1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চিংড়ি চাষ বাড়াচ্ছে লবণাক্ততা

৯ ডিসেম্বর ২০১৬

তরুণ গবেষক ড. অনিমেশ কুমার গাইন বন্যা ঝুঁকি ও পানি সংকট নিরসন বিষয়ে গবেষণার জন্য আউটস্ট্যান্ডিং ইয়ং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড ২০১৬ অর্জন করেছেন৷ তিনি এসেছিলেন ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগে৷ সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অমৃতা পারভেজ৷

https://p.dw.com/p/2TzgU
Bangladesch Sundarbans Sibsa Fluß Schrimpsfischer
খুলনার সিবসা নদীছবি: Imago/Bluegreen Pictures

ডয়চে ভেলে: আপনার বেড়ে ওঠা সুন্দরবনের খুব কাছে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সুন্দরবনে কী ধরনের প্রভাব ও পরিবর্তন আপনি লক্ষ্য করেছেন?

ড. অনিমেশ কুমার গাইন: আমার বাড়ি সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলায়৷ মনুষ্যসৃষ্ট এবং প্রাকৃতিক দুই ধরনের পরিবর্তন আমি লক্ষ্য করেছি৷ সম্প্রতি ঘন ঘন জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে৷ আইলা এবং সিডর তার বড় উদাহরণ৷ এর ফলে সেখানকার মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে৷ আর্থসামাজিক পরিবর্তন হয়েছে৷ মনুষ্যসৃষ্ট যে পরিবর্তনগুলো ঘটেছে, তার মধ্যে বেশি করে চিংড়ি চাষ হচ্ছে, যার ফলে পানির লবণাক্ততা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে৷

চিংড়ি চাষ বাদে আর কী কী  মনুষ্য আচরণ এখানে প্রভাব ফেলেছে?

‘ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের সতর্কতা সংকেত আরও উন্নত করতে হবে’

এখানকার মানুষ জমি ব্যবহারের জন্য সুন্দরবনের অনেক গাছ কেটে ফেলেছে৷ চাষ বাসের কারণেও অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে৷ তবে বাঁধ দেয়ার ফলে জলাবদ্ধতার কারণে উল্লেখযোগ্য হারে পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে৷

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ ঝুঁকির মুখে রয়েছে, আপনার গবেষণার মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার কোনো উপায় কি বের করার চেষ্টা করছেন?

আপনি ঠিকই বলেছেন৷ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ ঝুঁকির মুখে রয়েছে৷ বাংলাদেশের মানুষ এরইমধ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়েছে৷ তবে এদেশের উপকূলীয় মানুষ এ ধরনের দুর্যোগের সাথে পরিচিত হওয়ায় তারা এর সঙ্গে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে পারে৷ তবে যেটা জরুরি সেটা হলো ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের সতর্কতা সংকেত আরও উন্নত করা, যাতে আগে থেকে সেখানকার মানুষ সংকেত পায় এবং সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে৷ এর পাশাপাশি বাংলাদেশের ৫৪টি নদী, যাদের উৎস প্রতিবেশি দেশগুলোতে৷ সেজন্য ঐ দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বিত সমঝোতার মাধ্যমে পানি চুক্তি হওয়া দরকার৷ যেটা হলে পানি সংক্রান্ত সমস্যাগুলো মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে৷ বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদি নীতিমালা প্রণয়নে কাজ করছি আমি৷

কোন গবেষণার জন্য আপনি ইজিইউ পুরস্কারটি পেয়েছেন? এই পুরস্কার আপনাকে কী ধরনের অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে?

ইউরোপিয়ান জিয়োসায়েন্সেস ইউনিয়ন ইজিইউ কর্তৃক প্রদত্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিভাগে ডিভিশন আউটস্ট্যান্ডিং ইয়ং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড ২০১৬ অর্জন করেছি৷ এই পুরস্কারটি দেয়া হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিষয়ে আমার গবেষণা কাজের অবদানের জন্য৷ আমার উদ্ভাবনী দিক হলো অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি এবং স্থানিক বিশ্লেষণ ব্যবহার করে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সমন্বিত ঝুঁকি মূল্যায়ন৷ সাধারণত গবেষণা করা হয় প্রাকৃতিক ও মনুষ্য সৃষ্ট বিষয়গুলোর যে কোনো একটি নিয়ে৷ কিন্তু আমি দু'টোর সমন্বয়ে উপাত্ত বিশ্লেষণ করেছি৷ আমার গবেষণার প্রধান বিষয় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বন্যা বিপত্তি ও পানি সংকট এবং সমাজ ও পরিবেশের ওপর তার বিরূপ প্রভাব৷

গবেষণা নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?

আমার মূল কাজ হবে পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে৷ ভবিষ্যতে ‘ওয়ার্টার এনার্জি ফুড নেক্সাস' নিয়ে কাজ করবো৷ অর্থাৎ পানি, শক্তি ও খাদ্যের সমন্বিত বিশ্লেষণ৷ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এসডিজি-তে জাতিসংঘ যে লক্ষ্যগুলো প্রণয়ন করেছে ২০১৬ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে, সেগুলো পূরণে কাজ করার পরিকল্পনা আছে৷ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ঝুঁকির পাশাপাশি বিস্তৃত পরিসরে সমন্বিত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং পানি-শক্তি-খাদ্য নিরাপত্তা নেক্সাসসহ অন্যান্য ক্রস কাটিং বিষয়ে গবেষণা করছি আমি৷

অনিমেশ কুমার গাইন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিবেশ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে পানি সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন৷ পরবর্তীতে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে যৌথভাবে ইটালির কা'ফস্কারি বিশ্ববিদ্যালয়, ভেনিস ও জার্মানির জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন৷ বর্তমানে বার্লিনের পোস্টডামে জিএফজেড-জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিয়োসায়েন্সে কর্মরত৷ একই সঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক মর্যাদাসম্পন্ন আলেকজান্ডার ফন হুমবোলট ফেলো হিসেবে গবেষণা করছেন৷

বন্ধু, সাক্ষাৎকারটি কেমন লাগলো? জানান আমাদের, লিখুন মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান