বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা
১ ডিসেম্বর ২০১২চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট জংশনে ফ্লাইওভারের তিনটি গার্ডার ভেঙে গত শনিবার ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ তারপরও প্রশাসনের টনক নড়েনি৷ রাজধানীতে বর্তমানে তিনটি ফ্লাইওভার নির্মাণাধীন৷ ফ্লাইওভারগুলোর নীচে যত্রতত্র বসানো হয়েছে দোকানপাট৷ আর এসব নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নীচ দিয়েই চলাচল করছে যানবাহন৷ রাজধানীর একটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করছে চট্টগ্রামের সেই একই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পারিসার৷ এখানেও নেয়া হয়নি ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা৷ তাই যে কোনো সময় খোদ রাজধানীতেই ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা৷ পথচারীরা বলছেন, বাধ্য হয়েই তারা নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে যাতায়াত করছেন৷ চট্টগ্রামের ঘটনার পর সরকারের শিক্ষা নেয়া উচিত ছিল বলে মত তাদের৷
প্রকৌশলীরা বলছেন, যথাযথ তদারকি না থাকায় মাত্র ১০ বছরের মাথায় দেবে গেছে খিলগাঁও ফ্লাইওভার৷ এই ফ্লাইওভারটির সঙ্গে মহাখালী ফ্লাইওভার দিয়েও ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ৷ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, যে ওজনের যানবাহন ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে চলার কথা তার চেয়ে বেশী ওজনের যানবাহন চলার কারণেই ফ্লাইওভারগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে৷ এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারির কথাও বলেন তিনি৷
নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারগুলোতে ভূমিকম্প নিরোধক যন্ত্র বসানো হয়নি বলে অভিযোগ প্রকৌশলীদের৷ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ মনে করেন, ডিজাইনে ক্রটি থাকার কারণে এই ধরনের সংকট সৃষ্টি হয়েছে৷ শুরু থেকেই এসব বিষয়ে নজর দেয়া উচিত ছিল বলে মনে করেন এই প্রকৌশলী৷
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা, অসচেতনতা এবং দলীয়করণের জন্যই বিভিন্ন নির্মাণ কাজে কিছুদিন পর পর দুর্ঘটনা ঘটছে৷ আর হতদরিদ্র মানুষগুলো বিপজ্জনক জেনেও উপরওলার উপর সব দায়িত্ব ছেড়ে বেঁচে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত৷ তাদের মতে, নির্মাণ কাজে টেন্ডারবাজি না উঠলে, দুর্ঘটনা লেগেই থাকবে৷ সব সরকারের উচিত সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া৷ সরকার যদি এই ব্যাপারে সচেতন হয়, তাহলে নিজ দলের লোকদের কাজ না দিয়ে দক্ষ ঠিকাদারের মাধ্যমেই নির্মাণ কাজ করে তাহলে এত অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটবে না৷