ভিখারি বানানোর চাঁই ধৃত ঢাকায়
১৫ জানুয়ারি ২০১১ত্রিশ বছর বয়সি ওমর ফারুক ধরা পড়ার পর যে স্বীকারোক্তি দিয়েছে, তাতে সে জানায়, অন্তত ১৫টি শিশুকে হাত পা কেটে বিকলাঙ্গ করে তাদের দিয়ে ভিক্ষা করাতো সে এবং তার দলবল৷ রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের অন্যান্য শহরেও সক্রিয় রয়েছে এই ভিখারি বানাবার নারকীয় চক্রটি৷ শহরের ব্যস্ত এলাকার পথেঘাটে কিছু মহিলাকে দিনে ৪০০ টাকার বিনিময়ে এইসব বিকলাঙ্গ দুর্ভাগা শিশুদের ভাড়া দিত তারা৷ ওই ভিখারিনী মহিলারা বিকলাঙ্গ শিশুদের কোলে নিয়ে ভিক্ষা করে থাকে৷ অঙ্গপ্রত্যঙ্গহীন শিশুদের দেখে মানুষের মনে যে দয়ার উদ্রেক হয়, সেটাই তাদের ব্যবসার মূল চাবিকাঠি৷ আর সে কারণে নির্দয়ভাবে সুস্থ একটি শিশুকে বিকলাঙ্গ করতে তাদের কোনরকম দ্বিধা হত না৷
ওমর ফারুককে গ্রেপ্তার করার পর এই হৃদয়হীন পিশাচের সম্পর্কে আরও অনেক অভিযোগ মিলেছে বলে জানিয়েছেন ব়্যাবের তরফে কর্নেল জিয়া আহসান৷ আহসান জানান, কিছুদিন আগে এই ব্যক্তিই নাইমুল নামের একটি বাচ্চা ছেলের পুরুষাঙ্গ কেটে দিয়েছিল৷ নাইমুলের বাবা ঘটনাটি স্থানীয় মানবাধিকার সেল-এ জানালে বিষয়টি প্রশাসনের গোচরে আসে৷ সেখান থেকেই ক্রমশ গোটা অপরাধ চক্রের হদিশ মেলে৷ এখানেই শেষ নয়, পতিতাবৃত্তিতে নামিয়ে তাদের দিয়ে ব্যবসা করানোর উদ্দেশ্যে বেশ কিছু নাবালিকার ওপর বলপ্রয়োগ এবং ধর্ষণও করেছে এই একই চক্র৷
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি এ ধরণের অপরাধ চক্রের দমনে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ ভিক্ষাবৃত্তিকে মদতদানকারী এ ধরণের অপরাধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আইনে অন্ততপক্ষে তিন বছরের কারাবাসের আইন রয়েছে৷ এছাড়া সর্বশেষ ২০০৫ সালের একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, সে সময়ে বাংলাদেশে ৭০ লক্ষ ভিক্ষাজীবী ছিল৷ ভিক্ষাবৃত্তি থেকে যাদের গড় রোজগার দৈনিক ১০০ টাকা৷
প্রতিবেদন : সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই