1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অস্কার মৃত্যুর গন্ধ পায়

২ ফেব্রুয়ারি ২০১০

অস্কার বলতে একটি পাঁচ বছরের হুলো বেড়াল৷ থাকে মার্কিন মুলুকে একটি নার্সিং হোমে৷ মরণাপন্ন রোগীদের বিছানায় গিয়ে শোয়া তার অভ্যাস৷ অস্কার কি মৃত্যুদূত?

https://p.dw.com/p/Lp6F
কালো বেড়াল কি ভাবে কে জানেছবি: OP

অস্কারের কাহিনীর শুরু একটি ফেলে রাখা, কুড়িয়ে পাওয়া জন্তু-জানোয়ারদের জন্য সৃষ্ট ‘পশু আশ্রমে'৷ সেখান থেকে নিয়ে এসে তাকে রাখা হয় রোড আইল্যান্ডের প্রভিডেন্সে, স্টিয়ার হাউস নার্সিং এ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে৷ এই নার্সিং হোম এবং পুনর্বাসন কেন্দ্রটিতে ডিমেনশিয়া, অর্থাৎ বার্ধক্যজনিত মতিভ্রমের পেশেন্টদের রাখা হয়, বিশেষ করে যাদের অবস্থা অতি খারাপের দিকে গেছে৷ এই ধরণের রোগীদের জন্য কোনো বেড়াল, কি কুকুর, কি অন্য ধরণের পোষা জীবকে থেরাপি হিসেবে ব্যবহার করা হয়৷ সেই ধরণের চিকিৎসার বেড়াল অস্কার৷

ও কার পদক্ষেপ?

অস্কার যখন মাস ছয়েকের, তখন ডাক্তার ডেভিড ডোসা এবং নার্সরা খেয়াল করেন যে, অস্কার নিজের খেয়ালে যে সব পেশেন্টদের বিছানায় গিয়ে গোল হয়ে ঘুমোয়, তাদের সকলেই মরণাপন্ন - অর্থাৎ তার কিছুকাল পরেই সেই রোগীদের মারা যেতে দেখা যায়৷ এটা কার্য-কারণ সম্পর্ক নিশ্চয় নয়, কিন্তু অস্কার যে কোনো একভাবে বুঝতে পারে, কার অন্তিম মূহুর্ত নিকটে, সে-বিষয়ে ডক্টর ডোসা এবং নার্সদের আজ সন্দেহ নেই৷ কেননা অস্কার এযাবৎ ৫০ জন রোগীর ক্ষেত্রে প্রমাণ করে দিয়েছে যে, সে মৃত্যুর পদক্ষেপ শুনতে পায়৷ অথবা তার গন্ধ পায়৷

সান্ত্বনার দূত

ডক্টর ডোসা অস্কারের কাহিনী প্রথম বিধৃত করেন ২০০৭ সালে, নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে৷ অস্কারের ভূতুড়ে খ্যাতির সূচনা সেখানেই৷ এবং সেই কারণেই হয়তো ডক্টর ডোসাকে এবার একটা আস্ত বই লিখতে হয়েছে, ‘‘মেকিং রাউন্ডস উইথ অস্কার: দ্য একস্ট্রাঅর্ডিনারি গিফট অফ এ্যান অর্ডিনারি ক্যাট'' - ‘অস্কারের সাথে রোগী দেখা: একটি সাধারণ মার্জারের অসাধারণ ক্ষমতা'৷ তিনি চান, অস্কার যে শুধু মরণাপন্ন রোগীদেরই নয়, তাদের আত্মীয়স্বজনকেও আশ্বস্ত করে, সান্ত্বনা দেয়, লোকে সেটা বুঝুক৷ কেননা সেটাই তো অস্কারের ‘অসাধারণ' ক্ষমতা৷

বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই

অপরদিকে ডক্টর ডোসা একটি কাহিনী শুনিয়েছেন: নার্সদের কেউ একজন নাকি একবার নিশ্চিত ছিল যে, কোনো এক পেশেন্টের শেষ সময় উপস্থিত হয়েছে৷ কিন্তু অস্কার সেই মরণাপন্নের বিছানায় বসতে রাজি হয়নি, বরং ঐ হলঘরেই একটু দূরে অন্য এক পেশেন্টের বিছানায় গিয়ে উঠেছে৷ এবং অস্কারের বোধ ভ্রান্ত হতে পারে না, তাই সেই পেশেন্টই আগে মারা যান৷ - ডক্টর ডোসা বলছেন, অস্কারের ক্ষমতার কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই, যদিও অস্কার হয়তো এমন কোনো ফেরোমোন বা গন্ধের আভাস পায়, যা মানুষের কাছে এখনও অজ্ঞাত৷ যেমন কুকুররা ক্যানসার শুঁকে বার করতে পারে, অথবা মাছেরা আসন্ন ভূমিকম্প আঁচ করতে পারে৷

ওদিকে অস্কারকে জিজ্ঞাসা করার উপায় নেই: সে তার স্বভাব মতো জানলায় বসে রাস্তা দেখছে৷

প্রতিবেদক: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম