1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘বস্ত্র সহযোগিতা' একটি সূচনা মাত্র

সঞ্জীব বর্মন/এসি১৬ অক্টোবর ২০১৫

জার্মান উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের সৃষ্ট ‘‘টেক্সটিলব্যুন্ডনিস'' বা ‘‘বস্ত্র সহযোগিতা'’ উদ্যোগ প্রথম বছরে কিছুটা সাফল্য পেলেও এখনও অনেক কিছু করা বাকি আছে বলে মনে করেন সম্প্রতি বাংলাদেশ ঘুরে আসা সঞ্জীব বর্মন৷

https://p.dw.com/p/1GpEH
Bangladesch Textilfabrik Jahrestag Rana
ছবি: DW/M. Mamun

বিশ্বায়িত বিশ্বে বাণিজ্য ঠিক ন্যায়-অন্যায় মেনে চলে না৷ কলা, কফি, চামড়ার জিনিসপত্র বা গার্মেন্টস – পশ্চিমের বিপণীগুলিতে এ সব পণ্য থরে থরে সাজানো থাকে, কিন্তু তা আসে তৃতীয় বিশ্ব থেকে৷ অন্যদিকে ইউরোপের সামাজিক ও পরিবেশগত মান সম্পর্কে তৃতীয় বিশ্বের অধিকাংশ মানুষের কোনো জ্ঞান নেই৷ তৃতীয় বিশ্বের শ্রমিকদের পারিশ্রমিক কম এবং স্কুলের পড়াশুনোও বেশি দূর নয়৷

ধরা যাক বাংলাদেশের গামেন্টস শিল্পে কর্মরত নারীদের৷ সপ্তাহে সাতদিন দিনে ১৪ ঘণ্টা করে কাজ, যা পারিশ্রমিক তা-তে কোনোমতে পরিবারের পেট চলে৷ চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই৷ যে কোনো সময় চাকরি চলে যেতে পারে৷ কেননা হাজার হাজার তরুণ, অল্পশিক্ষিত নারীরা অপেক্ষা করছেন সে জায়গা নেবার জন্য৷ যার চাকরি গেল, তার অস্তিত্বের সংকট৷

Sanjiv Burman Kommentarbild App PROVISORISCH
সঞ্জীব বর্মন, ডয়চে ভেলে

এই সেদিন অবধি বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পে কর্মস্থলে ন্যায্য পরিবেশ বা পারিশ্রমিক অলীক ছিল, কেননা কারখানার মালিক ও তাদের সাপ্লায়াররা ছিলেন চাপের মুখে: গার্মেন্টসের দাম পড়ছে অথচ গার্মেন্টস তৈরির খরচ বাড়ছে৷ যে সব কোম্পানি পশ্চিমে মাল সরবরাহ করে থাকে, তাদের অবস্থাও অনুরূপ – কেননা জার্মানিতে যে সব চেইনস্টোর রেডিমেড গার্মেন্ট বিক্রি করে থাকে, তাদের মধ্যেও দাম কমানোর প্রতিযোগিতা চলেছে৷

পরিবর্তনের ছোঁয়া

ভাগ্যক্রমে উন্নয়ন সাহায্য সম্পর্কে জার্মানিতে ধ্যানধারণা বদলাতে শুরু করেছে৷ পশ্চিমের মানুষজন বুঝতে শুরু করেছেন যে, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলি তাদের দুরবস্থার জন্য একা দায়ী নয়, শিল্পোন্নত দেশগুলিরও সেখানে একটা ভূমিকা আছে৷ যে সব বহুজাতিক সংস্থা তৃতীয় বিশ্ব থেকে পণ্য এনে পশ্চিম ইউরোপে জলের দরে বিক্রি করে, এমনকি যে সব গ্রাহক সেই পণ্য কেনেন – তারাও তো পুরোপুরি নির্দোষ নন৷ বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের মহিলা কর্মীরা যে জীবনযাপন করছেন, সেজন্য কি সকলেরই কিছুটা দায়িত্ব নেই?

২০১৪ সালের ১৬ই অক্টোবর জার্মানি টেকসই বস্ত্র সহযোগিতার উদ্যোগ নেয়৷ লক্ষ্য হলো, গামেন্টস কর্মীদের অবস্থার স্থায়ী উন্নতিসাধন৷ গার্মেন্টস প্রসেসিং এবং সাপ্লাই প্রক্রিয়ায় যারা সংশ্লিষ্ট, তারা যা-তে ছোট ছোট পদক্ষেপ নিয়ে পরিস্থিতির বাস্তবিক ও প্রামাণ্য উন্নতি সাধন করতে পারে, সেটাই হলো এই উদ্যোগের লক্ষ্য৷ এর ফলে কারখানায় গার্মেন্টস কর্মীদের অবস্থারও ধাপে ধাপে উন্নতি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে৷ অপরদিকে যে সব সংস্থা এই উদ্যোগে অংশগ্রহণ করবেন, তাদের পণ্যে একটি ক্যাশে বা সিল লাগানো থাকবে, যা-তে জার্মানিতে চূড়ান্ত গ্রাহকরা নির্দ্বিধায় ‘‘মেড ইন বাংলাদেশ'' বস্ত্র কিনতে পারবেন৷

শুভ সূচনা, কিন্তু কাজ অনেক বাকি

বস্ত্র সহযোগিতা এক বছরের মধ্যেই অকুস্থলে ইতিবাচক ফলাফল এনে দিয়েছে৷ উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট গার্মেন্টস কোম্পানিগুলিতে ইতিমধ্যে কারখানা ভবনের নিরাপত্তা, পরিবেশসম্মত কাজের প্রক্রিয়া অথবা শ্রমিক সংগঠন ইত্যাদি বিষয়কে পর্যাপ্ত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে৷ এমনকি জার্মান সরকারের সাহায্যে একটি দুর্ঘটনা বীমাও চালু করা হয়েছে৷

অথচ প্রয়োজনের তুলনায় বিশেষ কিছুই ঘটেনি, এমন বলা চলতে পারে৷ বাংলাদেশের কিছু কিছু কোম্পানি করেন এক আর দেখান এক, এ অভিযোগ বহুদিনের৷ গার্মেন্টস মালিকরা শুধু ধনি নন, রাজনীতির সঙ্গে তাঁদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকে৷ তবুও গার্মেন্টস সেক্টরে কিছুটা প্রগতি ঘটেছে বৈকি, যে প্রগতি অন্যান্য শিল্পে – যেমন চর্মশিল্পে – এবং অপরাপর দেশেও ঘটা প্রয়োজন৷ যে কাজের জন্য গোটা পশ্চিমি দুনিয়াকেই একজোট হয়ে উদ্যোগ নিতে হবে৷ জার্মানি সেক্ষেত্রেও পথিকৃৎ হতে পারে৷

বাংলাদেশের বস্ত্রশিল্পে জার্মান সহযোগিতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ? জানান নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান