পশ্চিমবঙ্গে কলমের গাছ
১০ ডিসেম্বর ২০১৮দেখতে সাধারণ ইউজ অ্যান্ড থ্রো ডট পেন এবং পেনসিলের মতোই৷ কিন্তু তাদের মাথার দিকে এক স্বচ্ছ খোলসে ভরা গাছের বীজ৷ পলাশ, কৃষ্ণচূড়ার মতো ফুল, পেয়ারা,পেঁপের মতো ফল আর কাপাস, শালের মতো গাছ, যা সহজে বড় হয়৷ খুব বেশি যত্নআত্তি না পেলেও তাদের চলে৷ পেনের কালি ফুরিয়ে গেলে সেটি মাটিতে পুঁতে দিলেই কদিন পর বেরিয়ে আসবে চারাগাছ৷ বিশেষ এক ধরনের কাগজ দিয়ে তৈরি হয় এই পেন, যা মাটির সঙ্গে মিশে যায়৷ আর পেনসিল তো ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গেই ক্ষয় হতে থাকে৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সম্প্রতি পুরুলিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়ে এমন কলম দেখে খুবই উৎসাহিত হয়ে ওঠেন৷ তৎপর সিদ্ধান্তে তিনি এই কলম বিশ্ববাংলা স্টল থেকে বিক্রির স্থায়ী বন্দোবস্ত করে ফেলেন৷ সরকারি দপ্তরগুলিকেও নির্দেশ দেন এই কলমের ব্যবহার বাড়াতে৷ এবং প্রশাসনিক বৈঠকের শেষে মুখ্যমন্ত্রী নিজে এবং রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে দুটি খালি কলম বীজসহ পুঁতে দিয়ে আসেন দুটি টবে৷
জানা গেছে, রাজ্যের কন্যা সন্তানদের উন্নতির জন্য শুরু হওয়া কন্যাশ্রী প্রকল্পের আওতায় এই কলম তৈরি হচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরে৷ পুরুলিয়ার শিল্পমেলায় গিয়ে প্রথম এই কলম দেখতে পান জেলার সরকারি প্রকল্পের আধিকারিক মৌমিতা মাহাতো৷ তিনি জানতে পারেন, শম্পা রক্ষিত সেন নামে এক নারী কেরল গিয়ে এই অভিনব কলমটি প্রথম দেখেন৷ নিজের উৎসাহে শম্পা এই কলম তৈরির কৌশল শিখে এসে নিজে এগুলি ঘরে বানিয়ে মেলায় বিক্রি করছিলেন তখন৷ মৌমিতা মাহাতো বিষয়টি জানান পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর মহকুমার প্রশাসক আকাঙ্খা ভাস্করকে৷ তাঁরই উদ্যোগে জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দিয়ে এই ধরনের কলম এবং পেনসিল তৈরির প্রকল্প শুরু হয়৷ ব্লকের ৩২জন মহিলাকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়৷ তারপর থেকেই শুরু হয়েছে উৎপাদন এবং ক্রমশই এর বিক্রি বাড়ছে৷ রাজ্যের বিভিন্ন মেলায় লোকে উৎসাহ দেখাচ্ছেন৷ বিশেষত নারী কেন্দ্রিক সবলা মেলা'র মতো মেলায় এর বিক্রি চোখে পড়ার মতো৷
ওঁদের আশা, এবার রাজ্য সরকার উদ্যোগী হওয়ায়, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী উৎসাহিত হয়ে এই কলম-পেনসিলের বিক্রি বিশ্ববাংলা বিপণিগুলিতে হওয়ার ব্যবস্থা করায় আরো বৃহত্তর সাফল্যের মুখ দেখবে এই প্রকল্প৷ এতে যে একদিকেসামাজিক বনসৃজনের কাজইকেবল হবে তা নয়, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হবেন, যা পশ্চিমবঙ্গের কন্যাশ্রী প্রকল্পের মূল লক্ষ্য৷