1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভুল ছবি প্রকাশ যেভাবে রোখা যেত

৫ জুন ২০১৭

রাঙামাটির লংগদুতে এক যুবলীগ নেতার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঘটেছে তাণ্ডব৷ আদিবাসীদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, হয়েছে ভাঙচুর৷ কিন্তু এই খবর প্রকাশ করতে গিয়ে গণমাধ্যমের একাংশ করেছে এক বড় ভুল৷

https://p.dw.com/p/2e96r
ছবি: picture-alliance/maxppp/P. Proust

অগ্নিকাণ্ডের খবরের সঙ্গে ছবি দিতে পারলে খবরটির গুরুত্ব যে বেড়ে যায় তা অস্বীকারের কোনো উপায় নেই৷ আর মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলো স্বাভাবিকভাবেই চাইবে বড় খবরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছবি প্রকাশ করতে৷ লংগদু'র ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে৷ আদিবাসীদের উপর আক্রমণের খবর বড় করে প্রকাশ করা হয়েছে, সঙ্গে প্রকাশ করা হয়েছে আগুন লাগা একটি স্থানের ছবি৷

রিপোর্ট এবং ছবি দু'টো একসঙ্গে দেখলে মনে হবে পরিস্থিতি ভয়াবহ৷ আগুনে পুড়ে যাচ্ছে সবকিছু৷ পরিস্থিতি সত্যিই হয়ত ভয়াবহ সেখানে৷ কিন্তু সেই ভয়াবহতা ফুটিয়ে তুলতে গিয়ে দৈনিক প্রথম আলো (ইংরেজি সংস্করণ), ইত্তেফাক, সমকাল, যুগান্তরসহ কয়েকটি মূলধারার প্রতিষ্ঠিত পত্রিকা প্রকাশ করেছে পুরনো একটি ছবি, যেটির সঙ্গে লংগদুর ঘটনার কোনো সম্পর্কই নেই৷ প্রশ্ন হচ্ছে, পত্রিকাগুলো এমন ভুল কিভাবে করলো?

আসলে, আলোচিত ছবিটি শুক্রবার ফেসবুকে লংগদুর ছবি হিসেবেই ঘোরাঘুরি করছিল৷ কেউ কেউ যদিও ফেসবুকে লিখেছেন যে, ছবিটি পুরনো, ২০১৬ সালে টঙ্গীতে বয়লার বিস্ফোরণের কারণে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডের ছবি৷ কিন্তু সেটা হয়ত সংশ্লিষ্ট পত্রিকার ফটো এডিটরদের কান অবধি পৌঁছায়নি৷ অথচ একটু সচেতন হলেই বিষয়টি এড়ানো যেতো৷

একটি ছবি ঠিক কবে, কিভাবে ইন্টারনেটে প্রকাশ হয়েছে সেটি জানার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ৷ সাধারণ টেক্সট সার্চ করার মতো এই অপশনটিও সকলের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত৷ যা করতে হয়, তা হচ্ছে, টেক্সটের বদলে যে ছবিটি সম্পর্কে আপনি জানতে আগ্রহী, সেটি সার্চ অপশনে আপলোড করা বা সেটির লিংক দিয়ে দেয়া৷ এরপর গুগল সেই ছবিটি কোথায়, কবে ব্যবহার করা হয়েছে তার লিংক প্রকাশ করে৷ সেসব লিংক একটু ঘাটলেই পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায় যে, ছবিটি কোন ঘটনার এবং কখন তোলা হয়ে থাকতে পারে৷

টঙ্গীর বয়লার বিস্ফোরণের ছবিটি গুগলে কেউ সার্চ করলেই জানতে পারতো যে এটির সঙ্গে লংগদুর কোনো সম্পর্ক নেই৷ কিন্তু সেটা কেন করা হয়নি তা-ই এক বড় বিস্ময়৷ আর এই বিস্ময়কে রাজনৈতিক রূপ দিতে কেউ কেউ দাবি করেছেন, বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে ইচ্ছাকৃতভাবে মিডিয়া লংগদু নিয়ে অপপ্রচার চালিয়েছে৷

সংবাদমাধ্যম আসলেই এটা ইচ্ছাকৃতভাবে করেছে কিনা সেই আলোচনা এই ব্লগে না করে বরং জানিয়ে রাখি, পশ্চিমা বিশ্বে এখন ভুয়া সংবাদ প্রতিরোধ এক বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ এজন্য সাংবাদিকদের সংবাদ, ছবি এবং ভিডিও'র সত্যতা যাচাইয়ের বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়৷ বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমেরও এটা করা উচিত বলে আমার মনে হয়৷

Arafatul Islam Kommentarbild App
আরাফাতুল ইসলাম, ডয়চে ভেলে

শেষ করার আগে, ছবির সত্যতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে আরো দু'টি প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইটের কথা জানিয়ে রাখি৷ এগুলো হচ্ছে টিন আই রিভার্স ইমেজ সার্চ এবং ফটোফরেনসিক ৷ টিন আই অনেকটা গুগলের মতোই কাজ করে, তবে মাঝেমাঝে সাইটটিতে অনেক ছবির সন্ধান পাওয়া যায়, যা গুগলে নেই৷ আর ফটোফরেনসিক একটি ছবি সম্পাদনা করা হয়েছে কিনা কিংবা সেটা কতটা পুরনো, তা জানাতে বেশ সহায়ক৷ এই তিনটি টুল সম্পর্কে ফটো এডিটরদের অবশ্যই জানা উচিত৷

ছবির সত্যতা যাচাই নিয়ে আপনার কি কোনো প্রশ্ন আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান