের বেশি মানুষ অ্যাপটি ডাউনলোড করেছেন৷ তারা একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণারও অংশ হয়ে গেছেন৷ স্মার্টফোন আসলে কোন কাজে লাগে, তা অ্যাপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে বোঝার চেষ্টা করেন বিজ্ঞানীরা৷

অধ্যাপক মার্কোভেৎস এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘দিনে তিন ঘণ্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করা হয়৷ আরো লক্ষ্যণীয় হচ্ছে, ফোনের সঙ্গে ব্যবহারকারীর গড় ‘ইন্টাব়্যাকশন' হয় ১৩০ বার৷ অর্থাৎ প্রতি সাড়ে সাত মিনিটে একবার ফোনের বোতামে হাত রাখেন একজন ব্যবহারকারী৷''

স্মার্টফোনের এমন ব্যবহার কর্মক্ষেত্রের জন্যও ক্ষতিকর৷ বিশেষ করে এর ফলে মানুষের মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে৷ যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে ‘স্মার্টফোন আসক্তি' বলে এখনো কিছু নেই৷ তবুও গবেষকরা, এভাবে স্মার্টফোন ব্যবহারকে একধরনের আসক্তি হিসেবেই বিবেচনা করছেন৷

বন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী ড. ক্রিস্টিন মোনটাগ বলেন, ‘‘আসলে স্মার্টফোন ব্যবহারের প্রবণতায় আসক্তির একটি ব্যাপার লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ সহনশীলতার মাত্রা বাড়ছে৷ সন্তুষ্টির সঙ্গে সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে ফোন ব্যবহারের পরিমাণও বাড়ছে৷ নতুন আইফোন ভালো লাগায় আজ হয়ত এক ঘণ্টা ব্যবহার করা হলো, কিন্তু কাল সেটা বেড়ে দু'ঘণ্টা কিংবা তিন ঘণ্টা হয়ে যায়৷ এক পর্যায়ে ফোন ছাড়া থাকাটা আতঙ্কের মনে হয়৷''

তিনি বলেন, হয়ত কেউ বাড়িতে ভুল করে ফোন রেখে বাইরে গেল৷ কিন্তু ফোনের কথা মনে আসায় আবার ফিরে আসলো ফোনটি নিতে৷ কেননা ফোন ছাড়া নিজেকে গোটা দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন মনে করেন তাঁরা৷ মনে হয়, হায় খোদা, বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবো না, ফেসবুক আপডেট দেখতে পারবো না৷''

আসক্তির সঙ্গে জিনের সম্পর্ক

যে-কোনো ধরনের আসক্তির সঙ্গে জিনের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা তা পরীক্ষা করেন গবেষকরা৷ কোষ গবেষণার মাধ্যমে তাঁরা বোঝার চেষ্টা করেন ঠিক কোন ধরনের জিনের সঙ্গে আসক্তির সম্পর্ক রয়েছে৷ ড. মোনটাগ বলেন, ‘‘আমরা গবেষণায় এক ধরনের জিন পেয়েছি যেটি ধূমপানের সঙ্গে সম্পর্কিত, সেটির সঙ্গে ইন্টারনেট আসক্তিরও সম্পর্ক রয়েছে৷ এভাবে আমরা বিভিন্ন আসক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত জিন নিয়ে গবেষণা করতে পারছি৷''

গবেষকরা ধারণা করছেন, ভবিষ্যতে সম্ভবত স্মার্টফোন আসক্তিকেও স্বীকৃতি দেয়া হবে এবং এই আসক্তি দূর করার চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকবে৷ মাত্রাতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার মস্তিষ্কের জন্যও ক্ষতিকর৷

আসক্তি দূরের উপায়

‘মোবাইল আসক্তি' থেকে দূরে থাকতে অধ্যাপক মার্কোভেৎসের এই ডিজিটাল ডায়েটটি অনুসরণ করা যেতে পারে৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রথম কথা হচ্ছে, সোফায় শুয়ে ক্লিক করার দরকার নেই৷ আমি শুধু নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় ফোন ব্যবহার করি৷ অথবা আমি আমার ব্যবহার সংযত করি৷ যেমন সন্ধ্যা সাতটার পর কোনো কিছু নয়৷ সপ্তাহে একদিন কিছু করবো না৷

তিনি বলেন, ‘‘আরেকটি পরামর্শ সবার জন্য: দয়া করে একটি হাতঘড়ি কিনুন৷ কেননা সময় দেখতে গিয়ে অনেকে স্মার্টফোন চালু করেন এবং এরপর অন্যদিকে যান৷ আমি যদি এমন অ্যাপের ব্যবহার কমাতে পারি তাহলে সেটা সহায়ক হবে৷''

‘মেন্থল' অ্যাপ ব্যবহার করে আপনিও আপনার ফোন ব্যবহারের প্রবণতা যাচাই করতে পারেন৷ উদ্বেগজনক পর্যায়ে গেলে সতর্ক হোন৷

বিশেষ ঘোষণা: এই সপ্তাহের অন্বেষণ কুইজে অংশ নিতে ক্লিক করুন এখানে

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য