অলিম্পিক আয়োজনে অনীহা বাড়ছে
১২ অক্টোবর ২০১৪প্রথমে সুইডেনের স্টকহোম, তারপর একে একে ইউক্রেনের লভিভ, পোল্যান্ডের ক্রাকভ এবং সবশেষে নরওয়ের অসলো শহর৷ ২০২২ সালের শীতকালীন অলিম্পিক আয়োজনের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েও পিছিয়ে এলো এই চারটি শহর৷ থেকে গেল শুধু কাজাকস্তানের আলমাটি ও চীনের বেইজিং শহর৷
বলা বাহুল্য, এমন পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির জন্য অত্যন্ত অস্বস্তিকর৷ আইওসি নরওয়ের এই তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে৷ তাদের মতে, সে দেশের রাজনীতিকরা অর্ধসত্য ও ভুল তথ্যের ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে থেকেই নরওয়ের সংবাদমাধ্যমে আইওসি-র চুক্তির পূর্বশর্ত সম্পর্কে অনেক চর্চা চলছিল৷ যেমন দাবি করা হচ্ছিল, যে হোটেলের ঘরের তাপমাত্রা থেকে শুরু করে অলিম্পিক কর্মীদের মুখের হাসি – সবই নাকি স্থির করে দেওয়া আছে৷ ককটেল প্রোটোকল, হোটেল বার ভর্তি মদ, দেশের রাজার সঙ্গে দেখা করার সুযোগের মতো শর্তও নাকি চাপানো হবে নরওয়ের উপর৷
এমন সব প্রতিবেদন পড়ে দেশের জনমতও অলিম্পিক আয়োজনের বিরুদ্ধে যেতে শুরু করে৷ ফলে সরকারকেও নড়েচড়ে বসতে হয়৷ সম্ভবত এত বিরোধিতার মুখেই অলিম্পিক আয়োজনের প্রচেষ্টা ছেড়ে দেয় নরওয়ের সরকার৷
আইওসি এখন আত্মপক্ষ সমর্থনে বলছে, সব বিষয় মোটেই শর্ত হিসেবে চাপানোর কথা বলা হয়নি৷ এর মধ্যে অনেকগুলিই ছিল শুধু পরামর্শ৷ অতীতে যে সব শহর অলিম্পিক আয়োজন করেছে, তাদের কিছু পদক্ষেপেরও তালিকা রয়েছে৷ নরওয়েজিয়ান অলিম্পিক কমিটির মহাসচিব ইঙে আন্ডারসেন রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন৷ তিনি বলেন, এই প্রথম আইওসি ম্যানুয়াল প্রকাশ্যে পেশ করা হয়েছে৷ ইউরোপ, অ্যামেরিকা বা ক্যানাডার মতো দেশ যাতে সেটা বুঝতে পারে, আইওসি-কে তা নিশ্চিত করতে হবে বলেও তিনি মনে করেন৷ সোশাল মিডিয়ার এই যুগে স্বচ্ছতা অত্যন্ত জরুরি, বলেন আন্ডারসেন৷
আন্ডারসেন এ প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দেন, অলিম্পিক আয়োজনের ক্ষেত্রে ব্যয়ভারও একটা বড় বিষয়৷ ২০১৪ সালে রাশিয়ার সোচি-তে শীতকালীন অলিম্পিকে প্রায় ৫,০০০ কোটি ডলারের ব্যয়ভার দেখে অনেকেই শঙ্কিত হয়ে পড়েছে৷ তবে সোচি-কে যেভাবে প্রায় নতুন করে গড়ে তুলতে হয়েছিলো, অন্যান্য শহরের ক্ষেত্রে এমন বাড়তি ব্যয়ভারের আশঙ্কা নেই বলে তিনি মনে করেন৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স)