1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খালেদাকে চাপে রাখার কৌশল?

সমীর কুমার দে, ঢাকা৩১ মার্চ ২০১৬

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরো একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে৷ ফলে এবার তাঁকে আটক করা হবে কিনা, তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা৷ বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘‘শুধুমাত্র চাপে রাখতেই এই পরোয়ানা জারি করা হয়েছে৷''

https://p.dw.com/p/1INIf
খালেদা জিয়ার ছবি
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াছবি: picture-alliance/epa/A. Abdullah

নাশকতার একটি মামলায় খালেদা জিয়াসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে৷ বুধবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা মামলাটির অভিযোগ-পত্র গ্রহণ করে আসামিদের সবার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির এই আদেশ দেন৷ তবে এটাই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নয়৷ গত বছরও দুর্নীতির একটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল৷

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশিদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘মামলাটির চার্জশিট দাখিলের পর এই পরোয়ানা জারি করা হয়েছে৷ আসলে বেশ কয়েকবার তিনি আদালতে হাজির হননি, তাই এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয়েছে৷ এখানে বিচারকের পরোয়ানা জারি করা ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় ছিল না৷ এছাড়া অন্য আরেকটি কারণ হলো রাজনৈতিক৷ খালেদা জিয়া বড় একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান৷ তাঁকে গ্রেপ্তার করলে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিক্রিয়া হতে পারে৷ আমার মনে হয় না সরকার সেদিকে যাবে৷ দেশে এখন একটা ভালো রাজনৈতিক অবস্থা চলছে৷ তাই আমার মনে হয়, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আসলে তাঁকে চাপে রাখতে জারি করা হয়েছে৷ এবার হয়ত তিনি আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেবেন৷ এ বিষয়টা সাধারণ মানুষও বোঝেন৷ সে জন্যই হয়ত এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর মানুষের মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি৷ অন্তত আমি সেটা দেখতে পাইনি৷''

মেজর জেনারেল আব্দুর রশিদ

গত বছরের ৬ মে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত শেষে খালেদা জিয়াসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগ-পত্র দাখিল করে৷ তাতে খালেদা জিয়াসহ মোট ২৮ জনকে পলাতক দেখিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করে পুলিশ৷ যাত্রাবাড়ীতে বাসে বোমা হামলা, নাশকতা এবং হত্যার অভিযোগে পুলিশ পৃথক দু'টি অভিযোগ-পত্র আদালতে দাখিল করে৷ এ মামলা ছাড়াও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট ২০টি মামলা বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে৷ এসব মামলায় মাঝে মধ্যেই তিনি আদালতে হাজিরা দেন৷

২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর কাঠের পুল এলাকায় গ্লোরি পরিবহনের একটি বাসে পেট্রোল বোমা ছোড়া হলে অগ্নিদগ্ধ ও আহত হন অন্তত ৩০ জন৷ এর মধ্যে নূর আলম নামে এক ঠিকাদার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারাও যান৷ এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানার এসআই কেএম নুরুজ্জামান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন৷ মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সনকে হুকুমের আসামি করা হয়৷ মামলা একটি হলেও দু'টি ধারায় পুলিশ আদালতে অভিযোগ-পত্র দাখিল করে৷ এর মধ্যে একটি হত্যার দায়ে শাস্তির দাবি করা হয় আর অন্যটি করা হয় বিশেষ ক্ষমতা আইনে৷

খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন যে, ঘটনার দিন খালেদা জিয়া পুলিশ দ্বারা অবরুদ্ধ ছিলেন৷ তাঁর বাড়িতে কাউকে ঢুকতে দেয়া হয়নি৷ তিনি সম্পূর্ণ রূপে নেতা-কর্মী থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন৷ অর্থাৎ খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতেই এ মামলায় আসামি করা হয়েছে৷ আর পুলিশ তদন্ত শেষে তাঁকে পলাতক দেখিয়ে অভিযোগ-পত্র দিয়েছে৷ অথচ তিনি কোথায় আছেন, তা কিন্তু সবাই জানেন৷ এটা শুধু হয়রানির জন্য৷

এর আগে দু-দু'টি দুর্নীতি মামলার ধার্য তারিখে হাজির না হওয়ায় ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন৷ সরকার পক্ষের আইনজীবীরা জানান, এই মামলায় ৬০ কর্মদিবসে খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হয়েছেন মাত্র সাতবার৷ তাঁর অনুপস্থিতির কারণে মামলাটি স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না৷ সে কারণেই ঐ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা৷ বছর ঘুরে গেলেও সেই মামলায় গ্রেপ্তার হননি খালেদা জিয়া৷ পরে অবশ্য আদালত থেকে সেই মামলায় জামিন পান তিনি৷

আপনার কী মনে হয়? খালেদা জিয়া কি এবার আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেবেন? জানান নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান