1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গ্যাসের দাম বাড়ায় ক্ষোভ

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বিভিন্ন খাতে গ‌্যাসের দাম ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোয় দেশের মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে৷ বিদ‌্যুতের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনার কথাও বলেছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এ নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন৷

https://p.dw.com/p/2YBf3
গ্যাসের চুলা
ছবি: DW/T. Shahzad

অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ তাঁর ফেসবুক পাতায় সরকারের সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘‘জনগণকে জিম্মি রেখে বৃহৎ সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বাড়াতে সরকারের দু'টো কাজ: এক. বিভিন্ন স্থানে গ্যাসের কৃত্রিম সংকট তৈরি এবং দুই. গ্যাসের দাম বাড়ানো৷ দু'টো কাজই সরকার করছে৷ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন নামে একটি দোকান আছে যার কাজ হলো গণশুনানির নাটক করা, শুনানিতে যাই প্রমাণ হোক না কেন সরকারের ইচ্ছামতো গ্যাসের দাম বাড়ানো তাদের কাজ৷ গণশুনানিতে প্রমাণিত হয়েছে গ্যাসের দাম বাড়ানোর কোনো যুক্তি নেই৷

এর ফলে পরিবহণ ব্যয় বাড়বে, বিদ্যুতের দাম আবারও বাড়ানোর ক্ষেত্র তৈরি হবে৷ ফলে বাড়িভাড়াসহ সব কিছুরই দাম বাড়বে৷ জনগণের পকেট কেটে ঋণ ও দুর্নীতিনির্ভর বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ যোগান দেওয়াও সরকারের বিশেষ মনোযোগের বিষয়৷ একই কারণে এতদিন ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কম থাকা সত্ত্বেও তারা দাম কমায়নি৷ একটি বড় সুযোগ থেকে দেশের অর্থনীতি ও মানুষ বঞ্চিত হয়েছে৷ যুক্তি আর জনস্বার্থ বিবেচনার সময় বা আগ্রহ কোনোটাই সরকারের নাই৷ সরকারের বিশ্বাস জনস্বার্থবিরোধী যা খুশি তারা তাই করতে পারে৷''

সাংবাদিক আবু সুফিয়ান অবশ্য মজা করে লিখেছেন, ‘‘গ্যাসের দাম বেড়েছে, তাতে এত হৈ চৈ কেন? কারো টাকা না থাকলে ডলার দিয়ে পরিশোধ করুন৷''

সাংবাদিক সালাউদ্দিন মিম তার কিছু পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন ফেসবুক পাতায়৷ লিখেছেন, ‘‘প্রথমে আসি, তেলের দাম কামানো নিয়ে৷ অনেকেই বলে থাকেন, তেলের দাম কামানো উচিত৷ প্রশ্ন হচ্ছে, দাম কামনোর প্রভাব কাদের উপর পড়ে? তেলের দাম বাড়ানোর সাথে সাথে বেড়ে যায় বাস ভাড়া, বেড়ে যায় অন্যান্য অনেক কিছুর দাম৷ কিন্তু দাম কমানোর প্রভাবতো দেখি না৷ কথা হচ্ছে, কেন এমনটা হয়৷ এক কথায় উত্তর হলো, কুরাজনীতি ও সুশাসনের অভাব৷ ভোক্তা ও সরকারের মাঝের ঐ ব্যক্তিরা বা ঐ ব্যবসায়ীরা সমাজে প্রতিষ্ঠিত ও রাজনৈতিক প্রভাব বলয়ে তাদের বাস৷

সেকারণে প্রশাসনও তাদের কিছু বলতে পারে না৷ এ কারণে, আমি ব্যক্তিগতভাবে তেলের দাম না কমানোর পক্ষে৷ এবার আসি গ্যাসের দাম বাড়ানো প্রসঙ্গে৷ গ্রামের মানুষ রান্না করতে গ্যাস পায় না৷ জ্বালানিতে তাদের মাসিক খরচ কত? আবার যারা সিলিল্ডারে গ্যাস ব্যবহার করেন, তাদের মাসে খরচ কত? এই দুই শ্রেণির ব্যবহারকারীরাই গ্যাস ব্যবহারকারীদের চেয়ে অনেক বেশি খরচ করে থাকেন, রান্নার কাজে৷ ফলে বাসা বাড়িতে গ্যাসের দাম বাড়ানো নিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচির আগে এ সব ভাবা দরকার৷ যারা চেঁচাচ্ছেন, তারা দয়া করে একটু বোঝার চেষ্টা করুন৷ আসুন কোনো কিছু বলার আগে বা ভাববার আগে বা চিন্তার আগে, একটু গভীরে গিয়ে ভাবি৷ রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে ভাবি৷''

তোহা ফারুক ফেসবুক পাতায় লিখেছেন, ‘‘চুলায় তো গ্যাসই পাই না ঠিক মত, এরমধ্যে আবার দাম বাড়াল! হায় সেলুকাস৷ বিড়ি-সিগারেটের মতো ফালতু জিনিসের দাম যদি এভাবে বাড়ানো যায়, গ্যাসের মতো দরকারি জিনিসের দাম বাড়ানো যাবে না! সত্যিই সেলুকাস, কি বিচিত্র এই দেশ!''

সাইফুদ্দীন আহমেদ নান্নু লিখেছেন, ‘‘গ্যাসের দাম বেড়েছে দিতে হবে, দিয়েও দেব৷ কিন্তু যারা আড্ডায়, ভাষণে, টিভিতে, টকশোতে বলবেন মাসে মাত্র দু-তিন'শ টাকা বেড়েছে,এটা খুব বেশি না৷ তাদের বলি আপনাদের হিসাব ভুল৷ আমাদের তিন বেলার রান্না ৬৫০ টাকার তিতাসে হয় না৷ কারণ মধ্যরাতের পর আসা ২ ঘণ্টার গ্যাসে আমাদের পেটে ভাত যায় না৷ সাথে লাগে ১১শ টাকার সিলিন্ডার, নয়ত হাজার টাকার কেরোসিন৷ সব মিলে মাসে কমপক্ষে দেড় হাজার কিন্তু লাগেই৷ এবার এর সাথে বাড়তি দু-তিন'শ যোগ করে কথা বলুন৷ বাণিজ্যিক খাতে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির বহুমাত্রিক প্রভাব বাদই দিলাম৷''

আহমেদ আশিক গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রসঙ্গে লিখেছেন, ‘‘বর্তমান সরকারের শাসন আমলে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে তিন-তিনবার৷ তাতে আমাদের মতো নিম্ন মধ্যবিত্ত ,মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোকে আরেক দফা খরচের ধকল সইতে হবে৷ কথায় বলে যে গরু দুধ দেয়, তার নাকি লাথিও সওয়া যায়৷ কিন্তু আমরা কি পর্যাপ্ত গ্যাসের সরবরাহ পাচ্ছি? পাচ্ছি না৷ রাজধানীর অনেক আবাসিক এলাকায় গ্যাস থাকে না বলে কর্মজীবী মানুষ এবং স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের না খেয়েই বাসা থেকে বের হতে হয়৷ আসছে জুন মাস থেকে গুনতে হবে ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা৷ গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিত্বে পণ্য পরিবহন ও গণপরিবহন খাতে চরম প্রভাব পড়বে৷ উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে কথায় কথায় ব্যয় বাড়ানো, দুর্নীতি দেশকে কোথায় নিয়ে যাবে বোঝা দায়৷''

আল মুস্তাকিম গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে লিখেছেন, ‘‘গ্যাসের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি রুখে দাঁড়ান৷ গ্যাসের দাম বাড়লে যাঁদের হৃদয় জ্বলে তাঁরা রাস্তায় নামেন৷ আর যাদের জ্বলে না তারা নাকে সরিষার তেল দিয়ে ঘুমান!''

জাকির হোসাইন লিখেছেন, ‘‘গ্যাসের দাম বাড়িয়ে আমাদের মধ্যবিত্ত পরিবারদের হাতে না মেরে ভাতে মারার ব্যবস্থায় উঠে পরে লেগেছে বর্তমান সরকার৷ কেউ কি নেই আমাদের দেশে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর?''

শেষ করছি গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে আফজাল হুসাইনের ছড়া দিয়ে৷ তিনি লিখেছেন,

‘‘গ্যাসের দাম দিলে বাড়তি, উন্নয়নে আসবে গতি!

বাগড়া-টাগরা দাও যদি স্বাধীনতার হবে ক্ষতি!

প্রশ্ন করা যাবে না, রক্ষা করো চেতনা!''

সংকলন: অমৃতা পারভেজ

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে কি আপনি মনে করেন? জানান আমাদের৷ লিখুন মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য