ডাবলিনে জুতো, ডিম, বোতলের লক্ষ্য ব্লেয়ার
৫ সেপ্টেম্বর ২০১০ব্লেয়ারের বিরুদ্ধে তীব্র আইরিশ বিক্ষোভ
শনিবার খুব একটা সুখকর অভিজ্ঞতা নিয়ে ঘরে ফেরেন নি প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী৷ নিজের প্রধানমন্ত্রীত্বের স্মৃতি নিয়ে লেখা নতুন বইয়ের ওপর সই করার প্রথম অনুষ্ঠানে ব্যাপক পুলিশ প্রহরায় শনিবার ডাবলিনে হাজির হন ব্লেয়ার৷ কিন্তু কয়েক'শো বিক্ষোভকারী নিরাপত্তার কঠোর বেষ্টনি উপেক্ষা করে তাঁর দিকে হাওয়াই চটি, ডিম, জলের বোতল আর জুতো নিক্ষেপ করে৷ স্লোগান ওঠে, ‘ব্লেয়ার লায়েড, মিলিয়নস ডায়েড৷' একই স্লোগান লেখা পোস্টারও দেখা যায়৷ সেইসঙ্গেই ইরাক যুদ্ধের রূপকারদের একজন ব্লেয়ারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা আনার দাবিও ওঠে৷ তবে জুতো বা ডিম কোনকিছুই পুলিশের ব্যারিকেড পেরিয়ে ব্লেয়ার পর্যন্ত ঠিকঠাক পৌঁছতে পারে নি৷ বেশ ভালো পরিমাণে বিশৃঙ্খলার মধ্যে ব্লেয়ার তাঁর বহু অনুরাগীকে বঞ্চিত করে অনুষ্ঠানের মাঝপথে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান৷ ফলে অনেকেই প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর নতুন বই ‘দ্য জার্নি'-র ওপর তাঁর সই চাইতে এসেও পান নি৷
কী করল পুলিশ? কোন গ্রেপ্তার বা ধরপাকড়?
ইরাকের সাদ্দাম জমানার গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্র নিয়ে মিথ্যাচার করার দায়ে ডাবলিনে বিক্ষোভের মুখে পড়া টোনি ব্লেয়ারকে ডিম, জুতো আর বোতল থেকে বাঁচিয়ে নিরাপদে বইয়ের দোকানে ঢুকিয়ে দেওয়া এবং ঘন্টা দেড়েক পরে পিছনের দরজা দিয়ে বের করে নিয়ে যাওয়া ছাড়া পুলিশ মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে৷ তাদের মধ্যে দুই ১৮ বা ১৯ বছরের তরুণ আর দুজন উত্তর তিরিশ যুবক৷ এদের সকলকেই জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বটে, তবে মামলাও আনা হয়েছে এদের বিরুদ্ধে৷ এছাড়া কিছু বিক্ষোভকারীর সঙ্গে বেশ ধস্তাধস্তিও করতে হয়েছে পুলিশকে৷ যারা ব্লেয়ারের ওপর হামলা চালানোর জন্য মরিয়া হয়ে উদ্যোগ নিয়েছিল৷
ব্লেয়ার পাঁচটা টিভি অনুষ্ঠানে এর আগে সাফাই দিয়েছিলেন
তা দিয়েছিলেন বৈকি! ১৯৯৭ থেকে ২০০৭ - এই দশ বছর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকাকালীন নিজের স্মৃতিচারণ নিয়ে লেখা ‘দ্য জার্নি' বইটি প্রকাশিত হওয়ার আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় ব্লেয়ারের সমালোচনা৷ সাফাই গাইতে বেশ কিছু টিভি অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে ব্লেয়ার আগাম জানান, ইরাক যুদ্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তিনি দুঃখিত নন৷ একই কথা এই বইতেও আছে৷ তবে কিনা, ইরাক কান্ডের ভয়াবহতা যে এতটা দূর পর্যন্ত শেষমেষ যেতে পারে তা তিনি দুঃস্বপ্নেও ভাবেন নি বলে স্বীকারোক্তিও করেছেন ব্লেয়ার সাহেব৷
প্রতিবেদনঃ সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনাঃ অরুণশঙ্কর চৌধুরী