1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শ্রীলংকার বাটিক শিল্পে মন্দা

রিয়াজুল ইসলাম৮ নভেম্বর ২০০৮

বিশ্ব অর্থ বাজারের যে মন্দাভাব চলছে তার প্রভাব পড়েছে গোটা বিশ্বে৷ তেমনি এর ধাক্কা এসে লেগেছে শ্রীলংকার বিখ্যাত পোষাক শিল্প বাটিকের ওপর৷

https://p.dw.com/p/FpxH
ছবি: AP

আর্থিক মন্দার পাশাপাশি নিরাপত্তাহীনতার কারণে কারুকার্যময় বাটিক শিল্পও এখন সেদেশ থেকে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে৷

প্রাকৃতিক দৃশ্যের অন্যতম লীলাভুমি শ্রীলংকা৷ সে দৃশ্যের টানে প্রতিবছর সেখানে যান লাখ লাখ পর্যটক৷ কিন্তু কেবল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই নয় পোষাক তৈরীতেও খ্যাতি রয়েছে শ্রীলংকার৷ যেমনটি সেদেশের বাটিক কাপড়৷ এর অতলান্তিক নীল, গাঢ় লাল রংয়ের মনোমুগ্ধকর সব ডিজাইন আকৃষ্ট করে আসছে মানুষকে৷ বাটিক কাপড় তৈরী করা হয় কাপড়ের ওপর মোমের ডিজাইন দিয়ে৷ মোম গলিয়ে কাপড়ের নানা জায়গায় আকা হয় চমত্কার সব ডিজাইন৷ এরপর পুরো কাপড়টিকে ভেজানো হয় রংএর মধ্যে৷ কিন্তু কাপড়ের যেসব জায়গায় মোম থাকে সেসব জায়গাতে রং ছুতে পারে না৷ এভাবেই তৈরী হয় নানা ডিজাইনের রংবেরং এর বাটিক৷

বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনারদের চোখে বাটিকের সৌন্দর্যটি ধরা পড়ার এর আগমন ঘটে আন্তর্জাতিক ফ্যাশন জগতে৷ বিখ্যাত সব ফ্যাশন শোতে নামকরা মডেলদের পরণে শোভা পায় শ্রীলংকার এই বিখ্যাত শিল্পটি৷ এর টানে অনেকেই ছুটে যান শ্রীলংকাতে৷ ফলে পর্যটন শিল্পের পাশাপাশি বাটিক কাপড়ও একসময় হয়ে ওঠে শ্রীলংকার অন্যতম আকর্ষন৷ কিন্তু গত বেশ কিছু দিন ধরে এই বাটিক শিল্প হারিয়ে ফেলছে তার জৌলুস৷ বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দা তার ওপর তামিলদের সঙ্গে গৃহযুদ্ধ এসব কারণে এ শিল্পের এখন করুণ দশা৷ এছাড়া বাজারজাত করণের ক্ষেত্রে যথাযথ পরিকল্পনার অভাবে এ শিল্পটি এখন মার খেয়ে যাচ্ছে৷ অনেক ব্যবসায়ী অল্প খরচের মধ্য দিয়েই নিম্ন মানের বাটিক তৈরীর চেষ্টা করে যাচ্ছে৷ ফলে আসল বাটিক উন্মুক্ত বাজার প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে পারছে না৷ বাটিক ডিজাইনার লাকি সেনানায়েকে বলেন, সৃষ্টিশীল ডিজাইন থেকে বাটিকের ডিজাইন এখন প্রাকৃতিক নানা গতানুগতিক বিষয়ের দিকে যাচ্ছে৷ যেমন সমুদ্র তীরের পাম গাছ, কিংবা পুরনো দিনের নানা চিত্র৷ বাটিকের নানা উপাদান যেমন লিনেন, কাপড় ইত্যাদি এখন পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য কম দামে তৈরী হচ্ছে৷ ফলে অভিজাত বাটিক এখন পরিনত হচ্ছে সস্তা স্যুভেনিরে৷

এছাড়া আসল বাটিক তৈরীতেও সময় লাগে অনেক৷ ৪১ বছর বয়স্ক বাটিক শিল্পী ইন্দিরা পদ্মিনী বললেন, এটা খুবই জটিল একটি শিল্প এবং সময়ও লাগে অনেক বেশী৷ যেমন বাটিক ডিজাইনের একটি শাড়ি তৈরীতেই দশ দিন লেগে যায়৷

এসব কারণ ছাড়াও তামিল টাইগারদের সঙ্গে অব্যাহত গৃহযুদ্ধও বাটিক শিল্পের দুরবস্থার জন্য দায়ী৷ গত কয়েক বছরের গৃহযুদ্ধের কারণে শ্রীলংকায় পর্যটক আগমন কমে গেছে অনেক৷ স্থানীয় কুটির শিল্প পরিষদের চেয়ারম্যান বুদ্ধি কিরথিসেনা বলেন, আশির দশকে এ শিল্পে কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা ছিলো কমপক্ষে দশ হাজার৷ গত কয়েক বছরে পর্যটন শিল্পে ধ্বস নামায় এখন এ সংখ্যা দাড়িয়েছে মাত্র তিন হাজারে৷ তিনি আশা করছেন ফ্যাশন ডিজাইনাররা আবার এ শিল্পকে জাগিয়ে তুলবে৷