বিপদ জেনেও বিষাক্ত বর্জ্য দূষণ এলাকায় ফিরছে হাঙ্গেরির মানুষ
৫ এপ্রিল ২০১১গত অক্টোবর মাসে ঐ বিষাক্ত লাল রঙের কাদার কারণে সৃষ্ট দুর্যোগকে বলা হয় হাঙ্গেরির স্মরণকালের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা৷ অ্যালুমিনিয়াম কারখানার এই বিষাক্ত লাল কাদা, প্রথমে রাবা নদীতে গিয়ে মিশে যায়৷ পরে সেই নদীর প্রবাহিত ধারা দানিয়ুব নদীতে মিশে পুরো নদী এবং নদী সংলগ্ন এলাকাকে বিষাক্ত করে তোলে৷ আশেপাশের এলাকা ভেসে যায় সেই বিষাক্ত পদার্থযুক্ত পানিতে৷ অন্তত ১০ ব্যক্তি ঐ ঘটনায় প্রাণ হারান৷ আহত হন কম করে হলেও ১৫০ জন৷
ঐ ঘটনার পরপরই বিষাক্ত জায়গা ছেড়ে নিরাপদে চলে যান শত শত গ্রামবাসী৷ ছয় মাস পর তাঁরা আবার ফিরতে শুরু করেছেন নিজ নিজ বাস্তুভূমিতে৷ এর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কোলোনতার গ্রামের মানুষ এসে দেখতে পাচ্ছেন, তাঁদের বাড়ি, বাড়ির উঠোন, বাগান সর্বত্র লাল রঙের সেই বিষাক্ত শুকনো কাদা জমে রয়েছে৷ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, অন্তত ৪০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় এই ধরণের দূষিত পদার্থের প্রলেপ পড়ে রয়েছে৷ উল্লেখ্য, এই বিষাক্ত লাল কাদা অ্যালুমিনিয়াম কারখানার বর্জ্য হিসেবেই আধারটিতে রাখা হতো৷ এটি ভয়াবহ রকমের বিষাক্ত৷ এই বর্জ্যে আর্সেনিক, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়ামের মত মারাত্মক সব ক্ষতিকর উপাদান আর ভারি ধাতু রয়েছে - যা সার্বিকভাবে পরিবেশ দূষণ ঘটায়৷
নিজ বাস্তুভূমিতে তাঁরা ফিরে আসছেন, এটা শুনতে ভালো লাগলেও পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, সেখানে ঐ দুর্ঘটনা পরবর্তী অবস্থা প্রাণিকুলের জন্য মোটেই সুবিধার নয়৷ বর্তমানে তো বটেই, ভবিষ্যতেও সেখানে এর ক্ষতিকারক প্রভাব রয়ে যাবে৷ সেখানকার সরকার ঐ এলাকার মানুষদের জমিতে কোন ধরণের শাকসবজি না লাগানোরও পরামর্শ দিয়েছেন৷
সেখানকার দুর্যোগ বিষয়ক কমিশনার গিয়োর্গি বাকোনডি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা এখনো ঐ এলাকার সুদূর প্রসারী নেতিবাচক প্রভাব কী হতে পারে - তা জানি না৷ এ নিয়ে গবেষণা চলছে৷'' তিনি আরও জানান যে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার অন্তত ৬০টি পরিবারকে অন্যত্র আবাস গড়ে দেয়া হচ্ছে৷ কারণ, তাদেরকে বাড়িতে ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব নয়৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ