1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কাতারে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিতে কড়া উদ্যোগ

২৩ মার্চ ২০১৭

অভিবাসী শ্রমিকদের হয়রানি রোধে সংশোধিত শ্রম আইন বাস্তবায়নে আগামী নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে কাতারকে৷ নতুবা শ্রম বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা বিষয়টির তদন্ত করবে বলেও জানা গেছে৷

https://p.dw.com/p/2ZoYk
Katar Gastarbeiter in Doha
ছবি: Getty Images/W. Little

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন আইএলও জানিয়েছে যে, কাতারে অভিবাসী শ্রমিকদের জোরপূর্বক কাজ করানো হচ্ছে কিনা – সেটা তদন্ত করে দেখার বিষয়টি আগামী নভেম্বর পর্যন্ত মুলতবি রাখছে তারা৷ উপসাগরীয় দেশটির ২৫ লাখ অধিবাসীর মধ্যে ৯০ শতাংশই অভিবাসী কর্মী এবং এঁদের অধিকাংশই ভারত, নেপাল এবং বাংলাদেশের মতো দেশগুলো থেকে এসেছে৷ অভিবাসীদের অনেকেই ২০২২ বিশ্বকাপ ফুটবলের জন্য অবকাঠামো তৈরির প্রকল্পে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন৷ বলা বাহুল্য, এ কাজে বেতন অনেক কম৷

অভিবাসী শ্রমিকদের বসবাসের নোংরা পরিবেশ, দুর্বল স্বাস্থ্য, নিরাপত্তার নিম্ন মান এবং তাঁদের দিয়ে জোর করিয়ে কাজ করানোর জন্য পাসপোর্ট এবং বেতন আটকে রাখার মতো বিষয়গুলো নিয়ে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন ও অ্যাক্টিভিস্টরা কাতারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়৷ এরপর কাতার সরকারও কিছুক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার ঘোষণা দেয়৷ আইএলও মঙ্গলবার জানায়, শ্রম পরিবেশের উন্নয়নে কাতারের সাম্প্রতিক উদ্যোগগুলো তাদের চোখে পড়েছে৷ তবে এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত তথ্য তারা দেশটির কাছে চেয়েছে৷

আইএলও-র পরিচালনা পর্ষদ দোহার কাছে গৃহকর্মীদের সম্পর্কিত শ্রম আইনে কী ধরনের সংশোধন আনা হচ্ছে এবং শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে কাজ করা কমিটির অবস্থা নভেম্বরের মধ্যে জানাতে বলেছে৷ এছাড়া সে মাসেই কাতারে শ্রমিক হয়রানির তদন্তে কোনো কমিশনের নিয়োগ দেয়া হবে কিনা, তা নির্ধারণ করবে আইএলও৷

প্রসঙ্গত, অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য কাফিল স্পন্সরশিপ নামে এক ব্যবস্থা অনুসরণ করে কাতার৷ এই ব্যবস্থায় অভিবাসী শ্রমিকরা চাকুরিদাতার অনুমতি ছাড়া চাকুরি পরিবর্তন বা দেশত্যাগ করতে পারেন না৷ এই পদ্ধতি জোরপূর্বক কাজ করানোর সামিল বলে মনে করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো৷

গত ডিসেম্বরে কাতার অবশ্য নতুন এক আইন করেছে, যেখানে একজন শ্রমিককে কাজের চুক্তি শেষ হওয়ার পর স্বাধীনভাবে অন্য চাকুরি নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে৷ পাশাশাশি কোনো চাকুরিদাতা যদি শ্রমিকের পাসপোর্ট জব্দ করে, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক জরিমানার বিধানও রাখা হয়েছে৷

তবে অ্যাক্টিভিস্টরা বলছেন, এই উদ্যোগ যথেষ্ট নয়৷ কেননা, চাকুরিরত অবস্থায় কর্মীরা নতুন চাকুরি খুঁজতে চাইলে চাকুরিদাতার অনুমতি প্রয়োজন হচ্ছে৷ আর একেকটি চুক্তির মেয়াদ পাঁচবছর পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে৷ তাছাড়া চাকুরিদাতার অনুমতি ছাড়া যদি একজন কর্মী চাকুরি পরিবর্তন করেন তাহলে তাকে গ্রেপ্তার, আটক বা দেশে ফেরত পাঠানোর মতো শাস্তির সুযোগ রয়েছে৷ ফলে অন্য চাকুরি নেয়ার বিষয়টি শ্রমিকদের পক্ষে মোটেই সহজ নয়৷

মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ভারতীয় শাখার নির্বাহী পরিচালক আকার পাটেল এ বিষয়ে বলেন, ‘‘কাতারকে দেখাতে হবে যে জোরপূর্বক শ্রম রোধে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করতে পেরেছে সেদেশ৷’’

‘‘এর অর্থ হচ্ছে, সেদেশকে দ্বর্থ্যহীনভাবে শ্রমিকদের দেশত্যাগে অনুমতির বিষয়টি বাতিল করতে হবে, যাতে শ্রমিকরা সেদেশ ত্যাগ করতে চাইলে চাকুরিদাতারা কোনো বাধা দিতে না পারে৷ এছাড়া শ্রম আইন এমনভাবে সংশোধন করতে হবে, যাতে কর্মীরা স্বাধীনভাবে চাকুরি বদল করতে চাইলে চাকুরিদাতারা তা বন্ধ করতে না পারে,’’ বলেন তিনি৷

এআই/ডিজি (রয়টার্স)

প্রিয় পাঠক, আপনি কি কাতারে আছেন? বা আপনার পরিচিত কেউ কি সেখানে থাকেন? আপনার অভিজ্ঞতা জানাতে পারেন নীচে মন্তব্যের ঘরে...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য