ছত্রাক, ভাইরাস ও ব্যাকটিরিয়া সম্পর্কে যেগুলো জানা জরুরি
বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ছিল খাদ্য নিরাপত্তা৷ তাহলে দেখা যাক আমাদের খাদ্যে অনুজীবের ভূমিকা কি? ছত্রাক, ভাইরাস, ব্যাকটিরিয়া আপনার খাবারকে যেমন নষ্ট করতে পারে, তেমনি এদের কিছু উপকারিতাও আছে৷
ওহ!
এই ছত্রাক দেখে কি মুখ ফিরিয়ে নিতে ইচ্ছে করছে? তবে এ ধরনের ছত্রাকে ভরা স্যান্ডইউচ কিন্তু ক্ষতিকারক নয়৷ কিছু ছত্রাক বিষাক্ত না হলেও ক্যামেমবার্ট পনিরের মতো অনেক ছত্রাকই ক্ষতিকর৷ ভয়াবহ বিষাক্ত ছত্রাকের সংস্পর্শে এলে মানুষের দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে৷
অনুঘটক হিসেবে ছত্রাক
ছত্রাক অনেক ক্ষেত্রে কার্যকরী৷ অন্য কোনো অনুজীবের তুলনায় ছত্রাক কার্বন হাইড্রেটটস, চর্বি ও আমিষকে দ্রুত ভেঙে ফেলতে পারে৷ বিভিন্ন শিল্পকারখানায় খাবার প্রক্রিয়াকরণ ও ডিটারজেন্ট তৈরিতে এনজাইম হিসেবে ব্যবহৃত হয় এসব ছত্রাক৷
সালামি
সসেজ তৈরির পদ্ধতিতে যদি কোনোরকম ভুল হয় বা মাংস ও সবজি রক্ষণাবেক্ষণের সময় পচন ধরে তাহলে খাবার বিষাক্ত হয়ে যায়৷ ঐ ব্যাকটিরিয়া এমন এক বিষে পরিণত হয় যা জীবননাশক হতে পারে৷
অক্সিজেন ছাড়া জীবন
অক্সিজেন না পেলে অর্থাৎ সেরকম পরিবেশে ক্লসট্রিডিয়াম বটুলিনাম ব্যাকটিরিয়া মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে৷ এই ব্যাকটিরিয়া কসমেটিক সার্জারির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ, কেননা ত্বককে মসৃণ করার স্নায়ু এজেন্ট বোটক্স তৈরি হয় এ থেকে৷ কিন্তু খাদ্যে যদি এটি উৎপন্ন হয়, সেটা খেলে মানুষ প্যারালাইজড বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হতে পারে৷ প্রথমে শরীরের কিছু অংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়, তারপর ধীরে ধীরে মৃত্যুর পথে এগিয়ে যায় মানুষ৷
তাজা শাকসবজি সবসময় ভালো নয়
২০১১ সাল পর্যন্ত মেথি’র অঙ্কুর জার্মানদের কাছে স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে পরিচিত ছিল৷ সে বছর বীজ থেকে ছড়িয়ে পড়া মহামারি ইকোলি ব্যাকটিরিয়ায় মারা যায় ৫৩ জন, অসুস্থ হয়ে পড়ে কয়েক শত৷ এই ব্যাকটিরিয়া অন্ত্রের দেয়ালকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, পরে মস্তিষ্ককে আক্রান্ত করে৷ তাই সবজি ও মাংস রান্না করে খেলে এই ব্যাকটিরিয়াগুলো মরে যায়৷
ভালো ব্যাকটিরিয়া
তবে সবধরনের ইকোলি ব্যাকটিরিয়া ক্ষতিকর নয়৷ মানবদেহের বৃহদন্ত্রে এ ধরনের ব্যাকটিরিয়া ‘ভিটামিন কে’ তৈরি করে, যা হাড়, কোষ ও রক্তের জন্য খুব উপকারি৷ এছাড়া ইনসুলিন ও গ্রোথ হরমোন তৈরিতে এই ব্যাকটিরিয়া ব্যবহৃত হয়৷
খাদ্য সংরক্ষণে ব্যবহার
দই, পনির এসব দুগ্ধজাত পণ্য তৈরির জন্য দরকার হয় ব্যাকটিরিয়া৷ হাজার হাজার বছর ধরে ল্যাকটিক এসিড ব্যাকটিরিয়া এসব দ্রব্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হচ্ছে৷
ভয়াবহ ডায়রিয়ার কারণ
ক্যামপিলোব্যাকটার এবং স্যালমোনেলি দেখতে রডের মতো৷ এসব ব্যাকটিরিয়ার কারণে অসুস্থতা এবং মৃত্যু দুটোই হতে পারে৷ কম রান্না করা গরু, শুকর ও মুরগীর মাংসে এ ধরনের ব্যাকটিরিয়া জন্ম নেয়৷ এটি খাবার পর পাতলা পায়খানা শুরু হয়৷
খাদ্যে পচন
নরোভাইরাস বা পাকস্থলীর ফ্লু বমি এবং মলের মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ে৷ মাত্র ১০০টা অতিক্ষুদ্র ভাইরাস মানুষের দেহে সংক্রমণের জন্য যথেষ্ট৷