‘পানামা পেপার্স’ সম্পর্কে আপনার যা জানা প্রয়োজন
কে, কী, কোথায় এবং কখন: তথাকথিত ‘পানামা পেপার্স’ ফাঁসের পর এ সব প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে৷ আর বিপদে আছেন অনেক রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, ক্রীড়াবিদ যাদের এতকাল সৎ ভাবা হতো৷
‘পানামা পেপার্স’ আসলে কী?
পানামা পেপার্স হচ্ছে এগারো দশমিক পাঁচ মিলিয়ন ডকুমেন্ট এবং দুই দশমিক ছয় টেরাবাইট তথ্য যা ই-মেল, আর্থিক বিবরণী, পাসপোর্ট এবং কর্পোরেট নথি আকারে আছে৷ আইন বিষয়ক সংস্থা মোসাক ফনসেকার কাছে এ সব তথ্য ছিল৷ রবিবার প্রকাশিত এই তথ্যে অনেক কাগুজে প্রতিষ্ঠানের খদ্দেরদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা গেছে, যারা ১৯৭৭ থেকে ২০১৬ অবধি নিজেদের আয়ের সঠিক তথ্য গোপন করেছেন৷
মোসাক ফনসেকা কী?
দ্য ইকোনোমিস্ট পত্রিকা ২০১২ সালে মোসাক ফনসেকাকে ‘অফসোর ফাইনান্সের’ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল, যারা নিজেদের সম্পর্কে কোনো তথ্যই প্রকাশ করতো না৷ শেল কোম্পানিদের সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে পৃথিবীর অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান পানামাভিত্তিক এই আইন বিষয়ক সংস্থাটি৷ ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডের মতো ‘ট্যাক্স হেভেন’ বলে পরিচিত প্রায় সব জায়গাতেই তাদের ফ্র্যাঞ্চাইজ আছে৷
আইসিআইজে কে?
ওয়াশিংটনভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়াম আইসিআইজে ফাঁস হওয়া দলিলদস্তাবেজ পরীক্ষা করে দেখেছে৷ বিশ্বের ৬৫টি দেশের ১৯০ জনের মতো সাংবাদিক এই কনসোর্টিয়ামের সদস্য, যা প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯৭৭ সালে৷
জড়িত কারা?
ট্যাক্স ফাঁকি দিতে মোসাক ফনসেকার সহায়তা নেয়াদের মধ্যে বিশ্বের অনেক নামি-দামি রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, তারকা এবং ক্রীড়াবিদরা রয়েছেন৷ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের ঘনিষ্ঠদের অর্থের হদিশ পাওয়া গেছে ‘ফাঁস’ হওয়া তালিকায়৷ রয়েছে ভারতের অমিতাভ বচ্চন এবং আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসির নামও৷
‘শেল কোম্পানি’ কী?
‘শেল কোম্পানি’ আইনগতভাবে বৈধ এমন এক ধরনের প্রতিষ্ঠান যাদের নিজস্ব কোনো ব্যবসা নেই৷ তারা শুধু অন্যকে নানান নামে অর্থ খাটানোর সুযোগ করে দেয়৷ এসব প্রতিষ্ঠান গড়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে কার অর্থ প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা হয়েছে তা যাতে কোনোভাবে বের করা না যায়৷
‘অফশোর ট্যাক্স হেভেন’ ব্যবহার কি অবৈধ?
যেসব দেশে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ খুব কম এবং আয়ের উপর কর প্রদানের পরিমান দফারফার মাধ্যমে অনেক কমিয়ে আনার সুযোগ রয়েছে, সেসব দেশকে ‘অফশোর ট্যাক্স হেভেন’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷ সেসব দেশে অর্থ লগ্নি অপরাধ নয়, কিন্তু লগ্নিকারী ব্যক্তিটি যে দেশের সেদেশের কর কর্তৃপক্ষের কাছে সেটা অবৈধ হতে পারে, যদি তিনি সেই বিনিয়োগের কথা না জানিয়ে থাকেন৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশে এটা অবৈধ৷