1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কে ছিলেন বেটোফেন?

রায়হানা বেগম৫ সেপ্টেম্বর ২০০৮

এলোমেলো চুল, চেপে রাখা পাতলা ঠোট, দৃষ্টি সুদূরে৷ বিশ্বখ্যাত সংগীতকার লুডভিগ ফান বেটোফেনের এই ছবিটিকেই লোকে চেনে৷ পোস্টকার্ড, টিশার্ট এমনকি ছাতাতেও দেখা যায় তাঁর এই অবয়ব৷ বহু ছায়াছবি নির্মিত হয়েছে বেটোফেনকে নিয়ে ৷

https://p.dw.com/p/FCEB
লুডভিগ ফান বেটোফেনছবি: AP

লেখা হয়েছে অসংখ্য বই৷ কিন্তু কে ছিলেন এই বেটোফেন?

লুডভিগ ফান বেটোফেনের জন্ম ১৭৭০ সালের ১৭ই ডিসেম্বর৷ এমন এক সময়ে যখন মানুষের কাছে সংগীতের খুব একটা গুরুত্ব ছিলনা৷ একদিকে হয়তো চলছে তাস খেলা কিংবা গল্পগুজবে মেতে আছে লোকে নেপথ্যে ভেসে আসছে হালকা কোনো গান৷ দৃশ্যটা ছিল অনেকটা এই রকম৷ কিন্তু বেটোফেন চেয়েছিলেন সংগীতকে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে আনতে৷ সৃষ্টি করেছেন তিনি সোনাটা, সিম্ফনি, বাজিয়েছেন পিয়ানো অর্কেস্ট্রা৷ সংগীতের এই নব্য প্রকাশ তত্‌কালীন ধ্রুপদী সংগীতের কেন্দ্র ভিয়েনা শহরে অনেকেই পছন্দ করেননি৷ তবে কেউ কেউ আবার উত্‌সাহিতও হয়েছেন৷

Ludwig van Beethoven
বেটোফেনের জন্ম ১৭৭০ সালের ১৭ই ডিসেম্বরছবি: dpa

বেটোফেনের জন্মস্থান বন শহরের জ্যাজ সংগীতের পিয়ানোবাদক মারকুস শিংকেল বলেন, বেটোফেনই ছিলেন প্রথম সংগীতকার যিনি কারো নির্দেশে সংগীত রচনা করেননি৷ রাজা রাজড়ার প্রভাব থেকে মুক্ত প্রথম স্বাধীন শিল্পী তিনি৷ হাইডেন বা মোত্‌সারটের মত গির্জা এবং রাজাদের জন্য সংগীত রচনা করেননি বেটোফেন৷ নিজের আবেগ ও অনুভূতিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন তিনি৷

মারকুস শিংকেল বলেন, সমসাময়িককালের অনেক সংগীত স্রষ্টার মত বেটোফেনও তাত্‌ক্ষনিকভাবে সংগীত রচনায় দক্ষ ছিলেন৷ স্বরলিপি ছাড়াই সৃষ্টি করেছেন অনেক বিখ্যাত সংগীত৷যেমনটি অনেক জ্যাজ সংগীতকারও করে থাকেন৷

বেটোফেনের শৈশব কেটেছে কঠোর অনুশীলনের মধ্য দিয়ে৷ বাবা চেয়েছিলেন মোত্‌সারটের মতই এক অবাক করা শিশু হবেন লুডভিগ৷ তাই তাকে শৈশবেই পিয়ানো বাজানো শেখা শুরু করতে হয়৷ জনসমক্ষে প্রথম পিয়ানো বাজান তিনি ৭ বছর বয়সে৷ ১৭ বছর বয়সে প্রিয় মাকে হারান লুডভিগ৷ মদাসক্ত বাবার সঙ্গে সম্পর্কটা ছিল অনেকটাই শিথিল৷

বেটোফেন জীবনের অনেকটা সময়ই কাটিয়েছেন ভিয়েনায়৷ সেখানেই পেয়েছেন প্রভূত খ্যাতি ও সম্মান৷ সেই সাথে আর্থিক স্বাচ্ছল্যও ৷ সংগীতানুরাগী কিছু অভিজাত ব্যক্তির নজরে পড়ে বেটোফেনের বিশাল প্রতিভা৷ তাঁরা তাঁকে বিভিন্নভাবে সাহায্য ও সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসেন৷ ১৮১০ সালে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছান বেটোফেন৷ অন্যদিকে দীর্ঘ দিনের শ্রুতিজনিত সমস্যাটা এই সময়ে আরো বেড়ে যায় তাঁর৷ ৯ বছর পরে একেবারেই বধির হয়ে পড়েন বেটোফেন৷ কিন্তু তবু সংগীত রচনা থেকে বিরত থাকেননি তিনি৷ ১৮২৪ সালে বিখ্যাত নবম সিম্ফনি শেষ করেন বেটোফেন৷

১৮২৬ সালের মার্চ মাসে মাত্র ৫৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন সংগীত জগতের কালজয়ী এই ব্যক্তিত্ব৷