1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আকাশেও যানজট

১৯ অক্টোবর ২০১৫

বিমানযাত্রা আজ আর হাতে গোনা কিছু মানুষের একচেটিয়া সুবিধা নেই, সাধারণ মানুষও এই দ্রুতগামী পরিবহণের উপকার ভোগ করছে৷ কিন্তু আকাশের ভিড় সামলাতে ও বিমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নেপথ্যে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের কথা ক'জন জানেন?

https://p.dw.com/p/1GqFf
Boeing 777 der Cathay Pacific Airways
ছবি: Imago/R. Wölk

ফ্রাংকফুর্টের আকাশে চরম ব্যস্ততা৷ প্রতি মিনিটে একটি করে বিমান উঠছে বা নামছে৷ অর্থাৎ দিনে প্রায় ১,৫০০ বিমান৷ এই সংখ্যা বেড়েই চলেছে৷ সংক্ষিপ্ত রেডিও বার্তার জন্য হাতে খুব কম সময় থাকে৷ এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার ও পাইলটদের মধ্যে যথেষ্ট বোঝাপড়া থাকে বটে, তবে সব সময়ে তাঁদের চূড়ান্ত চাপের মধ্যে কাজ করতে হয়৷ বিমান চলাচল নিরাপদ রাখতে সবকিছু নিখুঁত হতে হবে কিনা!

ছোট বিমান চালিয়ে জার্মানির সবচেয়ে বড় বিমানবন্দরে পৌঁছানো সত্যি এক অ্যাডভেঞ্চার৷ কিন্তু আর্নিম স্টিফ নিরুপায়৷ তাঁর পেশাই হলো অ্যামেরিকায় তৈরি সিঙ্গল ইঞ্জিন বিমান চালিয়ে জার্মানিতে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া৷

আর্নিম এক দক্ষ পাইলট, যিনি বিমানের খোলনলচে সম্পর্কে অভিজ্ঞ৷ কিন্তু তিনিও রাইন-মাইন এলাকার আকাশের পরিস্থিতি খাটো করে দেখেন না৷ আর্নিম বলেন, ‘‘বিমানটিকে ট্রাফিকের গড্ডালিকা প্রবাহে ভাসিয়ে দিতে হবে এবং যে কোনো মূল্যে ভুল এড়িয়ে চলতে হবে৷ রেডিও টাওয়ারে গিয়ে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের প্রক্রিয়া দেখলে সেটা বুঝতে পারবেন৷ সেখানে সবকিছু অত্যন্ত দ্রুত ঘটে৷ ভুল করলে সহজে ক্ষমা করা হয় না৷''

Airbus A320 Cockpit Simulator
এয়ারবাস এ৩২০-র ককপিট...ছবি: picture-alliance/dpa/Jason Calston/Airbus

আর শুধু কাজের খাতিরে মেঘের উপর উড়ে বেড়ানো নয়৷ আর্নিম স্টিফ এক সিঙ্গল ইঞ্জিন সিরাস বিমান নিয়ে ৮০ দিনে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করেছেন৷ আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে অভিজ্ঞ এই প্রশিক্ষকের জন্য এটা খুব বড় চ্যালেঞ্জ ছিল না৷ আজ অবশ্য তাঁকে বিমানবন্দর থেকে ১০ মাইল দূরে লাঙেন শহরে জার্মান বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সদর দপ্তরে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে৷

ফ্রাংকফুর্ট বিমানবন্দরে বিমানের ওঠা-নামা এখান থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হয়৷ কন্ট্রোলাররা নির্ধারিত আকাশসীমার মধ্যে সব বিমানের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করেন এবং পাইলটদের উচ্চতা সংক্রান্ত নির্দেশ দেন৷ তাঁরা সবাই ইংরিজি বলেন, যদিও তার মধ্যে কিছু অদ্ভুত বিষয় রয়েছে৷ এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার ডানিয়েল ম্যুলার বলেন, ‘‘যারা এই ক্ষেত্রে কাজ করে না, তাদের কাছে আমাদের ইংরিজি একটু অদ্ভুত মনে হতে পারে৷ আমাদের সহজ কিছু বাক্য রয়েছে, যা বিভিন্ন দেশের মানুষের কাছে আমাদের রেডিও বার্তা বোধগম্য করে তোলে৷ ভাষার উপর তাদের সবার দখল সমান নয়৷ আমরা যেমন ‘থ্রি'-র বদলে ‘ট্রি' বলি, কারণ তা রেডিওর জন্য উপযুক্ত৷ ‘নাইন'-এর বদলে ‘নাইনার' বলি, যাতে জার্মান ভাষার ‘নাইন' অর্থাৎ ‘না' শব্দটির সঙ্গে তা গুলিয়ে না যায়৷''

প্রত্যেক কন্ট্রোলারকে যে কোনো সময় ১২টি পর্যন্ত বিমানের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করতে হয়৷ পাইলট ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার সবসময়ে পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রাখেন৷ এক্ষেত্রে দু'টি মানুষকে পরস্পরের উপর নির্ভর করতে হয়, যদিও তারা কখনো একে অপরের মুখোমুখি হবেন না৷ আর্নিম স্টিফ বলেন, ‘‘কেউ একজন ফ্রাংকফুর্ট বিমানবন্দরের উপর ব্যস্ত আকাশে পথ দেখাচ্ছেন, এটা ভাবলে অত্যন্ত নিশ্চিত লাগে৷''

বড় বড় বিমান সংস্থার জেট বিমানের ফাঁক দিয়ে গলে নিরাপদে ফ্রাংকফুর্ট বিমানবন্দরে নিরাপদে অবতরণের ক্ষেত্রে কন্ট্রোলাররা প্রতিবার আর্নিম স্টিফ-কে সহায়তা করেছেন৷ কিন্তু আকাশে ‘রাশ আওয়ার'-এর ভিড়ে অনেক অভিজ্ঞ পাইলটেরও ঘাম ছুটে যায়৷

বিমানবন্দরে ল্যান্ডিং প্যাড-এ এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা নিজেদের হাতে নিয়ন্ত্রণ তুলে নেন৷ পরের বিমানের জন্য জায়গা করে দিতে টারম্যাক দ্রুত খালি করতে হয়৷ আর্নিম স্টিফ-এর বিমানের পেছনে অন্য বিমানের লাইন লেগে গেছে৷ কন্ট্রোলাররা তাঁকে ভিড়ের মধ্যে পথ দেখিয়ে নিয়ে আসেন৷ এবার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার পালা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান